জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার ফিলিপ্পো গ্র্যান্ডি বাংলাদেশে আশ্রয় পাওয়া ১০ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গাকে সহায়তা দেওয়ার বিষয়ে ইউএনএইচসিআর-এর অটল প্রতিশ্রুতির ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন।
চারদিনের সফর শেষ করার প্রেক্ষাপটে রোহিঙ্গা বিষয়ে ইউএনএইচসিআর-এর প্রতিশ্রুতির বিষয়ে এ গুরুত্বারোপ করেন তিনি।
ফিলিপ্পো গ্র্যান্ডি বলেছেন, সঙ্কট শুরুর সময় থেকেই বাংলাদেশ অসাধারণ আশ্রয়দাতা হিসেবে কাজ করছে এবং স্থানীয়রা তাদের সামান্য সম্পদ শরণার্থীদের সাথে ভাগ করে নিচ্ছে। মিয়ানমারে মর্যাদাপূর্ণ, স্বেচ্ছাকৃত, নিরাপদ এবং টেকসই প্রত্যাবর্তন এই সংকটের প্রাথমিক সমাধান।
তিনি বলেন, উদ্বাস্তুদের (রোহিঙ্গাদের) তাদের উৎস এলাকায় ফিরে যাওয়া এবং বসবাসকারী সম্প্রদায়ের সাথে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের জন্যে শর্ত তৈরিতে সহায়তা করার লক্ষ্য অর্জনের প্রচেষ্টা অবশ্যই জোরদার ও সমর্থন করা দরকার।
কক্সবাজারের কাছে কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনকালে ফিলিপ্পো গ্র্যান্ডি বাস্তুচ্যুত মানুষের জন্য টেকসই আর্থিক সহায়তা প্রদান করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান।
তিনি উল্লেখ করেন, সময়ের সাথে সাথে এবং এখনই রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানের অভাবে সম্পদ সরবরাহ এবং অগ্রাধিকার দুটোই চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে।
তিনি অংশীদারদের রোহিঙ্গাদের ভুলে না যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, যদি আন্তর্জাতিক সমর্থন নাটকীয়ভাবে কমে যায়-যা ঘটতে পারে - বাংলাদেশ সরকার, সাহায্য সংস্থা এবং রোহিঙ্গাদের নিজেদের দ্বারা যে বিপুল কর্মকাণ্ড চালানো হচ্ছে তা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে এবং হাজার হাজার লোক ক্ষুধা, রোগ এবং নিরাপত্তাহীনতার ঝুঁকিতে পড়বে।
কক্সবাজারে হাইকমিশনার মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে চলমান সহিংসতা থেকে সম্প্রতি পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কথা বলেন।
গ্র্যান্ডি সম্প্রদায়-ভিত্তিক গোষ্ঠী যেমন ইমাম, মহিলা ধর্মীয় শিক্ষক এবং শিবিরে সহিংসতা নিয়ে উদ্বিগ্ন একদল মায়ের সাথে বসেন।
তিনি জোর দিয়ে বলেন, শিবিরে নিরাপত্তা বজায় রাখতে বাংলাদেশের প্রচেষ্টাকে সমর্থন করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়া সবচেয়ে ঝুঁকিতে রয়েছে যারা বিশেষ করে সহিংসতা থেকে বেঁচে থাকা নারী এবং তরুণদের দক্ষতা ও স্থিতিশীলতা অর্জনে আমাদের কর্মসূচি চালিয়ে যেতে হবে।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশে হাইকমিশনারের এটি ষষ্ঠ সফর। ইউএনএইচসিআরসহ বাংলাদেশ সরকার এবং অন্যান্য মানবিক সংস্থার রোহিঙ্গা ও তার আশ্রয়দাতা সম্প্রদায়ের মানবিক প্রয়োজনের বিস্তারিত বিবরণ সম্পর্কিত ২০২৫ জয়েন্ট রেসপন্স প্ল্যান চালুর প্রস্তুতির প্রেক্ষাপটে তিনি বাংলাদেশ সফরে আসেন।
সাম্প্রতিক বছরগুলিতে, তহবিল সংগ্রহ গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। পূর্বের রেসপন্স প্ল্যানও অপর্যাপ্ত অর্থায়নে চালাতে হচ্ছে।
গ্র্যান্ডি তার সফরের প্রতিক্রিয়া হিসেবে এক্স-এ এক পোস্টে উল্লেখ করেন, মানবিক সহায়তার জীবন রক্ষাকারী ভূমিকা কক্সবাজার ক্যাম্পের চেয়ে স্পষ্টত কোথাও বেশি নেই। সূত্র: বাসস