News update
  • ‘With Science, We Can Feed the World of 9.7 Billion by 2050′     |     
  • WHO warns of severe disruptions to health services for funding cuts     |     
  • ICJ hears Sudan’s case accusing UAE of ‘complicity in genocide’     |     
  • Bombardment, deprivation and displacement continue in Gaza     |     
  • Aged and Alone: The hidden pains in old age homes     |     

কিভাবে বুঝবেন ছবিটি এআই দিয়ে বানানো কিনা

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি 2024-08-26, 1:47pm

trytryrty-4d44e7ebd52a558b13fa6458966956f31724658439.jpg




একজন দক্ষ চিত্রশিল্পী তার তুলির ছোঁয়ায় পটে আঁকা ছবিতে ফুটিয়ে তোলেন বাস্তব অভিব্যক্তি। তবে অত্যন্ত দক্ষ শিল্পীর আঁকা ছবিতেও তার রঙের উপাদানগুলোর উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায় ক্যানভাস জুড়ে। আর এটিই ব্যবধান গড়ে দেয় অঙ্কিত কোনও ছবির সঙ্গে বাস্তবতার। ফটোগ্রাফির ক্ষেত্রেও ক্যামেরার মানের উপর ভিত্তি করে ধরা পড়ে কিছু সুক্ষ্মে পার্থক্য। কিন্তু এই সীমানাকে চমকপ্রদভাবে অতিক্রম করেছে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। মানুষের তৈরি সফটওয়্যার এমনভাবে স্থিরচিত্র তৈরি করছে যা দেখে বোঝার উপায় নেই, যে এটি আসলে একটি কৃত্রিম ছবি। তবে খুব সূক্ষ্মভাবে পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে এই এআইকেও তোলা যাবে সমালোচনার কাঠগড়ায়। চলুন, এআইয়ের তৈরি ছবি শনাক্ত করার কয়েকটি কৌশল জেনে নেওয়া যাক।

এআই দিয়ে বানানো ছবি চেনায় উপায়

ডিটেইলিং-এর সুক্ষ্ম বিশ্লেষণ

একটি ছবি তৈরিতে তার ডিটেইলিংয়ে যত বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়, তার গুণগত মান তত বেশি হয়। সফটওয়্যার কেন্দ্রিক গ্রাফিক সামগ্রী সূক্ষ্ম হলেও সেগুলো কিন্তু অসঙ্গতিমুক্ত নয়। বরং অতিমাত্রায় ডিটেইলিংয়ের উপাদানগুলোর সংযোজনের কারণে ত্রুটিগুলো উন্মুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। যেমন, ছবির বিষয়বস্তুর প্রান্তিক অংশ বা ধারগুলোর দিকে তাকালে দেখা যাবে টেক্সচারগুলো অত্যধিক মসৃণ।

তাছাড়া মূল অংশের মাঝে এমন অদ্ভুত কিছু শৈলী ফুটে উঠে যা কখনোই বাস্তব ফটোগ্রাফির অন্তর্ভুক্ত নয়। বিশেষ করে চুল, লোম ও পাপড়িতে এই অতিরঞ্জিত বিষয়গুলো সাধারণত বেশি থাকে।

মেটাডেটা পরীক্ষা

সত্যিকারের ছবিতে ক্যামেরা মডেল, লেন্সের ধরন, এক্সপোজার সেটিংস এবং জিপিএস স্থানাঙ্কসহ বিস্তারিত মেটাডেটা থাকে। অপরদিকে এআই ব্যবহার করে ডিজাইনকৃত চিত্রে অধিকাংশ ক্ষেত্রে এই তথ্যাবলি অনুপস্থিত থাকে।

এখানে মেটাডেটা হিসেবে থাকে ছবিটি এডিট করা সফটওয়্যার, প্ল্যাটফর্ম বা ডিজাইন প্রক্রিয়ায় ব্যবহৃত নির্দিষ্ট সরঞ্জামের তথ্য। সুস্পষ্টভাবে সফটওয়্যার বা প্ল্যাটফর্মটির নামও উল্লেখ থাকতে পারে। এছাড়া বিভিন্ন ওয়েবসাইটে আপলোডের তথ্যসহ কোন ওয়েব ঠিকানায় ছবিটি সর্বপ্রথম ডিজাইন করা হয়েছিল তার বিস্তারিত লিপিবদ্ধ থাকতে পারে। এই ভিন্নতাগুলো ক্যামেরায় তোলা ছবির সঙ্গে কৃত্রিম ছবির পার্থক্য গড়ে দেয়।

এআই-এর অঙ্কন শৈলীর আঙ্গিকে পর্যবেক্ষণ

কম্পিউটার-প্রোগ্রামিংয়ের মাধ্যমে সৃষ্ট শিল্পকর্মগুলো প্রায় ক্ষেত্রে পরাবাস্তব উপাদান এবং আকর্ষণীয় রঙের কারসাজি থাকে। এটি এআইয়ের নিজস্ব অঙ্কন শৈলী, যা স্বাভাবিকভাবেই ফটোগ্রাফি থেকে আলাদা।

এআই মূলত স্বতন্ত্রভাবে ছবির নানা ধরনের সূচকের মাত্রা নির্ধারণ করে। এই নির্ধারণীর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় কতগুলো নির্দেশনার আঙ্গিকে। ফলে সংখ্যাগত মানগুলো একদম সুনির্দিষ্ট হলেও সামগ্রিকভাবে ছবিটিতে বাস্তবতার সঙ্গে কোনো সামঞ্জস্যতা থাকে না। যেমন কোথাও দেখা যেতে পারে নিতান্ত মসৃণ ধারায় ঝর্ণা পড়ছে অথবা দিনের আলোয় অস্বাভাবিক গাঢ় ছায়া। আর এই জন্যেই একরকম পরাবাস্তব দৃশ্যের অবতারণা ঘটে।

রিভার্স ইমেজ সার্চ

গুগল সার্চ ইঞ্জিনে সরাসরি নির্দিষ্ট ছবি বা ছবির অংশ কেটে তা দিয়ে সার্চ করা যায়। এতে করে ব্যবহারকারীরা ছবির সম্ভাব্য উৎস বা ওয়েব ঠিকানাগুলো খুঁজে পান। সেই সঙ্গে ছবিটি সম্পর্কিত অন্যান্য ডিজিটাল শিল্পকর্মগুলোও সামনে চলে আসে। এর মাধ্যমে ছবিটি কোনও এআই ডাটাবেসের সঙ্গে লিঙ্ক করা আছে কিনা তা জানা যায়।

এছাড়াও এই অনুসন্ধানের ফলে ছবিটি অনলাইনে কতগুলো জায়গায় কতটা পরিবর্তন করে ব্যবহার করা হয়েছে তাও নজরে আসে। আর এই মূল্যায়নের মধ্য দিয়েই নিশ্চিত হওয়া যায় ছবিটির কৃত্রিমতার ব্যাপারে।

ছবির বিষয়বস্তুর অবস্থান ও আনুষঙ্গিক পরিবেশ পর্যবেক্ষণ

এই বিষয়টির জন্য সুক্ষ্ম দৃষ্টির দরকার নেই। ওয়েবসাইটে কন্টেন্টের প্রকৃতির ওপর ভিত্তি করে অনেক সময় এমন ছবি তৈরি করা হয়, আপাতদৃষ্টে যার কোনো যৌক্তিকতা থাকে না। অথচ আশ্চর্যজনকভাবে এগুলো দেখতে একদম বাস্তব মনে হয়। পূর্বে এগুলো ফটোশপের মাধ্যমে যথেষ্ট দক্ষতার সঙ্গে একাধিক ছবি জুড়ে দিয়ে তৈরি করা হতো। এআই আসার পর এই সন্নিবেশ প্রক্রিয়া এতটাই উন্নত হয়েছে যে তা বাস্তব জগতের অনুভূতি দেয়।

তাছাড়া অভিনব হওয়ার কারণে প্রথম দর্শনেই ছবিগুলো দর্শককে দারুণভাবে চমকে দেয়। তবে যতই প্রাণবন্ত হোক না কেন, মূল বিষয়বস্তুর পারিপার্শ্বিক পরিবেশের অবাস্তবতাই এই ছবিগুলোর কৃত্রিমতার আসল মাপকাঠি।

শেষাংশ

সব মিলিয়ে এআই দিয়ে বানানো ছবি চেনার এই পদ্ধতিগুলোর জন্য প্রয়োজন তীক্ষ্ম দৃষ্টি এবং সফটওয়্যার নির্মিত কন্টেন্ট সম্পর্কে ন্যূনতম ধারণা। সূক্ষ্ম অসঙ্গতি বিশ্লেষণ এবং মেটাডেটা নিরীক্ষণে উন্মোচিত হয় চিত্রাঙ্কনের নেপথ্যে থাকা সফটওয়্যার বা প্ল্যাটফর্মের নামটি। ছবি আঁকার ক্ষেত্রে এআইয়ের বিশেষত্ব বোঝা এবং সরাসরি ছবি দিয়ে গুগল সার্চের মাধ্যমে এর প্রথম ওয়েব ঠিকানা খুঁজে পাওয়া যায়। ছবির বিষয়বস্তুর ত্রিমাত্রিক অবস্থান এবং আলো-ছায়ার অসামঞ্জস্যতায় উল্লেখযোগ্য তারতম্য ধরা পড়ে ক্যামেরায় তোলা ছবির সঙ্গে। সর্বসাকূল্যে, এই সূচকগুলো ছবির মৌলিকতা যাচাইয়ের জন্য যথেষ্ট কার্যকর।