কারিগরি ত্রুটির কারণে বন্ধ হওয়ার প্রায় ১৭ ঘণ্টা পর ভারতের ঝাড়খন্ড রাজ্যের গোড্ডায় নির্মিত আদানি গ্রুপের কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের একটি ইউনিট থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হয়েছে।
শনিবার (১২ এপ্রিল) রাতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ সরবরাহের রাষ্ট্রীয় সঞ্চালন সংস্থা পাওয়ার গ্রিড বাংলাদেশ (পিজিসিবি) ও বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) তিনজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা।
আদানির এই বিদ্যুৎকেন্দ্রটিতে ৮০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার দুটি ইউনিট আছে। কারিগরি ত্রুটির কারণে প্রথম ইউনিট থেকে উৎপাদন বন্ধ হয় ৮ এপ্রিল আর শুক্রবার দিবাগত রাত একটার দিকে দ্বিতীয় ইউনিট বন্ধ হয়।
এর আগে বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ সরবরাহের দায়িত্বপ্রাপ্ত রাষ্ট্রীয় সঞ্চালন সংস্থা পাওয়ার গ্রিড পিএলসি বাংলাদেশ (পিজিসিবি) ও বিদ্যুৎ উন্নয়নের বোর্ড (পিডিবি) একটি সূত্র জানিয়েছিল, আদানির বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে সরবরাহ শুরু না হলে রোববার থেকে লোডশেডিং আরও বাড়তে পারে।
সূত্রের ভাষ্যমতে, আদানি গ্রুপের কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে থেকে সর্বোচ্চ ১ হাজার ৪০০ মেগাওয়াট পর্যন্ত বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছিল। ৮ এপ্রিলের পরও ৭৫০ মেগাওয়াটের বেশি সরবরাহ করা হয়েছে।
বিদ্যুৎ সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, আদানির বিদ্যুৎকেন্দ্রে ব্যবহৃত কয়লার দাম নিয়ে বিরোধের জেরে ও বকেয়া শোধ নিয়ে গত বছর একবার বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করেছিল আদানি। এরপর নিয়মিত চলতি বিল পরিশোধ করায় তারা একটি ইউনিটের উৎপাদন চালু করে। গত ফেব্রুয়ারিতে পুরো বিদ্যুৎ সরবরাহের অনুরোধ করে পিডিবি। গত মার্চের শুরু থেকেই দুটি ইউনিটের বিদ্যুৎ সরবরাহ করে।
পিজিসিবি ও পিডিবি সূত্র জানায়, শনিবার ছুটির দিনে বিদ্যুতের চাহিদা অন্য দিনের চেয়ে কিছুটা কম থাকায় বেলা একটা পর্যন্ত সর্বোচ্চ চাহিদা উঠেছে ১৩ হাজার ৫০০ মেগাওয়াট। এ সময় ৩০০ মেগাওয়াট লোডশেডিং করা হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পিডিবির সদস্য (উৎপাদন) মো. জহুরুল ইসলাম বলেন, দেশে ঘাটতি মেটাতে তেলচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বাড়তি উৎপাদন করা হচ্ছে। গ্যাসের সরবরাহ বাড়াতে অনুরোধ করা হয়েছে। জ্বালানির সরবরাহ পাওয়া গেলে চাহিদামতো উৎপাদন করা যাবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালে আদানির সঙ্গে বিদ্যুৎ কেনার চুক্তি করে পিডিবি। ভারতের ঝাড়খন্ড রাজ্যের গোড্ডায় আদানির কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রটি ১ হাজার ৬০০ মেগাওয়াট সক্ষমতার দুটি ইউনিট আছে। এতে উৎপাদিত বিদ্যুৎ ২৫ বছর ধরে কিনবে বাংলাদেশ। প্রথম ইউনিট থেকে বাণিজ্যিকভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হয় ২০২৩ সালের এপ্রিলে। দ্বিতীয় ইউনিট থেকে বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু হয় ওই বছরের জুনে। তবে, আদানির সঙ্গে পিডিবির চুক্তি পর্যালোচনায় কাজ করছে অন্তর্বর্তী সরকারের গঠিত একটি কমিটি। আরটিভি