News update
  • Bangladesh Army takes 15 officers into custody     |     
  • DUCSU wants trial of all involved in enforced disappearances, killings     |     
  • ICT to Hear Hasina Crimes Against Humanity Case     |     
  • Army Detains 15 Officers Over War Crimes Warrants     |     
  • Machado dared to imagine a better world, worked tirelessly: Prof Yunus     |     

যেভাবে গ্রেফতার হলেন আনিসুল হক ও সালমান এফ রহমান

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক খবর 2024-08-14, 1:37pm

yreyreye-ec3e9764e2ce10ab9ab4580f83e28dc21723621052.jpg




বাংলাদেশের সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

মঙ্গলবার রাতে ঢাকার সদরঘাট এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে বলে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

গণআন্দোলনের মুখে গত পাঁচই অগাস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর আওয়ামী লীগ সরকারের তিনবারের আইনমন্ত্রী মি. হক এবং উপদেষ্টা মি. রহমানকে এতদিন প্রকাশ্যে দেখা যায়নি।

হামলা ও গ্রেফতার এড়াতে আওয়ামী লীগের অন্যান্য শীর্ষ নেতাদের মতো তারাও গা ঢাকা দিয়েছিলেন বলে জানা যাচ্ছে।

গত জুলাই মাসে কোটা আন্দোলনের সহিংসতা ও মৃত্যুর ঘটনায় ঢাকার নিউমার্কেট থানায় দায়ের হওয়া মামলায় তাদেরকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

তবে বুধবার বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত আসামিদের কাউকেই নিউমার্কেট থানায় আনা হয়নি।

“গ্রেফতারের ব্যাপারে আমরাও শুনেছি, কিন্তু এখন পর্যন্ত আমাদের থানায় তারা আসে নাই,” বিবিসি বাংলাকে বলেন নিউমার্কেট থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) শফিকুল ইসলাম।

গ্রেফতারের পর আনিসুল হক এবং সালমান এফ রহমানকে কোথায় রাখা হয়েছে, সে বিষয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানানো হয়নি।

তবে তারা গোয়েন্দা পুলিশের হেফাজতে আছেন বলে বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছেন পুলিশের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।

শিগগিরই তাদেরকে আদালতে নেওয়া হতে পারে বলেও জানিয়েছেন নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কর্মকর্তা।

আত্মগোপনে ছিলেন?

প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়ে শেখ হাসিনা বিদেশে পাড়ি জমানোর পর থেকেই দেশের বেশিরভাগ জেলাতেই আওয়ামী লীগ কার্যালয় ও নেতাকর্মীদের বাড়িঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে।

এসব ঘটনায় ঢাকা, চাঁদপুর, যশোর, সাতক্ষীরা, বরিশাল, সিরাজগঞ্জ, লালমনিরহাটসহ বেশ কিছু জেলায় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের অনেকে নিহত ও আহত হন।

এমন পরিস্থিতিতে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে দলটির শীর্ষনেতাদের অনেকেই গা ঢাকা দেন।

বিদেশে পালিয়ে যান আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাসহ বহু নেতা।

দেশ ছাড়তে গিয়ে বিমানবন্দরে আটক হন দলটির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও সদ্য সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ এবং সাবেক ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।

এছাড়া যারা এখনও দেশে অবস্থান করছেন, আক্রান্ত হওয়ার ভয়ে তারাও বাড়িঘর ছেড়ে আত্মগোপনে রয়েছেন বলে জানা যাচ্ছে।

গত পাঁচই অগাস্ট বিকেলে ঢাকায় শেখ হাসিনার উপদেষ্টা ও সাবেক সংসদ সদস্য সালমান এফ রহমানের বাড়িতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটতে দেখা যায়।

একইভাবে হামলা চালানো হয় মি. রহমানের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান বেক্সিমকো গ্রুপের অনেক কারখানা ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে।

ওসব ঘটনার পর গত এক সপ্তাহে মি. রহমানকে প্রকাশ্যে কোথাও দেখাও যায়নি।

অনেকেই ধারণা করছিলেন যে, তিনি বিদেশে পালিয়ে গেছেন।

আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর একইভাবে হামলা হয়েছিল সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের বাড়িতেও।

গত পাঁচই অগাস্ট সন্ধ্যায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় অবস্থিত মি. হকের বাড়িতে ভাঙচুর চালিয়ে আগুন দেয় একদল লোক।

ওইদিন দুপুরেও মি. হকের ফোন খোলা ছিল। কিন্তু শেখ হাসিনার পদত্যাগের ঘোষণা জানাজানি হওয়ার পর সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।

ফলে তার অবস্থান সম্পর্কেও কিছু জানা যাচ্ছিলো না।

গ্রেফতার নিয়ে পুলিশ যা বলছে

পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, নৌপথে পালানোর চেষ্টাকালে ঢাকার সদরঘাট এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এবং শেখ হাসিনার উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানকে।

“গোপন তথ্যের ভিত্তিতে নৌপথে পলায়নরত অবস্থায় রাজধানী ঢাকার সদরঘাট এলাকা হতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান ও সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হককে গ্রেফতার করা হয়েছে,” ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) পক্ষ থেকে বলা হয়েছে।

ডিএমপি’র ভেরিফাইড ফেসবকু পেইজের একটি পোস্টেও একই কথা বলা হয়েছে।

তবে ঠিক কখন এবং কীভাবে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়েছে, সে বিষয়ে কথা বলতে বা বিস্তারিত তথ্য দিতে রাজি হননি পুলিশ কোনো কর্মকর্তা।

এদিকে, গ্রেফতারের ঘটনার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, বিশেষত ফেসবুকে বেশ কয়েকটি ছবি ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়তে দেখা গেছে।

এগুলোর মধ্যে একটি ছবিতে মি. হক এবং মি. রহমানকে হাত বাঁধা অবস্থায় দেখা গেছে। তাদের পাশে সতর্ক অবস্থায় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে কোস্টগার্ডের বেশ কয়েকজন সদস্যকে।

এই ছবি দেখে অনেকেই ধারণা করছেন যে, আওয়ামী লীগের ওই দুই নেতাকে কোস্টগার্ডের সদস্যরাই প্রথমে গ্রেফতার করেছিলেন। তারপর তাদেরকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশের স্থানীয় গণমাধ্যমগুলোর অনেকেই ওই ছবি প্রকাশ করেছে। তবে বিবিসির পক্ষে স্বাধীনভাবে ছবিগুলো যাচাই করা হয়নি।

যে মামলায় গ্রেফতার

কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে সহিংসতায় গত ১৬ই জুলাই ঢাকা কলেজ এলাকায় সংঘর্ষে এক শিক্ষার্থীসহ অন্তত দু’জন নিহত হন।

ওই ঘটনায় নিহতদের স্বজনরা বাদী হয়ে দু’টি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ওইসব মামলায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদেরকে আসামি করে হয়েছিল।

সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এবং সাবেক সংসদ সদস্য সালমান এফ রহমানকে একটি মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে বলে নিউমার্কেট থানা পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

বাংলাদেশের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় শিল্পগোষ্ঠী বেক্সিমকো গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমান ২০০৯ সালে শেখ হাসিনার বেসরকারি খাত বিষয়ক উপদেষ্টা হন।

২০১৯ সালে তাকে মন্ত্রীর পদমর্যাদায় প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা করা হয়।

এছাড়া ২০১৮ এবং ২০২৪ সালের বিতর্কিত দু’টি জাতীয় নির্বাচনে তিনি ঢাকার একটি আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন।

অন্যদিকে, দেড় দশক আগে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর আইনজীবী আনিসুল হক বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমান এবং জাতীয় চার নেতা হত্যা মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের প্রধান কৌঁসুলি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

এরপর ২০১৪ সালের বিএনপিবিহীন নির্বাচনে তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে আওয়ামী লীগের সমর্থনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

ওই বছরই তিনি আওয়ামী লীগ সরকারের আইনমন্ত্রীর দায়িত্ব পান। ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার আগে মি. হক গত দশ বছরেরও বেশি সময় ধরে একই দায়িত্বে ছিলেন।

সম্প্রতি কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে শুরু হওয়া সংকট সমাধানে আওয়ামী লীগ নেতাদের মধ্যে যারা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনায় বসেছিলেন, তাদের মধ্যে মি. হককেও দেখা গিয়েছিল। বিবিসি বাংলা