News update
  • UN Warns Gaza Fuel Crisis Threatens Humanitarian Collapse     |     
  • WHO’s Saima Wazed placed on indefinite leave amid graft probe     |     
  • UNRWA Commissioner-Gen. on Gaza: 800 starving people killed     |     
  • 150,000 Rohingya flee to BD amid renewed Myanmar violence     |     
  • Scrap trader hacked, stoned dead: 2 Jubo Dal men expelled      |     

ভরা মৌসুমেও আশানুরূপ পর্যটক নেই সেন্টমার্টিনে

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক পর্যটন 2025-01-04, 8:44am

img_20250104_084223-4dacd57ad155ade4fa4429003ff33c821735958647.jpg




অন্য মৌসুমে যেখানে পর্যটক টইটম্বুর থাকতো, সেখানে চলতি মৌসুমে পর্যটক নেই বললেই চলে। প্রথমবারের মতো দেশের একমাত্র প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিনে সরকার নির্ধারিত প্রতিদিন গড়ে দুই হাজার পর্যটকেরও দেখা মিলছে না। দেশের অভ্যন্তরে ট্রাভেল পাস জটিলতার পাশাপাশি পর্যটক সীমিতকরণ রাতযাপন নিষিদ্ধ ও যাতায়াতের দীর্ঘ সমুদ্র পথসহ নানা কারণে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্টদের অভিমত।

এতে সেন্টমার্টিনের সাধারণ মানুষসহ পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা ক্ষতির মুখে পড়ছেন। পাশাপাশি বেচাকেনা কমেছে ৬০ শতাংশ পর্যন্ত। এমন পরিস্থিতি থাকলে আগামী বর্ষা মৌসুমে জীবন-জীবিকা নিয়ে চরম অভাব অনটনে পড়বেন তারা। প্রশাসন বলছে তাদের জীবন জীবিকার উন্নয়নে গ্রহণ করা হচ্ছে নানা উদ্যোগ।

অপরূপ সৌন্দর্য্যের লীলাভূমি দেশের একমাত্র প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিন দেশের অভ্যন্তরে ভ্রমণপিপাসু যে কোন মানুষের পছন্দের শীর্ষে দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপটি। প্রতিবছর পর্যটন মৌসুমে হাজারো পর্যটকের পদচারণায় মুখরিত থাকতো। তবে এবারের চিত্র অন্যান্য বছরের চাইতে একটু ভিন্ন। এবার প্রতিদিন পর্যটক ভ্রমণের এ সংখ্যা ২ হাজার নির্ধারণ করে দিয়েছে সরকার। পর্যটক সীমিতকরণের পাশাপাশি রাতযাপনেও দেওয়া হয়েছে নিষেধাজ্ঞা।

এতে দ্বীপে ভ্রমণকারীর পর্যটকরা ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাসে রাতযাপন করতে পারলেও নভেম্বর ও ফেব্রুয়ারি মাসে রাত্রিযাপনের সুযোগ পাবেন না। সেই সাথে টেকনাফ সেন্টমার্র্টিন নৌরুটে মিয়ানমারে যুদ্ধের প্রভাব পড়ায় বিকল্প হিসেবে নির্ধারণ করা হয়েছে কক্সবাজার সেন্টমার্টিনের দীর্ঘ নৌ রুট। এমন পরিস্থিতিতে গত ১লা ডিসেম্বর থেকে কক্সবাজার-সেন্টমার্টিন রুটে কক্সবাজার শহরের নুনিয়ারছড়াস্থ আইডব্লিউটিএ জেটি ঘাট শুরু হয়েছে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল। কিন্তু জাহাজ চলাচল শুরুর হওয়ার প্রথম দিন থেকে সরকার নির্ধারিত ২ হাজার পর্যটক দ্বীপে ভ্রমণে যাননি।

প্রশাসনের তথ্য মতে, গত পহেলা ডিসেম্বর থেকে ২রা জানুয়ারি পর্যন্ত ৪৯ হাজার ৫২৯ জন পর্যটক সেন্টমার্টিন ভ্রমণে যান। গড়ে প্রতিদিন দেড় হাজার পর্যটক দ্বীপে ভ্রমণে যাচ্ছে। গত বুধবার থেকে এ সংখ্যা আরও কমে গেছে বলে জানিয়েছে সেন্টমাাির্টনের বাসিন্দারা।

চলতি মৌসুমে দ্বীপে ভ্রমণে যাওয়া পর্যটকরা বলেছেন, ট্রাভেল পাস নিয়ে নিয়ে দেশের অভ্যন্তরে কোথাও ভ্রমণে যাওয়ার অভিজ্ঞতা তাদের এ প্রথম। ভ্রমণ পাস সংগ্রহে জটিলতা ও বিভ্রান্তিকর। পাশাপাশি পর্যটক সংখ্যা সীমিতকরণ আর রাতযাপনে নিষেধাজ্ঞার কারণে অনেকে নিরুৎসাহিত হচ্ছেন। তারপরও যারা দ্বীপে ভ্রমণে গেছেন তাদের অনেক উদ্বিগ্নতার মধ্যে ট্রাভেল পাস সংগ্রহ করতে হয়েছে। এ ছাড়াও দ্বীপে ভ্রমণে যাওয়া পর্যটকদের অনেকেই জানিয়েছে দীর্ঘ সময় সমুদ্র পথে যাতায়াতে নিরুৎসাহিত হবে।

সেন্টমার্টিন দ্বীপবাসীসহ পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী বরাত দিয়ে সী ক্রুজ অপারেটর ওনার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক হোসাইন ইসলাম বাহাদুর বলেন, সরকারি সিদ্ধান্তের পর দ্বীপে ভ্রমণে কড়াকড়ি এবং ভ্রমণ পাসের জন্য নিবন্ধনের তথ্য প্রচার হওয়ায় নির্ধারিত ২ হাজার পর্যটকেরও দেখা মিলছে না। ১৭ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের দ্বীপটি সাড়ে ১০ হাজার মানুষ বসাবস করেন। এক সময় দ্বীপের মানুষের প্রধান আয়ের উৎস ছিল সমুদ্রে মাছ আহরণ। কিন্তু গত ২০ বছরে বদলে গেছে এই আয়ের মাধ্যম। এখন দ্বীপের বাসিন্দারা শতভাগ পর্যটনের উপর নির্ভরশীল। নভেম্বর থেকে মার্চ এই ৫ মাসের দ্বীপ ভ্রমণকারী পর্যটক নিয়ে করা আয়ে পুরো বছর জীবন-জীবিকা নির্বাহ করে দ্বীপবাসী। কিন্তু এ বছর ৪ মাসও সময় পাওয়া যাচ্ছে না। তাছাড়া যেখানে ৬-৭ হাজার পর্যটক থাকতো। সেখানে দেড় হাজার পর্যটকে বেচাকেনা কমেছে ৬০ শতাংশ। জীবন জীবিকা নিয়ে অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে দ্বীপবাসী।

দুই হাজারের বেশি পর্যটক সেন্টমার্টিনে ভ্রমণে না যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করা হচ্ছে জানিয়ে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহসান উদ্দিন বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে দ্বীপবাসী কিছুটা অর্থনৈতিক সংকটে পড়েছে। সে জন্য সেন্টমার্টিনবাসী ও ব্যবসায়ীদের জীবন জীবিকা নিয়ে ভাবা হচ্ছে। তাদের পর্যাপ্ত ট্রেণিংয়ের মাধ্যমে ইক্যুটুরিজম ব্যবসার করার কথাও জানান তিনি।

দ্বীপের বাসিন্দা ও পর্যটন ব্যসায়ীদের দাবি, দ্বীপ ভ্রমণে পর্যটকের সংখ্যা বাড়ানোর পাশাপাশি রাতযাপনে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের। তা না হলে সেন্টমার্টিনের পর্যটন শিল্প যেমন ক্ষতি হবে তেমনি স্থানীয় বাসিন্দারাও চরম দৈন্যদশায় পড়বেন। এরই মধ্যে সরকারের সিদ্ধান্ত কেন অবৈধ হবে না মর্মে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। আরটিভি