Curzon Hall, University of Dhaka. Creative Commons
মুসলিম লীগের প্রতিষ্ঠাতারাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় মুখ্য ভূমিকা পালন করেছেন। আজ (০১জুলাই, ২০২১) বেলা ৩টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার শতবর্ষপূর্তি উপলক্ষে বাংলাদেশ মুসলিম লীগ আয়োজিত “শতবর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, প্রতিষ্ঠাকালীন প্রেক্ষাপট ও রাজনীতি” -শীর্ষক এক ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় দলীয় নেতৃবৃন্দ উপরোক্ত মন্তব্য করেন। দলীয় প্রধান এড. বদরুদ্দোজা সুজার সভাপতিত্বে ও মহাসচিব কাজী আবুল খায়েরের সঞ্চালনায় উক্ত সভায় আরও অংশগ্রহণ করেন স্থায়ী কমিটির সদস্য আতিকুল ইসলাম, আনোয়ার হোসেন আবুড়ী, মুর্তোজা আলী চৌধুরী, অতি: মহাসচিব আকবর হোসেন পাঠান, কাজী এ.এ কাফী, সাংগঠনিক সম্পাদক খান আসাদ প্রমুখ।
নেতৃবৃন্দ বলেন, বঙ্গভঙ্গের বিরুদ্ধে হিন্দু সম্প্রদায়ের আন্দোলনে সমর্থন দিয়ে তৎকালীন ভারতীয় কংগ্রেস কার্যত হিন্দুদের স্বার্থ রক্ষার সংগঠনে পরিণত হয়েছিল। তাদের রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলার জন্য সেসময় সর্বভারতীয় মুসলমানদের একটি সংগঠনের প্রয়োজনীয়তা অবশ্যম্ভাবী হয়ে পড়ে যা থেকে পরবর্তীতে ১৯০৬সালের ৩০শে ডিসেম্বর ঢাকার নবাব সলিমুল্লাহর উদ্যোগে নিখিল ভারত মুসলিম লীগ গঠিত হয়। ১৯১১ সালে হিন্দুদের বিরোধিতায় বঙ্গভঙ্গ রদ ঘোষিত হলে, মুসলিমদের ধর্মীয় ও বুদ্ধিগত জীবনের কেন্দ্র ও শিক্ষাসহ সর্বক্ষেত্রে পিছিয়ে থাকা এ অঞ্চলের মুসলমানদের সার্বিক উন্নয়নের জন্য একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেন পূর্ববঙ্গ ও আসাম প্রদেশের (১৯০৭-১৯১১) মুসলিম লীগ সাধারণ সম্পাদক নবাব সলিমুল্লাহ সহ এ অঞ্চলের মুসলিম নেতৃবৃন্দ। বর্ণবাদী হিন্দুদের বিরোধিতায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ঘোষণা যেন বাতিল না হয়ে যায় সে জন্য নবাব সলিমুল্লাহ ঢাকার শাহবাগ এলাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য জমি দান করেন, তা না হলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠা অনিশ্চিত হয়ে পড়ত। ১৯১৫ সালে তার মৃত্যুর পর পূর্ববঙ্গ ও আসাম মুসলিম লীগের সহ-সভাপতি নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী ও যুগ্ম সম্পাদক শেরে-বাংলা এ,কে ফজলুল হকের বিরামহীন প্রচেষ্টায় ১৯২১ সালের পহেলা জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা লাভ করে। সুতরাং নির্দ্বিধায় বলা যায়, মুসলিম লীগ নেতারাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। অপরদিকে যে মানসিকতা নিয়ে বর্ণবাদী হিন্দু নেতা শ্যামা প্রসাদ মুখার্জী, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর আর আশুতোষ মুখার্জীরা বঙ্গভঙ্গের বিরোধিতা করেন সেই একই মানসিকতা নিয়েই তারা পুনরায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার বিরুদ্ধেও অবতীর্ণ হয়েছিলেন।
নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, শেকড়-বিহীন ইতিহাস জাতীয়তাবাদকে দুর্বল করে দেয় যা দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের জন্য বিপদজনক। এজন্য সকলেরই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠাকালীন প্রেক্ষাপট তথা মুসলমান-হিন্দু বৈষম্য, ইংরেজদের মুসলমানদের প্রতি পক্ষপাতমূলক আচরণ, বঙ্গভঙ্গ, বঙ্গভঙ্গ রদ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় বর্ণবাদী হিন্দু-নেতাদের বিরোধিতা, বিরোধিতার কারণ, মুসলিম নেতাদের লাগাতার সংগ্রাম ইত্যাদি ও তৎকালীন রাজনীতি সম্পর্কে ধারনা রাখতে হবে। নেতৃবৃন্দ শততম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্ট অতীত ও বর্তমানের সকল ছাত্র-শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অভিনন্দন জানান এবং সকল বিরোধিতা, বৈরিতা এবং প্রতিকূলতা অতিক্রম করে যারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে অবদান রেখেছে তাদের রুহের মাগফেরাত কামনা করেন। - -মুসলিম লীগ
সংবাদ প্রেরক - কাজী এ. এ কাফী, অতি: মহাসচিব ০১৮১৭০১৪৪৪০