News update
  • UNGA urges renewed int’l efforts for a resolution of Rohingya crisis      |     
  • First National AI Readiness Assessment Report Published     |     
  • China calls for implementation roadmap for new finance goal     |     
  • New gas reserve found in old well at Sylhet Kailashtila field     |     
  • Revenue earnings shortfall widens in October     |     

ডিম-মুরগির অস্থিরতা কাটাতে ১০ দফা বিপিএর

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক খাদ্য 2024-12-16, 10:31am

41a3001ca1a58b616a6fde6889fcccc679adb91f38cce1c3-23138f37d6e65647aa6b488bac97caaa1734323482.jpg




সমস্যার সংকট সমাধানের জন্য বারবার উদ্যোগ নেয়ার আহ্বনা জানানো হলেও সরকার প্রান্তিক খামারিদের দিকে নজর দিচ্ছে না অভিযোগ তুলে আগামী ১ জানুয়ারি থেকে সারাদেশে ১০ দফা দাবিতে প্রান্তিক খামারে ডিম-মুরগি উৎপাদন বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএ)।

রোববার (১৫ ডিসেম্বর) এ বিজ্ঞপ্তিতে বিপিএ সভাপতি সুমন হাওলাদার জানিয়েছেন, বর্তমানে করপোরেট কোম্পানির আধিপত্য ও সিন্ডিকেটের কারণে দেশের মুরগি ও ডিমের বাজারে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে, যার ফলে প্রান্তিক খামারিরা ক্ষতির মুখে পড়ছে। এই সংকট দেশের খাদ্য নিরাপত্তা, কর্মসংস্থান এবং অর্থনীতির জন্য গুরুতর হুমকি সৃষ্টি করছে।

বর্তমানে প্রায় ৫০ লাখ লোকের কর্মসংস্থানও এই সংকটের কারণে ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। যদি সরকারের পদক্ষেপ না নেয়া হয়, তবে পোল্ট্রি খাতে দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতি হতে পারে এবং প্রান্তিক খামারিরা তাদের উৎপাদন বন্ধ করে দিতে বাধ্য হবে, যা জাতীয় অর্থনীতিতে মারাত্মক প্রভাব ফেলবে।

ডিম মুরগির বাজারের স্বস্তি ফিরিয়ে আনতে প্রান্তিক খামারিদের রক্ষায় বারবার সরকারের প্রতি কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানানো হচ্ছে। তবে উল্টো করপোরেট সিন্ডিকেটকে সরকার সহযোগিতা করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সরকার যদি দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ না করে, তবে আগামী জানুয়ারি থেকে দেশের সকল জেলা ও উপজেলায় প্রান্তিক খামার বন্ধের কর্মসূচি পালন করতে বাধ্য হব।

বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের ১০ দফা দাবিগুলো হলো-

করপোরেট কোম্পানিগুলো শুধু ফিড ও মুরগির বাচ্চা উৎপাদনে সীমাবদ্ধ থাকবে

বর্তমানে করপোরেট কোম্পানিগুলো ডিম ও মুরগি উৎপাদনেও অংশগ্রহণ করছে, যার ফলে ছোট খামারিরা বাজারে প্রতিযোগিতা করতে পারছে না। এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য, পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন দাবি করছে যে, করপোরেট কোম্পানিগুলোর কাজকর্ম ফিড ও বাচ্চার উৎপাদন পর্যন্ত সীমাবদ্ধ রাখা উচিত, যাতে প্রান্তিক খামারিরা তাদের উৎপাদন চালিয়ে যেতে পারে।

বাণিজ্যিকভাবে করপোরেট কোম্পানির ডিম ও মুরগি উৎপাদন বন্ধ করতে হবে

করপোরেট কোম্পানির বাণিজ্যিকভাবে ডিম ও মুরগি উৎপাদন প্রান্তিক খামারির জন্য ক্ষতিকর। সিন্ডিকেটের মাধ্যমে তাদের উৎপাদিত পণ্যের দাম কমে যায়, যা খামারিদের জন্য লাভজনক নয়। এই কার্যক্রম বন্ধ হলে বাজারে স্থিতিশীলতা ফিরে আসবে এবং খামারিরা লাভবান হতে পারবে।

ফিড ও মুরগির বাচ্চার সিন্ডিকেট বন্ধ করতে হবে

ফিড এবং মুরগির বাচ্চার সিন্ডিকেটের মাধ্যমে অযৌক্তিক মূল্য বৃদ্ধি হয়, যা প্রান্তিক খামারিদের জন্য বড় সমস্যা। সিন্ডিকেটের মাধ্যমে ফিড ও বাচ্চার দাম বাড়ানোর ফলে খামারিরা তাদের উৎপাদন খরচ সামাল দিতে পারছে না। এই সিন্ডিকেট বন্ধ করে, খামারিদের জন্য সাশ্রয়ী মূল্যে ফিড ও বাচ্চা সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে।

প্রান্তিক খামারিদের উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করতে হবে

দেশের পোল্ট্রি খাতে প্রান্তিক খামারিরা ন্যায্য মূল্য পেতে পারেন না, যা তাদের ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে সমস্যা তৈরি করছে। বাজারে পণ্যের মূল্য নিয়ন্ত্রণ করতে হবে এবং খামারিদের জন্য একটি সুষ্ঠু বাজার ব্যবস্থা গড়তে হবে, যাতে তারা তাদের উৎপাদিত পণ্যের জন্য সঠিক দাম পায়।

ক্ষুদ্র খামারিদের সহজ শর্তে ঋণ ও ভর্তুকি দিতে হবে

খামারিদের উৎপাদন বাড়াতে সহায়তা করতে ঋণ ও ভর্তুকি ব্যবস্থা চালু করা জরুরি। ক্ষুদ্র খামারিদের উৎপাদন বৃদ্ধি, প্রশিক্ষণ, এবং প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়ার জন্য সহজ শর্তে ঋণ ও ভর্তুকি প্রদান করা হলে তারা দ্রুত বৃদ্ধি পাবে এবং দেশীয় পোল্ট্রি শিল্পকে আরও শক্তিশালী করতে পারবে।

ক্ষতিগ্রস্ত খামারিদের জন্য প্রণোদনার ব্যবস্থা করতে হবে 

করপোরেট সিন্ডিকেট ও অসাধু কার্যক্রমের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত খামারিদের পুনরুদ্ধারের জন্য বিশেষ প্রণোদনা প্রয়োজন। এই প্রণোদনা তাদের ব্যবসা চালিয়ে যেতে সহায়ক হবে এবং তাদের আর্থিক সংকট মোকাবেলা করতে সাহায্য করবে।

আলাদা বাজার সুবিধা তৈরি করতে হবে

করপোরেট কোম্পানির আধিপত্যের বিরুদ্ধে প্রান্তিক খামারিদের জন্য আলাদা বাজার ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে, যাতে তারা তাদের উৎপাদিত পণ্য সরাসরি বাজারে সরবরাহ করতে পারে এবং মাঝারি ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে সঠিক মূল্য পায়।

সরকারি নীতিমালা তৈরি করে করপোরেট সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করতে হবে

পোল্ট্রি খাতে সুনির্দিষ্ট নীতিমালা তৈরি করে করপোরেট কোম্পানির একচেটিয়া ব্যবসা রোধ করতে হবে, যাতে তারা শুধু তাদের স্বার্থে ব্যবসা না করে, বরং পুরো খাতের উন্নতি হয় এবং প্রান্তিক খামারি দীর্ঘমেয়াদি উন্নতির সুফল পায়।

কন্ট্রাক্ট ফার্মিংয়ের ফাঁদ বন্ধ করতে হবে

বর্তমানে কন্ট্রাক্ট ফার্মিংয়ের মাধ্যমে করপোরেট কোম্পানিগুলো প্রান্তিক খামারিদের ওপর বিশাল চাপ সৃষ্টি করছে। এই সিস্টেমটি বন্ধ করা জরুরি, যাতে খামারিরা স্বাধীনভাবে ব্যবসা চালাতে পারে এবং নিজেদের লাভের ভাগ পেতে পারে।

প্রান্তিক খামারিদের প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ দিতে হবে

খামারিদের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ সেবা চালু করতে হবে। এটি তাদের উৎপাদন ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করবে এবং একই সাথে তাদের ব্যবসার উন্নতি ঘটাবে।

বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন প্রান্তিক খামারিদের স্বার্থে সরকারকে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানায়, এসব পদক্ষেপ বাস্তবায়িত হলে দেশের পোল্ট্রি শিল্পে স্থিতিশীলতা ফিরে আসবে, প্রান্তিক খামারিরা বাঁচবে, এবং দেশের খাদ্য নিরাপত্তা ও অর্থনীতি আরও শক্তিশালী হবে। সময়।