News update
  • Concerted global push for Sudan ceasefire needed: Guterres     |     
  • Light showers bring little relief to Dhaka dwellers     |     
  • Lightning, rain kill 50 in Pakistan     |     
  • Heavy storms soak Gulf as Oman toll rises to 18     |     
  • Chuadanga records season’s highest temperature 40.6 degrees      |     

ভূমিকম্প: তুরস্ক, সিরিয়ায় নিহতের সংখ্যা ৮০০০ ছাড়ালো

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক দূর্ঘটনা 2023-02-08, 3:08pm

71905410-a780-11ed-8f65-71bfa0525ce3-1-08ca6cb514abaff76790a72db06f812c1675847306.jpg




দক্ষিণ তুরস্ক এবং উত্তর সিরিয়ায় বিধ্বংসী এক ভূমিকম্পে আট হাজারেরও বেশি মানুষের মৃত্যুর পর সেখানে আন্তর্জাতিক সাহায্য প্রচেষ্টা জোরদার করা হচ্ছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ডাব্লিউএইচও অনুমান করছে, তুরস্ক এবং সিরিয়া জুড়ে আড়াই কোটিরও বেশি মানুষ এই ভূমিকম্পের শিকার হয়েছেন।

দুটি দেশেই হাজার হাজার ভবন ধসে পড়েছে এবং ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে পড়া মানুষদের বাঁচাতে উদ্ধারকর্মীরা প্রাণপণ প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন।

উত্তর সিরিয়ায় ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে পড়া লোকজন সাহায্যের জন্য ডাকাডাকি করছেন কিন্তু তাদের ডাকে সাড়া দেওয়ার মতো প্রায় কেউ নেই।

ইস্তাম্বুলের একজন তুর্কি সাংবাদিক ইব্রাহিম হাসকোলোলু বলেছেন, "লোকেরা এখনও [ধসে পড়া] ভবনের নিচে রয়েছে, তাদের সাহায্যের প্রয়োজন।"

তিনি বিবিসি নিউজকে বলেছেন, ধ্বংসস্তূপের নিচে থেকে আটকে পড়া লোকজন তাকে এবং অন্যান্য সাংবাদিকদের ভিডিও, ভয়েস নোট এবং তাদের লাইভ অবস্থান পাঠাচ্ছে।

তারা আমাদের বলছে যে তারা কোথায় আছে এবং "আমরা তাদের জন্য কিছুই করতে পারছি না," মি. হাসকোলোলু বলেছেন, তুরস্কের জন্য এখন প্রয়োজন সমস্ত আন্তর্জাতিক সহায়তা।

সোমবার ভোররাতে গাজিয়ানটেপের কাছে ৭.৮ মাত্রার ভূমিকম্পটি আঘাত হানে।

স্থানীয় সময় প্রায় বেলা দেড়টার দিকে আরও একটি ৭.৫-মাত্রার ভূমিকম্প হয়। কর্মকর্তারা বলেছেন যে এটি ‘আফটারশক’ ছিল না।

তুর্কি দুর্যোগ সংস্থা জানিয়েছে, প্রথম ভূমিকম্পটিতেই তুরস্কে ৩,৪১৯ জনেরও বেশি মারা গেছে এবং আহত হয়েছে আরও ১৫ হাজার মানুষ।

অন্যদিকে সিরিয়ায় ১৬০০ জনেরও বেশি লোক মারা গেছে বলে জানা যাচ্ছে।

সোমবার পর পর দুটি ভূমিকম্পের পর তুরস্কের দক্ষিণাঞ্চলে পর পর কয়েকটি শক্তিশালী আফটারশক ও কম্পন আঘাত হেনেছে।

মঙ্গলবার দিনের আলো ফোটার সাথে সাথে উদ্ধারকারী দল এবং স্থানীয় বাসিন্দারা ধসে পড়া ভবনের ধ্বংসস্তূপের নিচে জীবিত ব্যক্তিদের সন্ধানের কাজ আরও জোরদার করেছেন।

আফটারশকের ভয়ে অনেকে আবার বৃষ্টি ও তুষারপাতের মধ্যে রাত কাটিয়েছেন।

উত্তর-পশ্চিম সিরিয়ার বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত এলাকায় ত্রাণ সংস্থা হোয়াইট হেলমেটস ইমার্জেন্সি রেসপন্স গ্রুপ বলছে, ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে পড়াদের বাঁচাতে সময় দ্রুত ফুরিয়ে আসছে।

তুরস্ক ও সিরিয়ায় এখন মোট পাঁচ হাজারেরও বেশি মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।

তুরস্কের ভাইস প্রেসিডেন্ট ফুয়াত ওকতায় বলেছেন, তুরস্কে মৃতের সংখ্যা অন্তত ৩,৪১৯ জন। আহত হয়েছেন আরও ২০,৫৩৪ জন।

মৃত্যুর মিছিল দীর্ঘতর হচ্ছে

প্রায় ৬,০০০ ভবন ধসে পড়েছে বলে জানান তুরস্কের ভাইস প্রেসিডেন্ট।

সিরিয়ায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১,৬০২ জনে।

তুরস্কের দুর্যোগ ও জরুরি ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ আফাড তার সর্বশেষ আপডেটে জানিয়েছে, ২৪,৪০০ জনেরও বেশি জরুরি কর্মীকে অনুসন্ধান ও উদ্ধার অভিযানে মোতায়েন করা হয়েছে।

তবে শঙ্কা হচ্ছে, এই শীত মৌসুমে তাপমাত্রা হিমাঙ্কের নিচে নেমে গেলে উদ্ধার অভিযান বাধাগ্রস্ত হতে পারে।

জাতিসংঘ, ইইউ, নেটো, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, চীন, রাশিয়া, ভারত, জাপান, ইরাক, ইরান, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, গ্রিস, পাকিস্তানসহ অন্যান্য দেশের সরকার থেকে ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলে আন্তর্জাতিক সাহায্য পাঠানো হচ্ছে।

আড়াই কোটি ক্ষতিগ্রস্ত

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ডাব্লিউএইচও বলছে, দুই দেশ মিলিয়ে, তাদের হিসেবে অনুযায়ী, দুই কোটি ৩০ লক্ষ মানুষ ভূকম্পের শিকার হয়েছেন।

এর মধ্যে প্রায় ১০ লক্ষেরও বেশি শিশু রয়েছে বলে ডব্লিউএইচওর সিনিয়র জরুরি কর্মকর্তা অ্যাডেলহেইড মার্শাং এর আগে জাতিসংঘ স্বাস্থ্য সংস্থার নির্বাহী কমিটিকে জানিয়েছেন।

সিরিয়ায় উদ্ধার অভিযানে ইতোমধ্যেই সমস্যা বাড়তে শুরু করেছে। রাস্তাঘাট ধ্বংস হয়ে যাওয়ায় তুরস্ক থেকে জাতিসংঘের জরুরি সাহায্য পাঠানোর পথ বন্ধ হয়ে গেছে।

বিবিসির মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক সংবাদদাতা অ্যানা ফস্টার তুরস্কের ওসমানিয়া শহর থেকে ধ্বংসস্তূপের বর্ণনা দিয়েছেন। এই শহরটি ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থলের কাছেই।

" বৃষ্টির কারণে উদ্ধার তৎপরতা ব্যাহত হচ্ছে। রাতে শহরটিতে কোন বিদ্যুৎ ছিল না।"

সোমবার ভোর রাতে শক্তিশালী ভুমিকম্প আঘাত হানার ১২ ঘণ্টা পরে আরেকটি শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত করে। দুটি দেশেই দুর্গত এলাকা জুড়ে এক বিশাল উদ্ধার অভিযান চলছে।

তবে গ্রাম ও শহরগুলোয় উদ্ধারকর্মীদের ধ্বংসস্তূপ অনুসন্ধানের সাথে সাথে এই সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে।

হাজার হাজার মানুষ এই ভূমিকম্পে আহত হয়েছেন বলে জানা যাচ্ছে।

এই জায়গায় কেন ভূমিকম্প?

তুরস্ক পৃথিবীর অন্যতম সক্রিয় ভূমিকম্প প্রবণ অঞ্চলগুলোর একটিতে অবস্থিত।

এর আগে ১৯৯৯ সালে দেশটির উত্তর পশ্চিমাঞ্চলে একটি শক্তিশালী ভূমিকম্পে ১৭ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছিল।

সর্বশেষ ভূমিকম্পটি ঘটেছে তুরস্কের দক্ষিণ-পূর্ব সীমান্তের কাছে দক্ষিণ-পশ্চিম থেকে উত্তর-পশ্চিমমুখী ‘পূর্ব আনাতোলিয়ান ফল্ট’-এর চারপাশে।

সিসমোলজিস্টরা দীর্ঘকাল ধরে বলে আসছেন যে এই ফল্টটি অত্যন্ত বিপজ্জনক, যদিও গত ১০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে সেখানে কোনও উল্লেখযোগ্য ভূকম্পন হয়নি।

তবে অতীতে এই এলাকায় কিছু মারাত্মক ভূমিকম্প হয়েছে।

বিশেষ করে, ১৮৮২ সালের ১৩ই অগাস্ট সেখানে ৭.৪-মাত্রার একটি ভূমিকম্প হয়েছিল, যা আজকের রেকর্ড করা ৭.৮-মাত্রার চেয়ে উল্লেখযোগ্যভাবে কম।

তা সত্ত্বেও, ১৯ শতকের সেই ভূমিকম্পে অনেক শহরের প্রচুর ক্ষতি হয়।

আলেপ্পো শহরে ৭,০০০ মানুষ মারা যায়।

শক্তিশালী ঐ ভূমিকম্পের আফটারশক চলতে থাকে প্রায় এক বছর ধরে। তথ্য সূত্র বিবিসি বাংলা।