News update
  • Prof Yunus includes 4 political leaders in UNGA tour del     |     
  • Tarique calls for vigilance to prevent troubles during Puja     |     
  • Parties divided on constitution order move over July Charter     |     
  • Khulna’s ‘white gold’ shrimp eyes Tk 22,600cr export goal     |     
  • Show-cause notices on Sylhet DC, 4 others over mobile court     |     

২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকার বাজেট প্রস্তাব পেশ

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক ব্যাঙ্কিং 2022-06-09, 9:11pm




বৈশ্বিক মহামারি করোনা (কোভিড-১৯) পরবর্তী অর্থনৈতিক অভিঘাত সফলভাবে মোকাবলা করে চলমান উন্নয়ন বজায় রাখা ও উচ্চতর প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্য সামনে রেখে ২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকার জাতীয় বাজেট প্রস্তাব আজ সংসদে পেশ করা হয়েছে। 

অর্থমন্ত্রী আ. হ. ম মুস্তফা কামাল আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে ‘কোভিডের অভিঘাত পেরিয়ে উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় পরিবর্তন’ শ্লোগান সম্বলিত এ বাজেট পেশ করেন। এর মধ্যে  পরিচালনসহ অন্যান্য খাতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৪ লাখ ৩১ হাজার ৯৯ কোটি টাকা। বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে বরাদ্দ প্রস্তাব করা হয়েছে ২ লাখ ৪৬ হাজার ৬৬ কোটি টাকা।

তিনি পাওয়ার পয়েন্টে প্রস্তাবিত বাজেটের গুরুত্বপূর্ণ দিক, সরকারের পদক্ষেপ এবং বিভিন্ন খাতে বরাদ্দ প্রস্তাব তুলে ধরেন। 

প্রস্তাবিত বাজেটে মোট রাজস্ব আয় ধরা হয়েছে ৪ লাখ ৩৩ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড সূত্রে আয় ধরা হয়েছে ৩ লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকা এবং অন্যন্য সূত্র থেকে কর রাজস্ব ধরা হয়েছে ৬৩ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে এনবিআর বহির্ভূত ১৮ হাজার কোটি টাকা, কর ব্যতিত প্রাপ্তি ৪৫ হাজার কোটি টাকা।  

সামগ্রিক বাজেট ঘাটতি ২ লাখ  ৪৫ হাজার ৬৪ কোটি টাকা দেখানো হয়েছে, যা জিডিপির ৫.৫ শতাংশ, চলতি বছরের বাজেটে ঘাটতি ছিল জিডিপির  ৬.২ শতাংশ। 

এ ঘাটতি অর্থায়নে বৈদেশিক ঋণ থেকে ১ লাখ ১২  হাজার ৪৫৮ কোটি টাকা, অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে ১ লাখ ৪৬ হাজার ৩৩৫ কোটি টাকা আহরণ করার প্রস্তাব করা হয়। বৈদেশিক ঋণের মধ্যে ঋণ পরিশোধ খাতে ১৭ হাজার কোটি রাখা হয়েছে। অভ্যন্তরীণ উৎসের মধ্যে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে ১ লাখ  ৬ হাজার ৩৩৪ কোটি টাকা এবং সঞ্চয়পত্র ৩৫ হাজার কোটি টাকা,  ব্যাংক বহির্ভূত উৎস থেকে ৪০ হাজার ১ কোটি টাকা, এবং অন্যান্য খাত থেকে ৫ হাজার কোটি টাকা সংস্থানের প্রস্তাব করা হয়েছে । 

প্রস্তাবিত বাজেটে মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ৭.৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া মূল্যস্ফীতি ৫.৬  শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। 

এর আগে আজ দুপুরে সংসদ ভবনের মন্ত্রিসভা কক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিপরিষদের সভায় প্রস্তাবিত বাজেট অনুমোদন করা হয়। এরপরই রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদ প্রস্তাবিত বাজেটে অনুস্বাক্ষর করেন। 

এছাড়াও, অর্থমন্ত্রী আজ ২০২১-২২ অর্থবছরের জন্য ৫ লাখ ৯৩ হাজার ৫শ’ কোটি টাকার সংশোধিত বাজেট পেশ করেন। চলতি অর্থবছরের মূল বাজেট ছিল  ৬ লাখ ৩ হাজার  ৬৮১  কোটি টাকা। 


২০১৮ সালের  ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার গঠনের পর এটি হচ্ছে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকারের এ মেয়াদের চতুর্থ বাজেট। অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালেরও চতুর্থ বাজেট। আর বাংলাদেশের ৫১তম বাজেট।  বৈশ্বিক মহামারি করোনা পরিস্থিতির কারণে গত দু’টি বাজেটের পর এবার অর্থমন্ত্রী পূর্ণাঙ্গ আকারে বাজেট পেশ করেন। বাজেট পেশের সময় এবার সরকার ও বিরোধী দলের সব সংসদ সদস্য অধিবেশনে যোগ দেন। 


অর্থমন্ত্রী বিকেল ৩টায় দিকে বাজেট বক্তৃতার শুরুতে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশের স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, ১৯৭৫ এর ১৫ আগস্টের অন্যান্য শহীদ, চার জাতীয় নেতা, মহান ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধে শহীদ, অকুতোভয় বীর মুক্তিযোদ্ধা, সম্ভ্রম হারানো  ২ লাখ মা বোন এবং অন্যান্য শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এছাড়া তিনি বৈশ্বিক মহামারি কোভিড- ১৯ আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারানো সকলের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন। 

রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ সংসদে প্রেসিডেন্ট বক্সে বসে বাজেট বক্তৃতা শোনেন এবং অধিবেশন কার্যক্রম প্রত্যক্ষ করেন। 

বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী বলেন, বিগত ১৩ অর্থ বছর ধরে দেশে উন্নয়নের ধারাবাহিকতার সৃষ্টি হয়েছিল। কিন্তু ২০২০ সালে  কোভিড-১৯ মহামারির আঘাতে দেশে স্বাস্থ্য ঝুঁকি ও অর্থননৈতিক অগ্রযাত্রাকে যেভাবে বাধাগ্রস্ত করছে তা থেকে দেশ ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ  হাসিনার সুদৃঢ় ও বলিষ্ঠ নেতৃত্বে জীবন ও জীবিকায় প্রাধান্য দিয়ে সরকার দেশের উন্নয়ন অব্যাহত রাখতে সক্ষম হয়েছে।

অর্থমন্ত্রী বাজেট বক্তৃতায় করোনা মহামারির ফলে আর্থিক ক্ষতি মোকাবেলায় সরকারের পক্ষ থেকে নেয়া বিভিন্ন কার্যকর পদক্ষেপের কথা বিস্তারিতভাবে তুলে ধরেন। পাশাপাশি করোনা পরবর্তী পরিস্থিতি এবং রাশিয়া ইউক্রেন বর্তমান যুদ্ধাবস্থায় বৈশ্বিকভাবে বিভিন্ন খাতে যে অভিঘাত শুরু হয়েছে তা মোকাবেলায় বিভিন্ন পদক্ষেপ এবং কৌশল বিস্তারিতভাবে তুলে ধরেন।  

প্রস্তাবিত বাজেটে সামাজিক অবকাঠামো খাতে বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে ১ লাখ ৮৩ হাজার ৪২৫ কোটি টাকা, যা মোট বরাদ্দের ২৭.০৫ শতাংশ; এর মধ্যে মানবসম্পদ খাতে (শিক্ষা, স্বাস্থ্য এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য খাত) বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে ১ লাখ ৬৭ হাজার ৫২৪ কোটি টাকা। ভৌত অবকাঠামো খাতে প্রস্তাব করা হয়েছে ২ লাখ ৮৬০ কোটি টাকা বা ২৯.৬২ শতাংশ; যার মধ্যে সার্বিক কৃষি ও পল্লী উন্নয়ন খাতে ৮৬ হাজার ৭৯৮ কোটি; যোগাযোগ অবকাঠামো খাতে ৭৯ হাজার ২৬ কোটি এবং বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে ২৬ হাজার ৬৫ কোটি টাকা। সাধারণ সেবা খাতে প্রস্তাব করা হয়েছে ১ লাখ ৫৩ হাজার ২০৮ কোটি টাকা, যা মোট বরাদ্দের ২২.৫৯ শতাংশ। সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্ব (পিপিপি), বিভিন্ন শিল্পে আর্থিক সহায়তা, ভর্তুকি, রাষ্ট্রায়ত্ত, বাণিজ্যিক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগের জন্য ব্যয় বাবদ বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে ৫৩ হাজার ১৫৫ কোটি টাকা, যা মোট বরাদ্দের ৭.৮৪ শতাংশ; সুদ পরিশোধ বাবদ প্রস্তাব করা হয়েছে ৮০ হাজার ৩৭৫ কোটি টাকা, যা মোট বরাদ্দের ১১.৮৫ শতাংশ; নিট ঋণদান  ও অন্যান্য ব্যয় খাতে প্রস্তাব করা হয়েছে ৭ হাজার ৪১ কোটি টাকা, যা মোট বরাদ্দের ১.০৪ শতাংশ। 

প্রস্তাবিত বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তা, যোগাযোগ অবকাঠামো, ভৌত অবকাঠামো, আবাসন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বিজ্ঞান-প্রযুক্তি, কৃষি, মানবসম্পদ উন্নয়ন খাতকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে। তথ্য সূত্র বাসস।