News update
  • Fire breaks out at jacket factory in Chattogram     |     
  • Dhaka, Delhi agree to bring down border killings to zero     |     
  • Natore’s Baraigram OC closed over negligence in bus robbery case     |     
  • Imported fruit prices surge by up to Tk 100 per kg     |     
  • 35% of air pollution in BD originates from external sources: Experts     |     

প্রশ্নফাঁস: ঘর ভাড়া নিয়ে প্রার্থীদের উত্তর মুখস্থ করাতো চক্রটি

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক পরীক্ষা 2024-07-11, 12:25pm

dfasasd-f54ece7a617fa7f99d0a0563b6b7e5151720679102.jpg




ফাঁস করা প্রশ্নের উত্তর মুখস্থ করাতে চাকরিপ্রার্থীদের জন্য কক্ষ ভাড়া নিতো চক্রটি। বাংলাদেশ রেলওয়ের উপসহকারী প্রকৌশলী পদে নিয়োগ পরীক্ষার দুই দিন আগে ঢাকার সাভারের রেডিও কলোনিতে একটি কক্ষ ভাড়া নিয়েছিলেন বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) সাবেক গাড়িচালক আবেদ আলী।

শুধু আবেদ আলী নন, নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় গ্রেপ্তার ১৭ জনের মধ্যে ৫ জন আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে বলেছেন, চাকরিপ্রার্থীদের জন্য ঢাকা ও আশপাশে কক্ষ (চক্রের সদস্যদের ভাষায় বুথ) ভাড়া নিয়েছিলেন তারা।

ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে (সিএমএম) তারা এমন জবানবন্দি দেন বলে আদালত ও সিআইডি সূত্রে জানা গেছে।

সিআইডির কর্মকর্তারা জানান, ২০০৫ সাল থেকে ক্যাডার ও নন–ক্যাডারের অন্তত ৩০টি নিয়োগ পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তিরা জড়িত।

সিআইডির গণমাধ্যম বিভাগের বিশেষ পুলিশ সুপার মো. আজাদ রহমান বুধবার (১০ জুলাই) জানান, স্বাস্থ্য ক্যাডার, পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ইনস্ট্রাক্টর, গণপূর্তের উপসহকারী প্রকৌশলী, উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা, অডিটর, নার্সিংসহ অন্তত ৩০টি নিয়োগ পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তিরা জড়িত।

সিআইডি ও আদালত সূত্র জানায়, আদালতে যাঁরা জবানবন্দি দিয়েছেন, তারা হলেন পিএসসির সাবেক গাড়িচালক সৈয়দ আবেদ আলী, পিএসসির ডেসপাস রাইডার মো. খলিলুর রহমান, পিএসসির অফিস সহায়ক সাজেদুল ইসলাম, পানির ফিল্টার ব্যবসায়ী সাখাওয়াত হোসেন, তার ছোট ভাই সায়েম হোসেন ও রাজধানীর বেসরকারি একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র লিটন সরকার।

মামলার তদন্ত-সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে আবেদ আলী বলেন, রেলওয়ের উপসহকারী প্রকৌশলী পদে নিয়োগ পরীক্ষার আগে ফাঁস হওয়া প্রশ্নপত্র ও এর উত্তর অফিস সহকারী সাজেদুলের কাছ থেকে নিয়েছিলেন তিনি। ফাঁস করা প্রশ্নের উত্তর পড়ানোর জন্য নিয়োগ পরীক্ষার দুই দিন আগে দুই দিনের জন্য ৪০ হাজার টাকায় তিনি সাভারের রেডিও কলোনিতে একটি কক্ষ ভাড়া নিয়েছিলেন। সেখানে ৫০-৬০ জন চাকরিপ্রার্থীকে ফাঁস করা প্রশ্নের উত্তর মুখস্থ করিয়েছিলেন। এ জন্য একেকজনের কাছ থেকে সাত-আট লাখ টাকা করে নিয়েছেন তিনি।

আবেদ আলী আদালতকে আরও বলেন, ছয়-সাত মাস আগে পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর নিয়োগ পরীক্ষার আগে মিরপুরের শেওড়াপাড়া ও কাজীপাড়ার মাঝামাঝি স্থানে দুই দিনের জন্য একটি কক্ষ ভাড়া নেন তিনি। তখন ৪৪ জন চাকরিপ্রার্থীর কাছ থেকে তিনি চার লাখ টাকা করে নিয়েছিলেন। এ ছাড়া ২০০৫ সালে তিনি গণপূর্তের উপসহকারী প্রকৌশলী নিয়োগ পরীক্ষায় চাকরিপ্রার্থীদের কাছ থেকে ফাঁস করা প্রশ্নপত্র বিক্রি করে তিন লাখ টাকা করে নিয়েছিলেন। তাদের মধ্যে ১৫-১৬ জনের চাকরি হয়েছে বলেও জানান তিনি।

আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে সাজেদুল ইসলাম বলেন, রেলওয়ের উপসহকারী প্রকৌশলী পদে নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্ন পিএসসির এক সদস্যের রুমের ট্রাংক থেকে সংগ্রহ করেছিলেন। এই প্রশ্নপত্র পিএসসির সাবেক গাড়িচালক আবেদ আলী ও পিএসসির ডেসপাস রাইডার খলিলুর রহমানের কাছে ৭৫ লাখ টাকায় বিক্রি করেন তিনি।

আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে সাখাওয়াত হোসেন বলেন, পল্টনের কালভার্ট রোডের একটি বাড়ির দ্বিতীয় তলায় পানির ফিল্টারের গুদাম রয়েছে তার। তার ব্যবসায় সহযোগিতা করেন ছোট ভাই সিদ্ধেশ্বরী কলেজের ছাত্র সায়েম হোসেন। পিএসসির অফিস সহায়ক সাজেদুল ইসলাম তার (সাখাওয়াত) বন্ধু। রেলওয়ের উপসহকারী প্রকৌশলী নিয়োগ পরীক্ষার ৪৪ জন প্রার্থীকে বৃহস্পতিবার ওই গুদামকক্ষে রাখা হয়। রাতভরচাকরিপ্রার্থীরা ফাঁস হওয়া প্রশ্নপত্র মুখস্থ করে পরের দিন পরীক্ষা দেন।

সায়েম হোসেন আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে বলেন, পল্টনের কালভার্ট রোডের গুদামটি চাকরিপ্রার্থীদের পড়ানোর ‘বুথ’ হিসেবে ব্যবহার করা হয়। তিনি এই বুথে চাকরিপ্রার্থীদের পড়াতে সহায়তা করতেন।

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী লিটন সরকার আদালতকে বলেন, তিনি ফাঁস করা প্রশ্নপত্র পাইয়ে দিতে চাকরিপ্রার্থীদের প্রলুব্ধ করতেন। টাকা পাওয়ার আশায় পরে ওই চাকরিপ্রার্থীদের তিনি পিএসসির ডেসপাস রাইডার খলিলের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতেন।

সিআইডি সূত্র জানায়, জবানবন্দিতে পিএসসির ডেসপাস রাইডার খলিলুর রহমান বলেন, তিনি রেলওয়ের উপসহকারী প্রকৌশলী পদে নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস করেছেন। ফাঁস করা প্রশ্নপত্র বিক্রি করে তিনি চাকরিপ্রত্যাশী ৫০-৬০ জনের কাছ থেকে বিভিন্ন অঙ্কের চেক নিয়েছেন।

এদিকে সিআইডির একজন কর্মকর্তা বলেন, গ্রেপ্তার ১৭ জনের পরিবার ও নিকটাত্মীয়ের ব্যাংক হিসাব জব্দ করার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটে (বিএফআইইউ) আবেদন করবে সিআইডি।

প্রসঙ্গত, রোববার ও সোমবার রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে রেলওয়ের উপসহকারী প্রকৌশলী নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে জড়িত অভিযোগে পিএসসির দুই উপপরিচালক, এক সহকারী পরিচালক ও সাবেক গাড়িচালকসহ ১৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। মঙ্গলবার তাদের বিরুদ্ধে রাজধানীর পল্টন থানায় সরকারি কর্ম কমিশন আইনে মামলা করেন সিআইডির একজন কর্মকর্তা। আরটিভি