News update
  • Another July warrier shot in head, critical in Khulna hospital     |     
  • NCP Khulna Chief Critically Shot Amid Rising Political Violence     |     
  • Indian MP Warns Bangladesh Faces Rising Lawlessness     |     
  • Law and Order Must Be Ensured Ahead of Polls: Prof Yunus     |     
  • Tough times ahead, everyone must remain united: Tarique Rahman     |     

বাংলাদেশের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়িয়েছে : বিশ্বব্যাংক

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক ব্যাঙ্কিং 2025-10-08, 11:53am

rtewrwerwer-74e066639d3ef0a77fe0e1a36e7b01b91759902838.jpg




২০২৫ অর্থবছরের প্রথমার্ধের ধাক্কা কাটিয়ে বছরের শেষার্ধে দৃঢ়ভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশের অর্থনীতি। রপ্তানি প্রবৃদ্ধি, রেকর্ড রেমিট্যান্স প্রবাহ এবং বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বৃদ্ধির ফলে অর্থনীতিতে ইতিবাচক গতি এসেছে।

গতকাল মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) বিশ্বব্যাংক প্রকাশিত এক নতুন প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

বিশ্বব্যাংকের দ্বিবার্ষিক প্রকাশনা বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট আপডেট–এর সর্বশেষ সংস্করণে বলা হয়েছে, আগামী বছরগুলোতে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধির ধারা ঊর্ধ্বমুখী থাকবে। প্রতিবেদনে জিডিপি প্রবৃদ্ধি গত অর্থবছরের ৪.০ শতাংশ থেকে বেড়ে চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরে ৪.৮ শতাংশ এবং ২০২৬-২৭ অর্থবছরে ৬.৩ শতাংশে পৌঁছাবে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।

‘বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট আপডেট’বিশ্বব্যাংকের ‘সাউথ এশিয়া ডেভেলপমেন্ট আপডেট’-এর অংশ। প্রতিবছর দুবার এই প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এটি দক্ষিণ এশিয়ার অর্থনৈতিক পরিস্থিতি, সম্ভাবনা এবং দেশগুলোর নীতিগত চ্যালেঞ্জ বিশ্লেষণ করে।

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বাজারভিত্তিক বিনিময় হার নীতির কারণে বৈদেশিক চাপ কমেছে, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ স্থিতিশীল হয়েছে এবং চলতি হিসাব ঘাটতি কমেছে। এছাড়া, রপ্তানিও উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে।

কঠোর মুদ্রানীতি, প্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্যের কম আমদানি কর এবং ভালো ফলনের কারণে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে এসেছে। তবে কম রাজস্ব আদায়, বেশি ভর্তুকি এবং ঋণ পরিশোধের পরিমাণ বৃদ্ধির কারণে বাজেট ঘাটতি সম্প্রসারিত হয়েছে। তবে পুনরুদ্ধারের ইঙ্গিত সত্ত্বেও দারিদ্র্য ও কর্মসংস্থান পরিস্থিতিতে উদ্বেগজনক প্রবণতা তুলে ধরেছে প্রতিবেদনটি।

এতে বলা হয়েছে, ২০২৩ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে দারিদ্র্য বেড়েছে। মোট শ্রমশক্তির অংশগ্রহণ কমে ৬০ দশমিক ৯ শতাংশ থেকে ৫৮ দশমিক ৯ শতাংশে নেমেছে, যেখানে নারীরা বেশি প্রভাবিত হয়েছেন। শ্রমবাজারের বাইরে থাকা ৩০ লাখ অতিরিক্ত কর্মক্ষম মানুষের মধ্যে ২৪ লাখ নারী।

বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ ও ভুটানের বিভাগীয় পরিচালক জ্যঁ পেম বলেন, ‘অর্থনীতি দৃঢ়তা দেখিয়েছে, কিন্তু এটিকে স্বাভাবিক ধরে নেওয়া যায় না। শক্তিশালী প্রবৃদ্ধির ধারা বজায় রাখতে এবং আরও ভালো ও বেশি কর্মসংস্থান নিশ্চিত করতে বাংলাদেশকে সাহসী সংস্কার ও দ্রুত বাস্তবায়নের পথে এগোতে হবে। এর মধ্যে রয়েছে অভ্যন্তরীণ রাজস্ব আয় বাড়ানো, ব্যাংক খাতের দুর্বলতা দূর করা, জ্বালানি ভর্তুকি কমানো, নগরায়ণের পরিকল্পনা করা এবং বিনিয়োগ পরিবেশ উন্নত করা।’

গত দুই দশকে শিল্পখাতের চাকরি ঢাকায় ও চট্টগ্রামে কেন্দ্রীভূত হয়েছে জানিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এটি আঞ্চলিকভাবে সমান উন্নয়নের প্রয়োজনীয়তার দিকটি তুলে ধরে। এতে দেশব্যাপী সার্বজনীন চাকরি সৃষ্টি নিশ্চিত করতে স্থানীয় উন্নয়ন কৌশল পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানানো হয়েছে।

একই দিনে সাউথ এশিয়া ডেভেলপমেন্ট আপডেট প্রতিবেদনের সহ-প্রকাশনা হিসেবে ‘চাকরি, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও বাণিজ্য’শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।

এতে বলা হয়েছে, চলতি অর্থবছরে দক্ষিণ এশিয়ায় প্রবৃদ্ধি ৬ দশমিক ৬ শতাংশে শক্তিশালী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে সম্ভাব্য চ্যালেঞ্জও রয়েছে।

বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়ার ভাইস প্রেসিডেন্ট জোহানেস জুট বলেন, ‘দক্ষিণ এশিয়ায় ব্যাপক অর্থনৈতিক সম্ভাবনা রয়েছে। তবে প্রবৃদ্ধির ঝুঁকিগুলো মোকাবিলায় দেশগুলোকে সক্রিয়ভাবে এগিয়ে আসতে হবে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সুবিধা সর্বাধিকভাবে কাজে লাগানো এবং বিশেষ করে মধ্যবর্তী পণ্যের জন্য বাণিজ্য বাধা কমানোর মাধ্যমে দেশগুলো উৎপাদনশীলতা বাড়াতে পারবে। পাশাপাশি ব্যক্তিগত বিনিয়োগ উৎসাহিত করতে এবং অঞ্চলের ক্রমবর্ধমান শ্রমশক্তির জন্য নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে পারবে।’

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, দক্ষিণ এশিয়ার অর্থনীতি এখনও বিদেশি বাণিজ্য ও বিনিয়োগের জন্য খুব বেশি উন্মুক্ত নয়। অনেক খাতে উচ্চ শুল্ক থাকায় সেগুলোতে চাকরি কমছে। অন্যদিকে, কম শুল্কযুক্ত খাত, যেমন: সেবা খাত, গত দশকে নতুন চাকরির বড় অংশ তৈরি করেছে।

এছাড়া, উৎপাদনশীলতা ও আয় বৃদ্ধি করতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) রূপান্তরমূলক সম্ভাবনার দিকেও গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে দক্ষিণ এশিয়ার শ্রমশক্তির বড় অংশ নিম্নদক্ষ, কৃষিভিত্তিক ও শ্রমনির্ভর খাতে নিয়োজিত; তবে এআই মানবশ্রমের পরিপূরক হিসেবে নতুন খাতে কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করতে পারে।

বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক প্রধান অর্থনীতিবিদ ফ্রানজিস্কা ওন্সর্গ বলেন, ‘বাণিজ্য উন্মুক্ততা ও এআই গ্রহণের গতি বাড়ানো দক্ষিণ এশিয়ার জন্য রূপান্তরমূলক হতে পারে। কর্মীদের প্রতিষ্ঠান, খাত ও অঞ্চলভিত্তিক স্থানান্তর সহজ করতে সহায়ক নীতিমালা গ্রহণ করা জরুরি—যা উৎপাদনশীল খাতে সম্পদ প্রবাহ বাড়াবে এবং বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থানকে ত্বরান্বিত করবে।’