News update
  • UNGA urges renewed int’l efforts for a resolution of Rohingya crisis      |     
  • First National AI Readiness Assessment Report Published     |     
  • China calls for implementation roadmap for new finance goal     |     
  • New gas reserve found in old well at Sylhet Kailashtila field     |     
  • Revenue earnings shortfall widens in October     |     

দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে পানিবন্দি লাখো মানুষ

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক বিপর্যয় 2024-10-07, 10:54pm

wrewrwer-f178af734e36e1b4e90e5ea34d9eecfe1728320051.jpg




অতিবৃষ্টি আর পাহাড়ি ঢলে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের কয়েকটি জেলার জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন কয়েক লাখ মানুষ। আশ্বিনের এই ভারি বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে পরিস্থিতির আরও অবনতির শঙ্কা রয়েছে।

বন্যা পূর্বাভাস কেন্দ্র বলছে, জেলাগুলোর মধ্যে শেরপুরের পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। ৪ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া বন্যায় ওই জেলায় এ পর্যন্ত সাতজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। ওই জেলার সবগুলো উপজেলার মানুষই বলতে গেলে পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।

শেরপুরের জেলা প্রশাসক তরফদার মাহমুদুর রহমান সাতজনের মৃত্যুর কথা স্বীকার করেছেন। তবে তিনি বলেন, এর মধ্যে একজন বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে মারা গেছেন এবং একটি লাশ ভারত থেকে ভেসে আসছে বলে ধারণা করছি। বাকি পাঁচজনের মৃত্যু বন্যার কারণেই হয়েছে।

তিনি জানান, জেলার পাঁচটি উপজেলার কয়েকটিতে পানি কিছুটা কমে এলেও আবার অন্য উপজেলায় পানি বাড়ছে। এর মধ্যে সদর, নকলা ও নালিতাবাড়ি উপজেলা অন্যতম। সেনাবাহিনী ও জেলা প্রশাসন উদ্ধার কাজ চালাচ্ছে। বন্যাদুর্গতদের উদ্ধার করে নেওয়া হচ্ছে আশ্রয়কেন্দ্রে। দুর্গতদের শুকনা ও রান্না করা খাবার দেওয়া হচ্ছে বলে জানান জেলা প্রশাসক। জেলার দেড় লাখের বেশি মানুষ পানিবন্দি।

তাদের মধ্যে কমপক্ষে ৫০ হাজার মানুষ ঘরবাড়ি ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন বলে জানান, শেরপুরের নালিতাবাড়ির বাসিন্দা দেবাশীষ রায়। তিনি বলেন, জেলার সব উপজেলায়ই কম বেশি পানি উঠেছে। শুকনো জায়গা বলতে নাই। এই এলাকায় এরকম বন্যা আমরা আগে কখনও দেখিনি।

ময়মনসিংহের দুইটি উপজেলা বন্যা কবলিত। সেখানে কমপক্ষে দেড় লাখ মানুষ পানিবন্দি রয়েছে। দুইটি উপজেলায় ১০ মেট্রিক টন করে চাল ও এক লাখ টাকা করে বরাদ্দের কথা জানিয়েছে জেলা প্রশাসন।

বন্যা কবলিত ধোবাউড়া উপজেলার বাসিন্দা আতাউর রহমান বলেন, এই এলাকায় আমরা এরকম বন্যা আগে আমরা দেখিনি। ফলে আশ্রয়কেন্দ্র বলতেও আলাদা কিছু নেই। দুর্গতরা উঁচু এলাকা এবং ভবনে আশ্রয় নিয়েছেন। ত্রাণ তৎপরতা আশানুরূপ নয়। এছাড়া নেত্রকোনা ও জামালপুরে অনেক উপজেলা বন্যায় প্লাবিত হয়েছে।

বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র বলছে শেরপুর, ময়মনসিংহ ও জামালপুর জেলায় বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত থাকতে পারে অন্তত আরো আরো দুদিন। তবে আরো নতুন এলাকায় বন্যার পানিতে প্লাবিত হতে পারে।

তারা বলছে, আগামী তিনদিন ময়মনসিংহ বিভাগ ও তৎসংলগ্ন উজানে অতিভারী বৃষ্টির (২৪ ঘণ্টায় ৮৮ মিলিমিটার) প্রবণতা কম রয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে আগামী ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত ভুগাই নদীর পানিপ্রবাহ ধীর গতিতে হ্রাস পেতে পারে এবং শেরপুর ও ময়মনসিংহ জেলার নদী সংলগ্ন নিম্নাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

অন্যদিকে, জামালপুর জেলার জিঞ্জিরাম নদী সংলগ্ন নিম্নাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা অবনতি হতে পারে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় নেত্রকোনার কংস নদ ও সোমেশ্বরী নদীর পানির বিপদসীমা অতিক্রম করে সংশ্লিষ্ট কতিপয় নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে পারে। ময়মনসিংহ বিভাগের কংস, জিঞ্জিরাম, সোমেশ্বরী ও পুরাতন ব্রহ্মপুত্রসহ নদ-নদীগুলোর পানি বাড়ছে।

তবে ভুগাই নদীর পানি স্থিতিশীল রয়েছে। বর্তমানে শেরপুর জেলার ভুগাই নদী, নাকুয়াগাঁও এবং জামালপুর জেলার জিঞ্জিরাম নদী গোয়ালকান্দা পয়েন্টে বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী সরদার উদয় রায়হান বলেন, গত ৪ অক্টোবর মধ্যরাত থেকে শেরপুর সীমান্ত, ও ভারতের মেঘালয় রাজ্যে অতি বর্ষণের কারণে এই হঠাৎ বন্যা হচ্ছে। বৃষ্টি কমে এলে বন্যার পানিও নামতে থাকবে। তখন অবশ্য সংলগ্ন ভাটি এলাকা প্লাবিত হবে। এরইমধ্যে তা শুরু হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, সাধারণত এই সময়ে অর্থাৎ অক্টোবরে ওই এলাকায় বৃষ্টি হয়। তবে এবার তার পরিমাণ অনেক বেশি। নদ নদীর পানি বাড়ার হারও এবার অনেক বেশি। আগে এরকম দেখা যায়নি। ফলে এবার বন্যা হচ্ছে। ওইসব অঞ্চলে সাধারণত এই সময়ে বন্যা হয় না।

আবহাওয়া দপ্তরের আবহাওয়াবিদ মো. হাফিজুর রহমান বলেন, এই সময়ে বৃষ্টিপাত স্বাভাবিক। তবে এবার দেশের উত্তর পূর্বাঞ্চলে অনেক বেশি বৃষ্টি হয়েছে। ফলে কয়েকটি জেলায় ফ্ল্যাশ ফ্লাড দেখা দিয়েছে। তবে বৃষ্টি কমে আসছে। ফলে বন্যাও কমে আসবে।

পানি বিশেষজ্ঞ ও নদী গবেষণা ইনস্টিটিউটের সাবেক মহাপরিচালক প্রকৌশলী ম ইনামুল হক বলেন, এবার গাড়ো পাহাড়ে যে প্রচুর বৃষ্টি হয়েছে সেই পানিতেই হঠাৎ বন্যা দেখা দিয়েছে। আর শেরপুর এলাকায় অনেক নিম্ন ভূমি আছে, সেখানে প্রথমে পানি জমে তা প্লাবিত হয়েছে। শেরপুর ও ময়মনসিংহের উজানে যে নদীগুলো আছে তাও প্লাবিত হয়েছে।

আরটিভি