News update
  • UNRWA Commissioner-Gen. on Gaza: 800 starving people killed     |     
  • 150,000 Rohingya flee to BD amid renewed Myanmar violence     |     
  • Scrap trader hacked, stoned dead: 2 Jubo Dal men expelled      |     
  • Bonn Climate Talks Expose Urgent Gaps in Global Action     |     
  • Earth's rotation speeding up, making days slightly shorter     |     

ট্রাম্পের শুল্ক, বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার পোশাক ব্যবসায়ীদের ওপর বড় ধাক্কা

নিউইয়র্ক টাইমস

ব্যবসায় 2025-04-04, 12:26pm

img_20250404_122623-1448ba35f064c658f9b303ad1a03ec2f1743748013.jpg




কোভিড, রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলা ও অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যেও শ্রীলঙ্কা ও বাংলাদেশ একটি শিল্পকে কেন্দ্র করে নিজেদের সমৃদ্ধির প্রত্যাশা জিইয়ে রেখেছিল। শিল্পটি তৈরি পোশাক, যার প্রধান বাজার যুক্তরাষ্ট্র। উল্লিখিত ঝড়ঝাপটার পরে এখন এল মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন শুল্কের ঘোষণা।

ট্রাম্প শ্রীলঙ্কার ওপর ৪৪ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছেন। আর বাংলাদেশের ওপর আরোপ করেছেন ৩৭ শতাংশ শুল্ক। এত বেশি নতুন শুল্কের ধাক্কায় দেশ দুটির ব্যবসায়ী নেতাদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। দুই দেশের কর্মকর্তারা তা প্রশমিত করতে চেষ্টা করছেন। উভয় দেশের ব্যবসায়ী নেতাদের শঙ্কা, তারা হয়তো আর বড় উৎপাদনকারী শক্তিগুলোর সঙ্গে প্রতিযোগিতায় পেরে উঠবেন না। তাদের ক্রয়াদেশ কম শুল্কযুক্ত ও বড় শিল্প শক্তিসম্পন্ন দেশগুলোতে স্থানান্তরিত হয়ে যাবে।

বাংলাদেশ প্রতিবছর যুক্তরাষ্ট্রে ৭০০ কোটি ডলারের বেশি মূল্যের তৈরি পোশাক রপ্তানি করে। দেশটির মোট রপ্তানি আয়ের প্রায় ৮০ শতাংশ আসে তৈরি পোশাক খাত থেকে। এই খাতে কাজ করেন ৪০ লাখের বেশি মানুষ, যাদের অধিকাংশই নারী। এ অঞ্চলে যেসব দেশে সবচেয়ে বেশিসংখ্যক নারী কর্মী রয়েছেন, সেগুলোর একটি বাংলাদেশ। এত বেশিসংখ্যক নারীর কর্মক্ষেত্রে অংশগ্রহণ দেশটির জনসংখ্যার একটি বড় অংশকে দারিদ্র্য থেকে বের করে আনতে সাহায্য করেছে।

গত বছর বড় ধরনের বিক্ষোভ ও সহিংসতার মুখে বাংলাদেশের স্বৈরশাসকের পতন হয়। এর পর থেকে দেশটি অর্থনীতিকে স্থিতিশীল করতে চেষ্টা করছে। এ ক্ষেত্রে দেশটির জন্য তৈরি পোশাকশিল্প খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সাবেক পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল বলেন, ‘সবে বিশ্ব অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছিল এবং আমরা যুক্তরাষ্ট্রে আমাদের বিক্রি বাড়তে দেখছিলাম, এমন সময় এ ধরনের সিদ্ধান্ত, বাণিজ্যযুদ্ধ বা শুল্কযুদ্ধ এখন নতুন চ্যালেঞ্জ ও অনিশ্চয়তা তৈরি করেছে।’

এই ব্যবসায়ী নেতা আরও বলেন, বাংলাদেশে এমন অনেক তৈরি পোশাক কারখানা রয়েছে, যারা শুধু যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে পণ্য সরবরাহের জন্য কাজ করে। কিছু কারখানা (নিজেদের তৈরি পণ্যের) ৮০ শতাংশ, আবার কিছু কারখানা ১০০ ভাগ পণ্য যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি করে। এসব কারখানা শুধু যুক্তরাষ্ট্রের ক্রয়াদেশ পাওয়ার জন্য বিপুল অর্থ বিনিয়োগ করেছে। এই (শুল্কারোপের) সিদ্ধান্ত এসব ব্যবসাকে বিপদে ফেলবে।’

শ্রীলঙ্কায় তৈরি পোশাকশিল্প খাতে কাজ করেন সাড়ে তিন লাখের বেশি মানুষ। তারা নাইকি ও ভিক্টোরিয়া’স সিক্রেটের মতো বিশ্ববিখ্যাত ব্র্যান্ডের জন্য পোশাক তৈরি করেন। দেশটির মোট রপ্তানি আয়ের প্রায় অর্ধেক আসে তৈরি পোশাক খাত থেকে। তাদের পোশাকের বড় অংশ রপ্তানি হয় করা হয় যুক্তরাষ্ট্রে।

২০২২ সালে দেশটির অর্থনীতি ধসে পড়েছিল। এরপর আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) প্রণোদনার মাধ্যমে ধীরে ধীরে দেশটির অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়ায়।

শ্রীলঙ্কার জয়েন্ট অ্যাপারেল অ্যাসোসিয়েশন ফোরামের পরামর্শক তুলি কুরে বলেন, ‘আমাদের শোকবার্তা লিখতে হবে। ৪৪ শতাংশ কিন্তু চাট্টিখানি কথা নয়।’

ট্রাম্প প্রশাসনের শুল্কের ধাক্কা বিশ্বের পোশাকশিল্পের প্রাণকেন্দ্র হিসেবে পরিচিত দেশগুলোর জন্য অনেক বড়। ইক্যুইটি ফার্ম উইলিয়াম ব্লেয়ারের বিশ্লেষণে দেখা যায়, যেসব দেশ যুক্তরাষ্ট্রে আমদানিকৃত তৈরি পোশাকের প্রায় ৮৫ শতাংশ উৎপাদন করে, সেসব দেশের ওপর গড়ে ৩২ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। ঝোল

বিশ্লেষকেরা সতর্ক করেছেন, পোশাক প্রস্তুতকারী দেশগুলোকে নিশানা করার মধ্য দিয়ে শুধু ওই সব দেশের অর্থনীতিকে ক্ষতিগ্রস্ত করা হবে না, এতে যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানিগুলোর ওপরও চাপ তৈরি হবে। উইলিয়াম ব্লেয়ারের মতে, পণ্যের খরচ প্রায় ৩০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়াতে পারে এবং শেষ পর্যন্ত এতে যুক্তরাষ্ট্রের ভোক্তাদেরই জন্যই সমস্যা হতে পারে।

শ্রীলঙ্কার অর্থনৈতিক উন্নয়নবিষয়ক উপমন্ত্রী অনিল জয়ন্ত ফার্নান্দো বলেন, ‘আগামী ৯ এপ্রিল [শুল্ক] বাস্তবায়ন শুরু হওয়ার আগে আলোচনার মাধ্যমে কমানোর সুযোগ আছে কি না, সেটা দেখার চেষ্টা করছি আমরা। বিশেষ করে আমরা যে কঠিন পরিস্থিতিতে আছি, তা বিবেচনা করে এমনটি করা হচ্ছে।’