News update
  • New Approach Must for Dhaka to Break Climate Aid Debt Trap     |     
  • UN High Seas Treaty Clears Ratification, Set for 2026     |     
  • UAE Suspends Visas for Bangladesh, Eight Other Nations      |     
  • Young disabled people of BD vow to advocate for peace     |     
  • World Leaders Urged to Defend Human Rights and Justice     |     

বন্যায় ১১ জেলায় ২৩ জনের প্রাণহানি, ক্ষতিগ্রস্ত ৫৭ লাখ মানুষ

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক খবর 2024-08-27, 10:37am

rtewtwetw-104f576581c65cc57f24df3517cd92121724733426.jpg




বর্তমানে ফেনী ও কুমিল্লা জেলার নিম্নাঞ্চলের বিদ্যমান বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি অব্যাহত রয়েছে। চলমান বন্যায় ১১ জেলায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৩ জনে আর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৫৭ লাখেরও বেশি মানুষ।

বন্যা পরিস্থিতির সর্বশেষ তথ্য তুলে ধরতে সচিবালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে গতকাল সোমবার (২৬ আগস্ট) এ তথ্য জানান দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব কামরুল হাসান।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ সচিব জানান, বন্যা আক্রান্ত জেলার সংখ্যা ১১টি। এর মধ্যে রয়েছে ফেনী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি, নোয়াখালী, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, সিলেট, লক্ষীপুর ও কক্সবাজার। আক্রান্ত ১১টি জেলায় ৭৪টি উপজেলার মোট ১২ লাখ ৩৮ হাজার ৪৮টি পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে এবং ক্ষতিগ্রস্ত লোকসংখ্যা ৫৭ লাখ ১ হাজার ২০৪ জন।

কামরুল হাসান বলেন, এ পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ২৩ জন। এর মধ্যে কুমিল্লায় ছয়জন, ফেনীতে একজন, চট্টগ্রামে পাঁচজন, খাগড়াছড়িতে একজন, নোয়াখালীতে পাঁচজন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় একজন, লক্ষ্মীপুরে একজন ও কক্সবাজারে ৩ জন৷ এ ছাড়া মৌলভীবাজারে দুজন নিখোঁজ রয়েছেন।

সংবাদ সম্মেলনে সচিব কামরুল হাসান জানান, পানিবন্দি ও ক্ষতিগ্রস্ত লোকদের আশ্রয় প্রদানের জন্য মোট তিন হাজার ৮৩৪টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে এবং আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে মোট চার লাখ ৬৯ হাজার ৫২৩ জন মানুষ এবং ২৮ হাজার ৯০৭টি গবাদি পশুকে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে। ১১ জেলার ক্ষতিগ্রস্তদের চিকিৎসাসেবা দিতে মোট ৬৪৫টি মেডিকেল টিম চালু রয়েছে।

দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল, পূর্বাঞ্চল ও দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের প্রধান নদীগুলোর পানি হ্রাস অব্যাহত আছে জানিয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব বলেন, বিগত ২৪ ঘণ্টায় পূর্বাঞ্চলীয় কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও ফেনী জেলার ভারতীয় ত্রিপুরা সীমান্তবর্তী অঞ্চলে এবং ত্রিপুরা প্রদেশের অভ্যন্তরীণ অববাহিকাগুলোতে উল্লেখযোগ্য বৃষ্টিপাত পরিলক্ষিত হয়নি এবং উজানের নদ-নদীর পানি সমতল হ্রাস অব্যাহত আছে। ফলে বর্তমানে ফেনী ও কুমিল্লা জেলার নিম্নাঞ্চলের বিদ্যমান বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি অব্যাহত আছে।

সচিব কামরুল হাসান জানান, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ জেলার নদীগুলোর পানি সমতল বিপৎসীমার নিচে নেমে এসেছে। আবহাওয়া সংস্থাগুলোর তথ্য অনুযায়ী, আগামী ৪৮ ঘণ্টায় দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও তৎসংলগ্ন উজানে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা নেই। এ সময় উত্তর-পূর্বাঞ্চলের মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জ জেলার মনু, খোয়াই, ধলাই নদীগুলোর পানি সমতল হ্রাস পেতে পারে।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব জানান, আবহাওয়া সংস্থাগুলোর তথ্য অনুযায়ী, আগামী ২৪ ঘণ্টায় দেশের পূর্বাঞ্চল ও তৎসংলগ্ন উজানে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা আছে। এ সময় এ অঞ্চলের কুমিল্লা জেলার গোমতী নদীর পানি সমতল হ্রাস পেতে পারে এবং সংলগ্ন নিম্নাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় ফেনী জেলার নিম্নাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে, তবে কোনো কোনো স্থানে স্থিতিশীল থাকতে পারে।

আবহাওয়া সংস্থাগুলোর তথ্য অনুযায়ী, আগামী ২৪ ঘণ্টায় দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চল ও তৎসংলগ্ন উজানে মাঝারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা আছে। এ সময় এ অঞ্চলের বান্দরবান, খাগড়াছড়ি, কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম জেলার সাঙ্গু, মাতামুহুরী, কর্ণফুলী, হালদা ও অন্যান্য প্রধান নদীগুলোর পানি সমতল সময়বিশেষে বৃদ্ধি পেতে পারে।

কামরুল হাসান বলেন, ব্রহ্মপুত্র-যমুনা এবং দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সুরমা-কুশিয়ারা নদীর পানি সমতল হ্রাস পাচ্ছে, গঙ্গা-পদ্মা নদীর পানি সমতল স্থিতিশীল আছে, উত্তরাঞ্চলের তিস্তা-ধরলা-দুধকুমার নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ বিরাজমান আছে, যা আগামী ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে।

কুমিল্লা ক্যন্টনমেন্টের জিওসির তথ্যের বরাত দিয়ে ত্রাণ সচিব জানান, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মাধ্যমে কুমিল্লা জেলার সব উপজেলায় সড়ক পথে পর্যাপ্ত পরিমাণ খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করা হচ্ছে। এ ছাড়া সেনাবাহিনীর চারটি মেডিকেল টিম প্রয়োজনীয় ওষুধসহ কুমিল্লা জেলার চার উপজেলায় নিয়োজিত করা হয়েছে।

ফেনীতে স্বাস্থ্য সেবা দিতে ফিল্ড হাসপাতাল প্রস্তুত করা হয়েছে জানিয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সচিব বলেন, সেনাবাহিনী ও জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের চিকিৎসকরা সেবা দিচ্ছন। পাশাপাশি স্থানীয় ক্লিনিক, হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য সেবা প্রতিষ্ঠানগুলোকে বন্যার্তদের প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করার জন্য সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকরা নির্দেশনা দিয়েছেন।

কামরুল হাসান বলেন, বন্যার পানি নেমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পানিবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিতে পারে। সে ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সবাইকে সচেতন হতে হবে এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।

প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিলে সহায়তা দেওয়ার অনুরোধ জানিয়ে সচিব কামরুল হাসান বলেন, যারা ব্যক্তিগতভাবে উপস্থিত হয়ে প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ তহবিলে সহায়তা (চেক/পে-অর্ডার/ব্যাংক ড্রাফটের মাধ্যমে) দিতে চান, তারা প্রধান উপদেষ্টার পক্ষে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার কাছেও তা দিতে পারেন। সরকারি ছুটি ছাড়া প্রতিদিন বিকেল ৩টা থেকে ৪টা পর্যন্ত দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ে উপদেষ্টার কার্যালয়ে এই সহায়তা নেওয়া হবে।

যারা ত্রাণ তহবিলে সহায়তা চেক, পে-অর্ডার ও ব্যাংক ড্রাফটের মাধ্যমে দিতে ইচ্ছুক তাদের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব অঞ্জন চন্দ্র পাল (মোবাইল ০১৭১৮-০৬৬৭২৫) এবং সিনিয়র সহকারী সচিব শরিফুল ইসলামের (মোবাইল-০১৮১৯২৮১২০৮) সঙ্গে যোগাযোগ করার অনুরোধ জানিয়েছেন ত্রাণ সচিব।