News update
  • Shooting attack on mosque kills 6 in Afghanistan     |     
  • Heatstroke kills 10 people in 7 days : DGHS     |     
  • 9 soldiers killed in military helicopter crash in Colombia     |     
  • At least 25 dead in Peru after bus plunges into ravine     |     
  • Dhaka’s air quality 5th worst in the world Tuesday morning     |     

পদ্মা সেতুকে রাজনৈতিক অর্জন হিসাবে দেখাতে চাচ্ছে আ'লীগ

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক রাজনীতি 2022-06-25, 9:23am

img_20220625_092235-f1a201211c3fb6e07b9fda871c891ceb1656127388.png




 বাংলাদেশে বহু প্রতিক্ষিত পদ্মা সেতুর উদ্বোধন হতে যাচ্ছে আজ (শনিবার)। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই সেতু উদ্বোধন করার কথা রয়েছে।

তিনি সেতুর এক প্রান্তে সুধী সমাবেশের পর এর উদ্বোধন করবেন এবং অপরপ্রান্তে তার দল আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় বক্তব্য রাখবেন।

এই সেতুর দুই প্রান্তে স্থলে, জল এবং সেতুর ওপরে আকাশ পথে সেনাবাহিনী, পুলিশ র‍্যাবসহ বিভিন্ন বাহিনী মিলে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা বলয় তৈরি করেছে।

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ এই পদ্মা সেতু নির্মাণকে তাদের রাজনৈতিক সাফল্য হিসাবে তুলে ধরছে।

কিন্তু দলটি তাতে রাজনৈতিকভাবে কতটা লাভবান হবে-এমন প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে।

বিশ্বব্যাংক যখন পদ্মা সেতুর অর্থায়ন থেকে সরে গিয়েছিল, তখন এর নির্মাণ নিয়ে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হয়েছিল।

সেই পরিস্থিতিতে আওয়ামী লীগ সরকার দেশের অভ্যন্তরীন রাজনীতিতে সমালোচনার মুখে যেমন পড়েছিল, একইসাথে এই সেতু নির্মাণের প্রশ্নে চ্যালেঞ্জ তৈরি হয়েছিল।

তবে দাতাদের অর্থায়ন ছাড়াই পদ্মা সেতু নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়ে সরকার তা বাস্তবায়ন করেছে।

সে কারণেই দেশের সবচেয়ে বড় এবং ব্যয়বহুল স্থাপনা পদ্মা সেতু রাজিনৈতিক দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে বলে বিশ্লেষকরা মনে করেন।
'রাজনৈতিক অর্জন'
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ এই সেতু নির্মাণকে তাদের রাজনৈতিক সাফল্য হিসাবে তুলে ধরছে।

দলটির নীতিনির্ধারণী ফোরাম প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেছেন, তাদের দলের সরকার রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নিয়েই অর্থায়নের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে সেতু নির্মাণ করেছে।

এই সেতু নির্মাণে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়ন থেকে সরে যাওয়ার পেছনে দেশের ভেতরে এবং বাইরে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ করে আসছিল আওয়ামী লীগ।

জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, "দেশি-বিদেশি চক্রান্তের মুখে পদ্মা সেতু নির্মাণ করা একটা চ্যালেঞ্জ ছিল। "সেই চ্যালেঞ্জে জয়লাভ করেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আমরা একটি বিশাল চ্যালেঞ্জের মোকাবেলা করেছি।"

তিনি বলেন, পদ্মা সেতু দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের একটা প্রতীক বলে তারা বিশ্বাস করেন।

আওয়ামী লীগ নেতারা মনে করেন পদ্মা সেতু আওয়ামী লীগেএবং শেখ হাসিনার সরকারের বিশাল এক রাজনৈতিক সাফল্য ।

শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ টানা ১৩ বছর ধরে ক্ষমতায় রয়েছে। এই সময়ে বেশ কিছু মেগা প্রকল্প বা বড় বড় প্রকল্প নেয়া হয়। নির্বাচনের আগের বছর সেগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড় প্রকল্প পদ্মা সেতু চালু করা হচ্ছে।
'সরকার এবং দল একীভূত হওয়ায় রাজনৈতিকভাবে সাফল্য দেখা হচ্ছে'
লেখক এবং রাজনৈতিক বিশ্লেষক মহিউদ্দিন আহমদ বলেছেন, লম্বা সময় ধরে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকার কারণে দল এবং সরকার একীভূত হয়ে গেছে।

সেকারণে সরকারের কর্মকাণ্ডকে দলীয় অর্জন হিসাবে তুলে ধরার চেষ্টা দেখা যাচ্ছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

মি: আহমদ মনে করেন, "আওয়ামী লীগ নিস্ক্রিয় একটা দলে পরিণত হয়েছে। এখন সরকারের সমর্থনেই দলটি চলছে। অর্থাৎ সরকার এবং দলের পার্থক্য ভুলে দলটি সরকারে একীভূত হয়ে গেছে।

"সেজন্য আওয়ামী লীগকে আলাদাভাবে তুলে ধরার জন্য পদ্মা সেতুর সাফল্যকে দলীয় অর্জন হিসাবে দেখানোর চেষ্টা করা হচ্ছে," বলেন তিনি।
"সেজন্য আওয়ামী লীগকে আলাদাভাবে তুলে ধরার জন্য পদ্মা সেতুর সাফল্যকে দলীয় অর্জন হিসাবে দেখানোর চেষ্টা করা হচ্ছে," বলেন তিনি।

একইসাথে মহিউদ্দিন আহমদ বলেছেন, "আওয়ামী লীগ সরকার যদি পদ্মা সেতু নির্মাণের কাজ ঠিকমত করতে না পারতো, তাহলে কিন্তু এটা নিয়ে বিরোধী রাজনীতি অনেক সরগরম হতো।"

গণতন্ত্র, মানবাধিকার ইস্যু
নাগরিক অধিকার আন্দোলনকারী খুশী কবির বিষয়টা দেখেন ভিন্নভাবে।

তিনি মনে করেন, আওয়ামী লীগ সরকারের রাজনৈতিক সদিচ্ছার কারণেই পদ্মা সেতু নির্মাণ করা সম্ভব হয়েছে। সেই কৃতিত্ব রাজনৈতিকভাবেও দলটি নিতে পারে।

কিন্তু গণতন্ত্র, মানবাধিকার সহ মানুষের অধিকারের বিভিন্ন ইস্যুতে যেসব প্রশ্ন রয়েছে তাতে এসব উন্নয়নের বিষয় আওয়ামী লীগকে রাজনৈতিকভাবে কতটা ফল দেবে-সেই সন্দেহ তার রয়েছে।

"উন্নয়ন যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি মানুষের নিরাপত্তা এবং গণতন্ত্রের বিষয়েও গুরুত্ব দেয়া প্রয়োজন" বলেন খুশী কবির।

পদ্মা সেতু নির্মাণে বিশ্বব্যাংক অর্থায়ন থেকে যেভাবে সরে গিয়েছিল, তার সাথে বিরোধীদল বিএনপি এবং বিভিন্ন ব্যক্তির যোগসূত্র থাকার অভিযোগ করে আসছিল সরকার এবং আওয়ামী লীগ, যদিও তারা এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

তবে এখন পদ্মা সেতু নির্মাণের পর এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সরকারের পক্ষ থেকে বিএনপি সহ বিরোধীদলগুলোকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।

বিএনপি ইতিমধ্যেই সেই অনুষ্ঠানে না যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। অন্য বিরোধী দলগুলোও উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অংশ নেবে না - এমন ধারণা পাওয়া গেছে।

নূর কেন অংশীদার হতে চান না

ডাকসু'র সাবেক ভিপি নুরুল হক নূরের নেতৃত্বাধীন নতুন দল বাংলাদেশ গণ অধিকার পরিষদও পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণ পেয়েছে।

নুরুল হক নূর বলেছেন, পদ্মা সেতু জনগণের অর্থে নির্মাণ করা হয়েছে এবং এটি দেশের সম্পদ বলে তারা মনে করেন।

সেজন্য তারা এই বড় প্রকল্পের কাজ শেষ করায় তারা ভিন্নমতের হলেও সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।

কিন্তু এরপরও তিনি উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণ পেলেও তাতে অংশ নিচ্ছেন না।

এই অবস্থানের ব্যাপারে নুরুল হক নূরের বক্তব্য হচ্ছে - "সরকার দেশের ভেতরে এবং বিদেশে গণতন্ত্র ও মানবাধিকার নিয়ে নানামুখী চাপে রয়েছে।সেই প্রেক্ষাপটে পদ্মা সেতুকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক ফায়দা নিতে শোডাউন বা আওয়ামী লীগের প্রচারণায় অংশীদার হওয়া যায় না।"

তবে আওয়মী লীগের নেতারা বলেছেন, পদ্মা সেতু যে তাদের দল এবং সরকারের একটা সাফল্য, সেটা মানুষ আস্থায় নিচ্ছে বলে তারা বিশ্বাস করেন। তথ্য সূত্র বিবিসি বাংলা।