News update
  • Fire breaks out at jacket factory in Chattogram     |     
  • Dhaka, Delhi agree to bring down border killings to zero     |     
  • Natore’s Baraigram OC closed over negligence in bus robbery case     |     
  • Imported fruit prices surge by up to Tk 100 per kg     |     
  • 35% of air pollution in BD originates from external sources: Experts     |     

চলন্ত বাসে ডাকাতি ও শ্লীলতাহানির ঘটনায় তিন জন গ্রেফতার: পুলিশ

বিবিসি বাংলা পুলিশ 2025-02-22, 3:27pm

ererqr-958e468f72449e2c5887c7d91ecb07b91740216440.jpg

সংবাদ সম্মেলনে টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান



ঢাকা থেকে রাজশাহীগামী চলন্ত বাসে ডাকাতি ও নারী যাত্রীদের শ্লীলতাহানির ঘটনায় তিন জনকে গ্রেফতারের তথ্য জানিয়েছে পুলিশ। গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা অভিযোগ স্বীকার করেছে বলেও পুলিশ দাবি করেছে।

শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) বিকালে ঢাকার সাভারের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয় বলে জানায় টাঙ্গাইল জেলা পুলিশ।

শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

তিনি দাবি করেছেন, বাসে নারী যাত্রীদের "প্রাথমিকভাবে ধর্ষণের আলামত পাওয়া যায়নি। তবে শ্লীলতাহানির ঘটনা ঘটেছে।"

পুলিশ বলছে, গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মধ্যে একজনের বিরুদ্ধে সিরাজগঞ্জ জেলার উল্লাপাড়া থানায় একটি ও ঢাকা জেলার সাভার মডেল থানায় একটি বাস ডাকাতি মামলাসহ মোট পাঁচটি মামলা রয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার বলেন, "মামলা হওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই তথ্য প্রযুক্তি ও বিভিন্ন সোর্স ব্যবহার করে তাদেরকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছি। তাদেরকে পাঁচদিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হবে।"

তিনি আরও জানান, "ঘটনাটি বিভিন্ন জেলাব্যাপী বিস্তৃত থাকায় কার্যক্রম পরিচালনা চ্যালেঞ্জিং ছিল। তারপরও আমরা অপরাধীদের গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছি। বাকি অপরাধীদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।"

সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, "বাসে নারী যাত্রীদের ধর্ষণের শিকার হওয়ার বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে। তবে প্রাথমিকভাবে ধর্ষণের আলামত পাওয়া যায়নি৷ তবে শ্লীলতাহানির ঘটনা ঘটেছে। গ্রেফতারকৃতরা প্রাথমিকভাবে ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়টি স্বীকার করেছে।"

পুলিশের প্রেস বিজ্ঞাপ্তিতে বর্ণনা করা হয়েছে, ১৮ ফেব্রুয়ারি রাত অনুমানিক একটা ৪৫ মিনিট থেকে রাত প্রায় চারটা পর্যন্ত ঢাকা- টাঙ্গাইল মহাসড়কে চলন্তবাসে একটি ডাকাতি সংঘটিত হয়। এই ঘটনায় টাঙ্গাইল জেলার মির্জাপুর থানায় একটি ডাকাতিসহ শ্লীতাহানির মামলা দায়ের করা হয়।

পুলিশ বলছে, মামলার তদন্তে ডিবি ও পুলিশ সমন্বয়ে ডিবির একটি টিমসহ মির্জাপুর থানা পুলিশের একাধিক অভিযানিক দল তদন্তে নামে। গোয়েন্দা তথ্য ও তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় ঢাকা জেলার সাভার মডেল থানাধীন গেন্ডা এলাকা থেকে শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) বিকাল পাঁচটা ৩০ মিনিটের দিকে তিন জনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।

"গ্রেফতাকৃত ডাকাতরা আন্তঃজেলা ডাকাত দলের সক্রিয় সদস্য" বলেও পুলিশ দাবি করেছে।

লুট করা তিনটি মোবাইল ফোন সেট, একটি ছুরি, নগদ ২৯ হাজার ৩৭০ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে বলেও ওই প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে পুলিশ জানিয়েছে।

ঢাকা-রাজশাহী রুটে মধ্যরাতে ডাকাতির শিকার হওয়া বাসটি প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা ধরে ডাকাতদের দখলে ছিল বলে বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছেন বাসটির একাধিক যাত্রী।

গত সোমবার (১৭ই ফেব্রুয়ারি) রাতে যেসব যাত্রী বাসটিতে ছিলেন, তাদের মধ্যে দুইজনের সাথে কথা বলেছে বিবিসি বাংলা। তারা অভিযোগ করছেন, বাসটিতে অন্তত একজনকে ধর্ষণ করা হয়েছে সেই রাতে।

যদিও পুলিশ বলছে, তারা ধর্ষণের অভিযোগ পায়নি।

এই ঘটনায় যাত্রীদের অভিযোগের ভিত্তিতে নাটোরের বড়াইগ্রাম থানা পুলিশ ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪ ধারায় বাসের চালক, চালকের সহকারী ও সুপারভাইজারকে আটক করে আদালতে সোপর্দ করে। তবে পরদিনই সেখান থেকে তারা জামিনে মুক্তি পেয়ে যান।

ঘটনা কোন জেলার সীমানায় ঘটেছে, এই প্রশ্নে মামলা নিয়ে ঠেলাঠেলি চলে সংশ্লিষ্ট জেলাগুলোর পুলিশের মধ্যে।

যেদিন ঘটনা ঘটেছে, তার পরদিন সকালে যাত্রীরা অভিযোগ করলেও মামলা নেয়নি নাটোরের বড়াইগ্রাম থানা পুলিশ। সীমানা জটিলতার কথা বলে তারা ঠেলে দিয়েছিল বাসটির চলার রুটে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর থানার দিকে।

আবার মির্জাপুর থানা থেকে বিবিসিকেও বলা হয়েছিল যে, এই ঘটনা মির্জাপুর থানার সীমান্তে ঘটেনি।

অবশেষে তিন দিন পর শুক্রবার মির্জাপুর থানায় মামলা দায়ের করা হয়। সেখানে বাসের যাত্রী ওমর আলী বাদী হয়ে আট থেকে নয়জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলা দায়ের করেন।

এদিকে দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে বড়াইগ্রাম থানার ওসি সিরাজুল ইসলামকে শুক্রবার রাতে প্রত্যাহার করে জেলা পুলিশ দফতরে সংযুক্ত করা হয়েছে।

শনিবার দুপুরে টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান জানান, বাসে ডাকাতি ও নারী যাত্রীদের শ্লীলতাহানির ঘটনায় দায়িত্ব অবহেলার কারণে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর থানার ডিউটি অফিসার (এএসআই) আতিকুজ্জামানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। শুক্রবার রাতে তাকে টাঙ্গাইল পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয়।