দেশের বাজারে বিক্রি হওয়া ৬২ শতাংশ প্রক্রিয়াজাত প্যাকেটকৃত খাবারে অধিক মাত্রায় লবণ রয়েছে। এর মধ্যে ৩৫ দশমিক ২ শতাংশ খাবারে অত্যধিক এবং ২৬ দশমিক ৭ শতাংশ খাবারে বেশি লবণ রয়েছে। এ ছাড়া মাত্র ৩৮ দশমিক ১ শতাংশ প্রক্রিয়াজাত প্যাকেটকৃত খাবারে সঠিক মাত্রায় লবণ রয়েছে।
রোববার (২১ মে) ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত ‘প্রক্রিয়াজাত প্যাকেটকৃত খাবারে লবণ নিয়ন্ত্রণ’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ এবং রিসলভ টু সেভ লাইভস (আরটিএসএল)-এর সহযোগিতায় এই মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়।তথ্য সূত্র আর টিভি নিউজ।
বিশেষজ্ঞরা জানান, প্যাকেটজাত খাবারের মাত্রাতিরিক্ত লবণের কারণ মাত্রাতিরিক্ত লবণের কারণে মানুষ হৃদরোগ স্ট্রোক ও কিডনি রোগসহ নানা সংক্রামক ব্যাধিতে আক্রান্ত হচ্ছে। বিশ্বে প্রতিবছর ১৯ লাখ মানুষ মারা যাচ্ছেন অতিরিক্ত লবণ গ্রহণের কারণে।
সভায় সভাপতিত্ব করেন ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতালের চীফ কনসালটেন্ট কার্ডিওলজিস্ট এবং ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব অধ্যাপক ডা. ফজিলা-তুন-নেসা মালিক। বক্তব্য রাখেন হাসপাতালের রোগতত্ত্ব ও গবেষণা বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. সোহেল রেজা চৌধুরী।
সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন হাসপাতালের রেজিস্ট্রার (ক্লিনিকাল রিসার্চ) ডা. শেখ মো. মাহবুবুস সোবহান। তিনি বলেন, এক হাজার ৩৯৭ ধরনের প্রক্রিয়াকৃত প্যাকেটকৃত খাবার দেশের বাজারে পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ১০৫ ধরনের প্রক্রিয়াজাত প্যাকেটকৃত খাবার ল্যাবে পরীক্ষা করে লবনের এই মাত্রা পাওয়া গেছে।
বিএসটিআইয়ের ডেপুটি ডিরেক্টর এনামুল হক বলেন, নগর জীবনে আমাদের প্রক্রিয়াজাত খাবার এড়িয়ে চলা কষ্টকর। তাই এই অতিরিক্ত লবণ গ্রহণ থেকে বাঁচতে আমাদের সচেতন হতে হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টি ও খাদ্য বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক নাজমা শাহীন বলেন, প্রক্রিয়াজাত প্যাকেটকৃত খাবারে অতিরিক্ত লবণ থাকে। তারপরও সাধারণ মানুষ এটি গ্রহণ করছে। এর মূল কারণ সচেতনতার অভাব।
জাতীয় ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) এএইচএম সফিকুজ্জামান বলেন, খাদ্যে লবণ ব্যবহারের পরিমাণ নিয়ে এই মুহুর্তে কোনো আইন নেই। তাই সাধারণ মানুষকে অতিরিক্ত লবণ গ্রহণের ক্ষতিকর দিকসমূহ জানাতে হবে।
সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন গ্লোবাল হেলথ অ্যাডভোকেসি ইনকিউবেটরের কান্ট্রি লিড-বাংলাদেশ মুহাম্মদ রুহুল কুদ্দুস, হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার (অব.) অধ্যাপক ডা. ইউনুছুর রহমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টি ও খাদ্য বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক খালেদা ইসলাম, বাংলাদেশ ফুড সেফটি অথরিটির সদস্য অধ্যাপক ড. আব্দুল আলীম, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ন্যাশনাল প্রফেশনাল অফিসার (নিউট্রিশন) ফারিয়া শবনব ও ন্যাশনাল প্রফেশনাল অফিসার (এনসিডি) ডা. ফারজানা আক্তার ডরিন, জাতীয় পুষ্টিসেবার প্রোগ্রাম ম্যানেজার ডা. ফাতেমা আক্তার প্রমুখ। তথ্য সূত্র আর টিভি নিউজ।