News update
  • Israeli Aggression against Qatar, Extension of Crimes against Palestine     |     
  • No place is safe in Gaza. No one is safe     |     
  • Stocks fail to recover despite slight gains in Dhaka, Ctg     |     
  • BB Purchases $353m in Dollar Auction to Stabilise Taka     |     
  • Promoting social inclusion of disabled persons thru empowerment     |     

পশ্চিমবঙ্গে নতুন নিয়োগ দুর্নীতি: আবারো সমস্যায় মমতা ব্যানার্জীর দল?

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক গনতন্ত্র 2023-03-26, 7:58am

0081e0a0-ca66-11ed-9d56-f73ba2fbef8d-e42d7087f004f6bef31f5f80be134d491679795889.jpg




পশ্চিমবঙ্গে যখন স্কুল শিক্ষক দুর্নীতি নিয়ে ক্ষমতাসীন দল তৃণমূল কংগ্রেস এমনিতেই অস্বস্তিতে, তার মধ্যেই নতুন এক দুর্নীতির কথা জানতে পেরেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট বা ইডি। নতুন ভাবে সামনে আসা এই দুর্নীতি হয়েছে রাজ্যের বেশ কয়েকটি পৌরসভা বা পুরসভায় অর্থের বিনিময়ে নিয়োগ করে, এমনটাই অভিযোগ।

নতুন এই দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় তৃণমূল কংগ্রেস এবং দলটির নেত্রী মমতা ব্যানার্জীর অস্বস্তি বাড়ল বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।

তৃণমূল কংগ্রেস দল বলছে তারা কোনও ধরণের দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেবে না, কিন্তু একই সঙ্গে তারা অভিযোগ তুলেছে যে বিগত বামফ্রন্টের আমলেও দুর্নীতি করে অনেক শিক্ষক এবং শিক্ষা কর্মী নিয়োগ হয়েছে, তারও তদন্ত হোক।

শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে অভিযুক্ত হয়ে ইডির হেফাজতে আছেন প্রাক্তন শিক্ষা মন্ত্রী ও তৃণমূল কংগ্রেসের মহাসচিব পার্থ চ্যাটার্জী সহ মোট ছয়জন। নগদ এবং যত স্থাবর সম্পত্তি উদ্ধার হয়েছে এখনও পর্যন্ত, তার মূল্য প্রায় ১১১ কোটি টাকা, এমনটাই জানিয়েছে ইডি।

ওই দুর্নীতির তদন্ত চালাতে গিয়েই নতুন এক দুর্নীতি – পুরসভায় নিয়োগ দুর্নীতির খোঁজ পেয়েছে তারা।

পুরসভায় নিয়োগ দুর্নীতি কীভাবে জানা গেল?

কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রনালয়ের তদন্ত শাখা ইডি জানিয়েছে তারা স্কুল শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির একটি সূত্র ধরে অয়ন শীল নামে এক ব্যক্তির বাড়িতে তল্লাশি চালাতে গিয়ে এমন কিছু নথি উদ্ধার করেছে, যার মাধ্যমে রাজ্যের বেশ কিছু পুরসভায় অর্থের বিনিময়ে চাকরী দেওয়া হয়েছে বলে তারা মনে করছে।

তদন্তকারী সংস্থা বলছে, “শিক্ষক ও শিক্ষা কর্মী নিয়োগ দুর্নীতির একটি মামলায় তারা অয়ন শীল নামে এক দালালকে গ্রেপ্তার করেছে এবং আগেই গ্রেপ্তার হওয়া শান্তনু ব্যানার্জী এবং মি. শীলের বাড়ি, অফিস সহ নয়টি জায়গায় তল্লাশি চালিয়েছে।“

“ওই তল্লাশি চালাতে গিয়েই তারা এমন গুরুত্বপূর্ণ নথি পেয়েছ, যা থেকে বিভিন্ন পুরসভায় যে বেআইনি নিয়োগ হয়েছে, তার তথ্য পাওয়া গেছে,” জানিয়েছ ইডি।

গ্রেপ্তার হওয়া তৃণমূল কংগ্রেস নেতা শান্তনু ব্যানার্জীর ঘনিষ্ঠ অয়ন শীল। তার একটি নিয়োগ পরীক্ষা ব্যবস্থাপনা সংস্থা আছে। দক্ষিণ বঙ্গের ছয়টি পুরসভায় বিভিন্ন স্তরে নিয়োগের জন্য ওই সংস্থাটিকে বরাত দেওয়া হয় বলে তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন। সেই চাকরীগুলিই অর্থের বিনিময়ে, পরীক্ষার খাতা জালিয়াতি করে, কখনও আবার রাজনৈতিক চাপ দিয়ে বিক্রি করতেন অয়ন শীল, এমনটাই জানা যাচ্ছে।

বেআইনিভাবে নিযুক্তদের সংখ্যা কয়েক হাজার হতে পারে বলে তদন্তকারীদের প্রাথমিক অনুমান।

নতুন নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে কী বলছে তৃণমূল কংগ্রেস?

তৃণমূল কংগ্রেস দাবি করছে যে তারা দুর্নীতির সঙ্গে কোনওদিন আপোষ করে নি এবং দলের মহাসচিব ও মন্ত্রীসভায় দ্বিতীয় সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী হওয়া সত্ত্বেও পার্থ চ্যাটার্জীকে দল আর মন্ত্রীসভা থেকে সরিয়ে দিয়েছে।

“এখন নতুন করে যার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠছে, তাকে কোথাও এনডর্স করতে যায় নি তৃণমূল কংগ্রেস,” বলছিলেন দলটির মুখপাত্র ও কলকাতা পৌর সংস্থার নির্বাচিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর অরূপ চক্রবর্তী।

তার কথায়, “দুর্নীতি যে সময়েই হোক সেটা দুর্নীতিই। ২০১১ থেকে ২০২২ অবধি যদি দুর্নীতি হয়ে থাকে, তাহলে ১৯৯০ থেকে ২০১০-১১ – এই সময়ের দুর্নীতির কেন তদন্ত করছে না ইডি? আমরা তো জানতে পারছি এই চাকরী বিক্রির ঘটনায় ধৃত অয়ন শীলকে কীভাবে সিপিএম হুগলি জেলায় শিক্ষা সংক্রান্ত কাজে ব্যবহার করেছিল।! তার বাড়ি থেকে তো ২০০৯ সালের চাকরী পরীক্ষার খাতা উদ্ধার হয়েছে।“

তিনি আরও অভিযোগ করছেন ১৯৯৭ সালের আগে যত চাকরী হয়েছে, সব সিপিআইএমের সর্বক্ষণের কর্মী বা তাদের পরিবারের সদস্যদের হয়েছে। ভারতের প্রধান হিসাবপরীক্ষক কম্পট্রোলার এন্ড অডিটর জেনারেলের রিপোর্টেও তার উল্লেখ আছে বলে মন্তব্য মি. চক্রবর্তীর।

ঘটনাচক্রের বামফ্রন্ট আমলে যে দুর্নীতি করে চাকরী হয়েছে, সেই অভিযোগ এতদিন পরে কেন তোলা হচ্ছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন বিরোধীরা।

তারা বলছেন শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি এবং সর্বশেষ পুরসভায় নিয়োগ দুর্নীতি সামনে আসার পরে এখন ক্ষমতাসীন দল জানতে পারল যে আগের আমলে দুর্নীতি হয়েছে?

সিপিআইএম পলিটব্যুরো সদস্য সুজন চক্রবর্তীর স্ত্রীও বেআইনি পথে একটা কলেজে চাকরী পেয়েছিলেন বলে পাল্টা অভিযোগ করছে তৃনমূল কংগ্রেস।

মি. চক্রবর্তী বলছেন, “সরকারের কাছে তো সব তথ্য আছে যে কে কবে চাকরী পেয়েছে, তাদের যোগ্যতা কী ছিল। সেই সব তালিকা করে একটা শ্বেতপত্র প্রকাশ করুক না সরকার।“

বাম নেতারা বলছেন একের পর এক দুর্নীতিতে দলের নেতারা জড়িয়ে যাওয়ায় যেভাবে অস্বস্তিতে পড়তে হচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেসকে, সেদিক থেকে দৃষ্টি ঘোরাতেই এধরণের পুরনো অভিযোগ তোলা হচ্ছে।

‘সততার প্রতীক’ মমতা ব্যানার্জীর ভাবমূর্তিতে কালির দাগ?

তৃণমূল কংগ্রেস দীর্ঘদিন ধরেই মমতা ব্যানার্জীর নামের আগে ‘সততার প্রতীক’ কথাটি লিখত প্রচারের সময়ে।

নিম্ন মধ্যবিত্ত এলাকায় টিনের চালের বাড়িতে তার অতি সাধারণ জীবনযাপন, সাধারণ শাড়ি-হাওয়াই চপ্পল পড়ে ঘোরা – এসবই তার সেই সৎ ভাবমূর্তি তৈরি করেছিল।

“মমতা ব্যানার্জীর যে ভাবমূর্তি ছিল, সেটা এখন প্রশ্নের মুখে। একই সঙ্গে তার ভাইপো অভিষেক ব্যানার্জীর ভূমিকাও। তাই আজকাল কিন্তু তৃণমূল কংগ্রেসের কোনও প্রচারে আর ‘সততার প্রতীক’ কথাটা লেখা হয় না,” বলছিলেন রাজনৈতিক বিশ্লেষক আশিস ঘোষ।।

মমতা ব্যানার্জী সবসময়ে সাদা শাড়ি পরেন, সেই শাড়িতে কি প্রতীকী ভাবে হলেও তাহলে কালির ছিটে লাগছে?

তৃণমূল কংগ্রেস মুখপাত্র অরূপ চক্রবর্তী অবশ্য বলছেন, “একদমই নয়”। তথ্য সূত্র বিবিসি বাংলা