News update
  • UNRWA Report on the Humanitarian Crisis in Gaza & West Bank     |     
  • Rail link with Khulna cut off as train derails in Chuadanga     |     
  • 3 killed, 10 injured in Pabna Bus-truck collision     |     
  • UN Chief Appalled as Gaza Crisis Deepens, Aid Blocked     |     
  • Dhaka’s air quality ‘moderate’ also on Friday morning     |     

যখন এডলফ হিটলারকে গ্রেফতার করেছিলেন জন এফ কেনেডি

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক মিডিয়া 2024-03-20, 8:34pm

gyyryrt-e04466a5793597fb4c8dcec868a9bf061710945282.jpg




নাৎসি জার্মানির নেতা এডলফ হিটলার মারা গেছেন ১৯৪৫ সালে, কিন্তু তিনি কী করে ২০০৮ সালে ভারতে গ্রেফতার হলেন? ভারতের নির্বাচন কমিশন তাদের এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যাণ্ডেলে এরকম একটা পোস্ট করায় অনেকেই এখন খোঁজ করছেন কে এই এডলফ হিটলার?

আবার তাকে গ্রেফতার করেছিলেন যিনি, তার নামই বা কী করে জন এফ কেনেডি?

বুধবার সকালে সেই এডলফ হিটলারকে ফোন করেছিলাম।

তার গ্রেফতার হওয়ার খবরটা যে ইতিহাসের পাতা থেকে আবারও তুলে এনে এক্স-এ পোস্ট করেছে নির্বাচন কমিশন, সেটা শুনে রীতিমতো অট্টহাসিতে ফেটে পড়লেন তিনি।

হাসতে হাসতেই জিজ্ঞাসা করলেন, “এত পুরনো ঘটনা ওরা আবার সামনে এনেছে?”

এবারে বলেই দিই আপনাদের, যে এডলফ হিটলারের সঙ্গে মোবাইলে কথা হল, তার পুরো নাম এডলফ লু হিটলার আর মারাক।

তিনি ভারতের উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য মেঘালয়ের একজন রাজনীতিবিদ। 

আর যুক্তরাষ্ট্রের নিহত প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডির নামে যার নাম, তিনি একটা সময়ে ছিলেন ওই রাজ্যের ওয়েস্ট গারো হিলস জেলার পুলিশ সুপার।

তিনিই গ্রেফতার করেছিলেন এডলফ হিটলারকে।

'হিটলার' একটা সময়ে শরদ পাওয়ারের নেতৃত্বাধীন এনসিপি দলে ছিলেন, তারপরে এখন তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন। আগে যোগ দিয়েছিলেন বিজেপিতেও।

এখন অবশ্য খুব একটা সক্রিয় রাজনীতি করেন না মেঘালয়ে দুবার মন্ত্রী হওয়া মি. মারাক।

হিটলারকে কেন গ্রেফতার করলেন কেনেডি?

সেটা ছিল ২০০৮ সালের মেঘালয় বিধানসভা নির্বাচন। গারো হিলসের রাঙসাকোনা কেন্দ্র থেকে এনসিপির হয়ে ভোটে দাঁড়িয়েছিলেন মি. মারাক।

তিনি বলছিলেন, “আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল যে আমি না কি নির্বাচনের আদর্শ আচরণ বিধি ভঙ্গ করেছি।"

"আমারই একটা গাড়ি পুলিশ বাজেয়াপ্ত করে নিয়ে গিয়েছিল আর আমি নাকি থানায় ঢুকে জবরদস্তি করে সেই গাড়ির চাবিটা হাতিয়ে নিয়েছিলাম।"

“এটা কী করে সম্ভব? থানায় এত পুলিশ থাকতে আমি একা সেখানে গিয়ে জবরদস্তি করে গাড়ির চাবি নিয়ে নেব? যাই হোক ২৪ ঘণ্টা হাজতে থাকতে হয়েছিল। পরে জামিন পাই। আর আদালতে মামলা ওঠার পরে তো বেকসুর খালাস পেয়ে গিয়েছিলাম”, জানাচ্ছিলেন এডলফ হিটলার মারাক।

বাবা-মায়ের দেওয়া নাম

ধৃত ব্যক্তি আর তাকে যিনি গ্রেফতার করেছিলেন, এই দুজনের নামের জন্য ওই সংবাদ সেই সময়ে জাতীয় দৈনিকগুলোর শিরোনামে উঠে এসেছিল।

মি. মারাককে জিজ্ঞাসা করেছিলাম তার নামটা এরকম কেন?

হাসতে হাসতেই বললেন, “আমি তো আর নিজের নাম দিইনি। বাবা মায়ের দেওয়া নাম। কী করে পাল্টাই? হয়তো তাদের পছন্দ হয়েছিল হিটলার নামটা, তাই রেখে দিয়েছেন!”

মি. মারাককে গ্রেপ্তার করা পুলিশ সুপার জন এফ কেনেডির সঙ্গে যোগাযোগ করা যায় নি।

তবে মেঘালয়ে এরকম অদ্ভুত নাম আরও পাওয়া যায়।

পরিবেশ কর্মী ও লেখক এইচ এইচ মোরহেম মেঘালয়ের মজার আর অদ্ভুত সব নাম নিয়ে উত্তরপূর্বের সংবাদ পোর্টাল 'এনই নাও'-তে একটি লেখা লিখেছিলেন।

নিজের নাম নিয়েই একটু মজা করেছিলেন তিনি। তার নামের দুটি এইচের মধ্যে দ্বিতীয়টি হল ‘হেল্প মি’।

আবার ওই লেখাতেই তিনি একটি ঘটনার কথা উল্লেখ করেছিলেন, যেখানে একটি বিয়ে বাড়ির প্যান্ডেলের সামনে পাত্র পাত্রীর অদ্ভুত নাম লেখা হয়েছিল : ‘স্পেশাল ওয়েডস স্পিড’, অর্থাৎ স্পেশাল আর স্পিডের শুভ বিবাহ।

মি. মোরহেম আরও লিখেছেন যে স্থানীয়দের মধ্যে ‘নেপোলিয়ন’, ‘চার্চিল’, ‘লিঙ্কন’ নাম দেওয়ার রীতি যেমন আছে, তেমনই ‘লেট মি’, ‘ফর মি’ এবং ‘কিস মি’-র মতো নামও পাওয়া যায়।

আবার ইন্ডিয়া টুডে ২০১৮ সালে প্রকাশিত তাদের একটি পুরো লেখায় একজন ভোটারের নাম উল্লেখ করেছিল।

ভোটার তালিকার ছবি দিয়ে তারা লিখেছিল, সে বছরের রাজ্য বিধানসভা নির্বাচনে নারতিয়াঙ কেন্দ্রের মুরাব সরকারি নিম্ন প্রাথমিক বিদ্যালয় বুথে একজন ভোটারের নাম ‘আই লাভ ইউ তালাং’।

সেই লেখাতেই দেখা যাচ্ছে মেঘালয়ের শেল্লা বিধানসভা কেন্দ্রের ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত ঘেঁষা উমনিয়া মার গ্রামের ভোট কেন্দ্রে আর্জেন্টিনা, ইন্দোনেশিয়া, সুইডেন, ইটালি নামের ভোটাররা ভোট দিয়েছেন।

এবছরের যে সর্বশেষ ভোটার তালিকা প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন, সেখানেও খুঁজে পাওয়া গেল এরকমই কিছু নাম।

যেমন রঙজেন বিধানসভা এলাকার একটি বুথে রয়েছেন ‘এনার্জি’ মোমিন আর ‘গান্ধী’ মোমিন নামের দুই ভোটার।

আবার রোংগাড়া সিজু বিধানসভা কেন্দ্রের কয়েকজন ভোটারের নাম দেখা গেল ‘মিডনাইটস্টোন’, ‘মাইলস্টোন’, ‘চ্যাংরা’, ‘ব্রিলিয়ান্ট’।

এদের সকলেরই পদবী আবার মারাক।

মেঘালয়ে ২০১৮ সালের নির্বাচনে প্রার্থী তালিকায় পাওয়া গিয়েছিল বেশ মজার কিছু নাম। যেমন দুজন প্রার্থীর নাম ছিল নেহরু। তবে তারা কংগ্রেস দলে হয়ে লড়েননি।

ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী কংগ্রেস ছাড়া অন্য কোনও দলের হয়ে ভোটে দাঁড়িয়েছেন, এই ব্যাপারটাই অনেকের কাছে মজার লেগেছিল।

আবার উত্তরপূর্বাঞ্চলের রাজনৈতিক দল ন্যাশনাল পিপলস পার্টির হয়ে প্রার্থী হয়েছিলেন ‘ইয়ান বথাম’ এবং ‘ফ্র্যাঙ্কেনস্টাইন’ ডাব্লিউ মোমিন।

শিলংয়ের স্থানীয় টেলিভিশন চ্যানেলের সাংবাদিক জো থাঙ্কিয়্যু এর আগে বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন, "এরকম অনেক মজার মজার নাম রয়েছে খাসি উপজাতীয়দের মধ্যে।"

"আমারই দুজন সহকর্মী রয়েছেন, একজনের নাম 'সেকশন' - যে অফিসে এলেই আমরা বলি 'সেকশন ১৪৪' এল।"

"আরেকজনের নাম সিঙ্গল স্টার। সে কোথাও গিয়ে যখন নিজের পরিচয় দেয় 'হাই আই অ্যাম সিঙ্গল' বলে, বিশেষত তিনি যদি নারী হন, তাহলে ওকে জবাবে শুনতে হয়েছে, 'শোনো বাপু, তুমি সিঙ্গল না ম্যারেড সেটা জেনে আমি কী করব!"

"তো নির্বাচনেও এধরনের মজার মজার নাম নিয়ে প্রার্থীরা থাকবেন, এটাই স্বাভাবিক।"

"একজন বেশ জনপ্রিয় প্রার্থী আছেন, তাঁর নাম হিমালয়। তাঁর পেছনে অনেকেই মজা করে বলে 'দেখো সেই কত দূর হিমালয় থেকে চলে এসেছে মেঘালয়ে। সামনাসামনি হয়তো কেউ মজা করে না রাজনৈতিক দলের প্রার্থীদের নিয়ে, কিন্তু পেছনে সকলেই হাসি মস্করা করে", বলছিলেন জো। বিবিসি বাংলা