মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তথ্যপ্রযুক্তি ও সফটওয়্যার কোম্পানিগুলোর মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য জোরদার করতে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস) আমেরিকা ডেস্ক চালু করা হয়েছে। এর মাধ্যমে এ খাতে বিনিয়োগ বৃদ্ধি এবং ব্যবসায়িক সহযোগিতা জোরদার হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
রোববার (১৪ জুলাই) রাজধানীর একটি হোটেলে বেসিস আমেরিকা ডেস্কের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান।
বাংলাদেশী সফটওয়্যার এবং তথ্যপ্রযুক্তি পণ্য এবং পরিষেবাগুলোর জন্য সবচেয়ে বড় রফতানি গন্তব্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। ২ বিলিয়ন ডলার রফতানি আয়ের প্রায় ২৭ শতাংশ আসে ওই দেশ থেকে। এ জন্য আমেরিকার কোম্পানি এবং বিনিয়োগকারীদের কাছে সবশেষ প্রযুক্তিগত অগ্রগতি প্রদর্শন, সেমিনার ও বিটুবি-এর মাধ্যমে তথ্য বিনিময়, প্রশিক্ষণ প্রোগ্রাম এবং কর্মশালার আয়োজন করতে একটি কার্যকরী প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করবে বেসিস আমেরিকা ডেস্ক।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের বক্তব্যে সফটওয়্যার খাত ছাড়াও গোটা তথ্যপ্রযুক্তি খাতের মান উন্নয়নের পরামর্শ দিয়ে সালমান এফ রহমান বলেন, ‘বিশ্বের অন্যান্য দেশের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতে হলে আমাদের এ খাতের উদ্ভাবনীর দিকে আরও নজর দেয়ার প্রয়োজন রয়েছে। এ জন্য সরকার আইসিটি খাতের উন্নয়নে প্রণোদনাসহ করছাড়ের বিশেষ সুযোগ-সুবিধা দিয়ে যাচ্ছে।’
এছাড়া অনুষ্ঠানে এক ভিডিও বার্তায় ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, ‘বেসিস আমেরিকা ডেস্কের যাত্রা বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতকে শক্তিশালী করতে এবং বৈশ্বিক বাজারে বাংলাদেশকে তথ্যপ্রযুক্তির কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত করতে একটি উল্লেখযোগ্য মাইলফলক। এই প্ল্যাটফর্মটি ব্যবহার করে, বাংলাদেশ এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র উভয় দেশের তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান- তাদের তথ্যপ্রযুক্তি সেক্টরে একটি পারস্পরিক ব্যবসায়িক শক্তিশালী সম্পর্ক তৈরি করতে সক্ষম হবে।’
এসময় বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাস উভয় দেশের জন্য এই বেসিস আমেরিকা ডেস্কের পারস্পরিক সুবিধাগুলো তুলে ধরে, এই উদ্যোগের প্রশংসা করেন।
অনুষ্ঠানে বেসিসের সভাপতি রাসেল টি আহমেদ এই প্ল্যাটফর্মের কৌশলগত দৃষ্টিভঙ্গি এবং বেসিসের ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা সম্পর্কে আলোচনা করেন। তিনি বলেন, এ খাতে ৫ বিলিয়ন ডলার রফতানি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। ২০৩০ সালের মধ্যে আমেরিকা থেকেই রফতানি আয় ৫ বিলিয়ন ডলার করা সম্ভব।
অনুষ্ঠানে বেসিসের সহসভাপতি (প্রশাসন) সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল বলেন, বেসিস আমেরিকা ডেস্কের মূল উদ্দেশ্য হলো বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে নতুন সুযোগ সৃষ্টি করা এবং প্রযুক্তি ও জ্ঞান বিনিময়ের মাধ্যমে দক্ষতা উন্নয়ন কর্মসূচি বৃদ্ধি করা। পাশাপাশি, একটি স্মার্ট অর্থনীতি গড়ার মাধ্যমে বাংলাদেশকে গ্লোবাল আইটি হাব হিসেবে বিশ্বের দরবারে প্রতিষ্ঠিত করা।
তাছাড়া বেসিস আমেরিকা ডেস্ক সম্পর্কে দেশের তথ্য প্রযুক্তি ও সফটওয়্যার খাতের শীর্ষ সংগঠনটি আরও জানায়, এই উদ্যোগের মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং যুক্তরাষ্ট্রের তথ্যপ্রযুক্তি এবং সফটওয়্যার কোম্পানিগুলো একটি ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ তৈরি করতে সক্ষম হবে।
বাংলাদেশে নিযুক্ত বিভিন্ন দূতাবাসের কর্মকর্তা, বেসিসের সাবেক সভাপতিরা, বেসিস কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্য, বেসিস সদস্য, বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন এই অনুষ্ঠানে। সময় সংবাদ।