
মালয়েশিয়ায় কর্মীদের জন্য সুরক্ষা প্রকল্প ‘নন-এমপ্লয়মেন্ট অ্যাক্সিডেন্ট স্কিম’ (এসকেবিবিকে) না থাকায় ২০২৩ সাল থেকে অক্টোবর ২০২৫ পর্যন্ত মোট ১২ হাজার ৩০৬টি বীমা দাবি প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) পার্লামেন্ট এক ভাষণে এ তথ্য জানিয়েছেন দেশটির মানবসম্পদমন্ত্রী স্টিভেন সিম।
মানবসম্পদমন্ত্রী বলেন, কর্মঘন্টার বাইরে দুর্ঘটনার শিকার কর্মীদের বীমা দাবি প্রত্যাখ্যানের সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে যা গভীর উদ্বেগের বিষয়। এই প্রত্যাখ্যানের ফলে হাজার হাজার পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাদেরকে চিকিৎসা ও পুনর্বাসন ব্যয় নিজেদেরকেই বহন করতে হয়েছে।
কর্ম-সংস্কৃতির পরিবর্তন এবং কর্মশক্তি বৃদ্ধির কারণে এই প্রবণতা আরও বাড়বে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেন মন্ত্রী। তিনি জানান, বর্তমানে কর্মজীবীদের মাত্র ৪২ শতাংশের ব্যক্তিগত দুর্ঘটনা বীমা রয়েছে। তার সরকার এই সংখ্যা আরও বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলেও জানান তিনি।
মন্ত্রী বলেন, সরকার দেশের সামাজিক সুরক্ষার এই ফাঁক পূরণের লক্ষ্যে এমপ্লয়মেন্ট সোশ্যাল সিকিউরিটি (সংশোধন) বিল ২০২৫-এর মাধ্যমে এসকেবিবিকে প্রকল্প প্রবর্তনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই নতুন স্কিম সপ্তাহের সাতদিনই কর্মীদের সুরক্ষা দেবে যা কাজের যাত্রা বা সরাসরি কাজের সাথে সম্পর্কিত নয় এমন দুর্ঘটনার ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হবে।
মন্ত্রী নিশ্চিত করেন, নতুন আইন অনুযায়ী দেশের সকল কর্মী, যার মধ্যে বিদেশি কর্মীরাও অন্তর্ভুক্ত, তাদের জন্য এসকেবিবিকে প্রকল্প বাধ্যতামূলক করা হবে। এটা বিশেষ করে নিম্ন আয়ের গোষ্ঠীর জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় যাদের প্রচলিত বীমার খরচ বহনের সামর্থ্য সীমিত।
মন্ত্রী তার বক্তব্যে মোহাম্মদ ফিরদাউস নামে ২৫ বছর বয়সি এক কর্মীর একটি ঘটনা উল্লেখ করে বলেন, মোহাম্মদ ফিরদাউস এক ছুটিরদিনে দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হন। দুর্ঘটনাটি কাজের সময়ের বাইরে ঘটায় তিনি বিদ্যমান আইন অনুসারে এমপ্ললয়মেন্ট ইনজুরি স্কিমের অধীনে সোশাল সিকিউরিটি অর্গানাইজেশন (পেরকেসো) সুবিধা পাননি। তার পরিবারকে চিকিৎসার জন্য লক্ষাধিক টাকা খরচ করতে হয়।
মন্ত্রী জানান, এসকেবিবিকে প্রকল্প চালু থাকলে মাসে ১৭০০ রিঙ্গিত বেতন পাওয়া ফিরদাউসকে মাসে মাত্র ১২.৩৫ রিঙ্গিত কিস্তি দিতে হতো। এর বিনিময়ে তিনি চিকিৎসা ও পুনর্বাসন সুবিধা পেতেন যার মধ্যে ১৮০ দিনের জন্য মোট ৪ হাজার ৭৫২ রিঙ্গিত চিকিৎসা ছুটি সুবিধা, মূল্যায়ন সাপেক্ষে ৩০ হাজার ৪০০.৯২ রিঙ্গিত সুবিধা এবং আজীবন মাসিক ৭১২.৮০ রিঙ্গিত সুবিধা অন্তর্ভুক্ত থাকতো।
এই সামান্য মাসিক কিস্তি তার পরিবারের ওপর চাপানো হাজার হাজার রিঙ্গিতের বোঝার চেয়ে অনেক কম বলেও মন্তব্য করেন মন্ত্রী।