
সরকারি চাকরিজীবীদের বহু প্রতীক্ষিত নবম জাতীয় বেতন কাঠামো বাস্তবায়ন নিয়ে তৈরি হয়েছে গভীর অনিশ্চয়তা। পে কমিশন গঠন, সময়সীমা নির্ধারণ এবং প্রত্যাশার পরও বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদে এই বেতন কাঠামো কার্যকর হওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ বলেই ইঙ্গিত মিলছে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে।
গত জুলাইয়ে নবম পে স্কেলের জন্য জাতীয় বেতন কমিশন গঠন করা হয়। ছয় মাসের মধ্যে সুপারিশ জমা দেওয়ার কথা থাকলেও নির্ধারিত সময়সীমা পেরিয়ে গেলেও এখনো কমিশনের চূড়ান্ত প্রস্তাব আসেনি। এর মধ্যেই অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ স্পষ্ট করে জানিয়েছেন, নতুন পে স্কেল কার্যকরের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে পরবর্তী নির্বাচিত সরকার।
অর্থ উপদেষ্টার ভাষ্য অনুযায়ী, নতুন বেতন কাঠামো ঘোষণা করা একটি জটিল প্রক্রিয়া। এর সঙ্গে আর্থিক সক্ষমতা, প্রশাসনিক প্রস্তুতি ও কাঠামোগত সংস্কারের বিষয় জড়িত। স্বল্প সময়ের মধ্যে এসব যাচাই-বাছাই করে গেজেট প্রকাশ বাস্তবসম্মত নয় বলেও তিনি ইঙ্গিত দেন।
নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, ২০২৬ সালের ২২ জানুয়ারি থেকে জাতীয় নির্বাচনের প্রচারণা শুরু হবে। অথচ বেতন কমিশনের চূড়ান্ত সুপারিশ আসতে পারে জানুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহে। এই অল্প সময়ের ব্যবধানে সুপারিশ পর্যালোচনা, অনুমোদন ও গেজেট প্রকাশ প্রায় অসম্ভব বলেই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
এদিকে পে-স্কেল বাস্তবায়নে বিলম্বে সরকারি কর্মচারীদের মধ্যে বাড়ছে ক্ষোভ। কর্মচারী সংগঠনগুলো ৩০ নভেম্বরের মধ্যে সুপারিশ জমার আল্টিমেটাম দিয়েছিল। সময়সীমা পেরিয়ে যাওয়ায় এবং বাস্তবায়ন অনিশ্চিত হয়ে পড়ায় আন্দোলনের হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন তারা।
জানা গেছে, প্রস্তাবিত খসড়ায় বর্তমান ২০টি গ্রেড কমিয়ে ১৩টি গ্রেডে আনার চিন্তাভাবনা রয়েছে। তবে এই পরিবর্তন নিয়ে কমিশনের ভেতরেই আরও একাধিক বৈঠকের প্রয়োজন রয়েছে। এখনো অন্তত তিনটি সভা বাকি বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
সব মিলিয়ে সরকারি চাকরিজীবীদের প্রত্যাশিত নবম পে-স্কেল বর্তমান সরকারের আমলে কার্যকর হচ্ছে না-এমন ধারণাই এখন প্রবল। সিদ্ধান্ত ও বাস্তবায়নের ভার যে পরবর্তী সরকারের কাঁধেই যাচ্ছে, সে ইঙ্গিত ক্রমেই স্পষ্ট হয়ে উঠছে।