News update
  • France to Break Away from UK & US in Recognising Palestine as Nation State     |     
  • Storm Alert Issued for Dhaka and Eight Other Regions     |     
  • 58 killed in deadliest US strike on Yemen     |     
  • BNP Opposes Reforms to Constitution’s Core Principles      |     
  • Time to Repair Bangladesh–Pakistan Ties     |     

১৬ বছরের সকল হত্যাকান্ডের বিচার, প্রতিবিপ্লবের চক্রান্ত রুখে দাড়াতে হবে

বিশাল বিক্ষোভ সমাবেশে মুফতী সৈয়দ ফয়জুল করীম

রাজনীতি 2024-08-15, 1:46am

mufti-foyzul-karim-leading-a-protest-procession-in-dhaka-on-wednesday-14-august-2024-6bc0d58e6d33974e6246e63f3ca9b2831723664775.jpg

Mufti Foyzul Karim leading a protest procession in Dhaka on Wednesday 14 August 2024.



ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর সিনিয়র নায়েবে আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম শায়খে চরমোনাই বলেছেন, গণহত্যাকারী হাসিনার পুত্র জয় দেশের সংবিধান রক্ষার জন্য এবং তিনমাসের মধ্যে নির্বাচনের দেওযার জন্য ভারতের প্রতি আহ্বান জানিয়ে দেশদ্রোহী কাজ করেছে। এজন্য শেখ হাসিনা ও জয়ের বিচার হতে হবে। তিনি বলেন, ভারতের কাছে দেশ ও আওয়ামী লীগের সংবিধান রক্ষার দাবি করে তারা দেশকে ভারতের অঙ্গরাজ্যের পরিচয় দিয়েছে। ভারত বাংলাদেশের সংবিধান এবং নির্বাচন দেয়ার এখতিয়ার রাখে না। তিনি বলেন, শেখ হাসিনা বিগত ১৬ বছরে দেশের সম্পদ লুটপাট করেছে, দেশের সম্পদ বিদেশে পাচার করেছে। অনেক মানুষ হত্যা করেছে। বিশেষ করে জুলাই-আগষ্ট মাসে ছাত্র-জনতাকে হত্যা করে মানবতা লঙ্ঘন করেছে। এ জন্য খুনি হাসিনা ও তার দলের সকল খুনিদেরক বিচার করতে হবে। মুফতী ফয়জুল করীম বলেন, ৫ আগস্ট ফেরাউনের কবল থেকে দেশবাসী মুক্তি পেয়েছে। বৈষম্য বিরোধী ছাত্রদের আন্দোলন ছিল সকল বৈষম্যের বিরুদ্ধে। এখন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নিজেরাই যেন বৈষম্য সৃষ্টি না করে, এটা আমাদের দাবি, ছাত্র-জনতার দাবি। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ বৈষ্যমবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত অনেক জীবন ও রক্ত দিয়ে সাথে ছিল। এজন্য কোন বৈষম্য মেনে নেয়া হবে না। প্রতিবিপ্লবের চক্রান্ত ছাত্র-জনতা রুখে দিবে।

আজ বুধবার বিকেলে বায়তুল মোকাররম উত্তর গেটে গণহত্যার বিচার এবং দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত বিশাল বিক্ষোভ পুর্ব সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্রে তিনি এসব কথা বলেন। সংগঠনের ঢাকা মহানগর উত্তর সভাপতি প্রিন্সিপাল মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, দলের মহাসচিব প্রিন্সিপাল হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, মুহাম্মদ আমিনুল ইসলাম, ড. মাওলানা বেলাল নূল আজিজী, মাওলানা আরিপুল ইসলাম, মুফতী ওয়ালী উল্লাহ, ডা. শহিদুল ইসলাম, মুফতী মানসুর আহমদ সাকী, ছাত্রনেতা ইউসুফ আহমদ মানসুর, অধ্যাপক ফজলুল হক মৃধা, মুফতী রফিকুল ইসলাম আশরাফী। নগর দক্ষিণ সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা কেএম শলীয়াতুল্লাহ ও উত্তর দপ্তর সম্পাদক মুফতী নিজামুদ্দিন সমাবেশ পরিচালনা করেন।

মুফতী সৈয়দ ফয়জুল করীম বলেন, ছাত্র-জনতা জীবন ও রক্ত দিয়ে দ্বিতীয়বার স্বাধীন করেছে দেশ। মানুষ সুখে-শান্তিতে ও নিরাপদের সাথে বসবাস করবে। তিনি বলন, সকল ধর্মের সংখ্যানুপাতিকহারে চাকুরী নিশ্চিতের দাবি জানান। সকলক্ষেত্রে বৈষম্য রুখে দিতে হবে। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ একটি নির্লজ্জ দল। শেখ হাসিনা পুরো পরিবার দেশ থেকে পালিয়ে গেছে নেতাকর্মীদের ফেলে। এখন আপনারা কোন মুখে শেখ হাসিনার উস্কানীতে পা দিয়ে দেশে নতুন করে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছেন? লজ্জা থাকলে কেউ কোন দিন আওয়ামী লীগ করতে পারে না। ফেরাউন হাসিনা নিজেদের প্রয়োজনে বার বার সংবিধানকে পরিবর্তন করে সাংবিধানিক সঙ্কট সৃষ্টি করেছে। এখন উপদেষ্টাদেরকে শেখ হাসিনার  দেশবিরোধী সংবিধানকে বাতিল করতে হবে।

মুফতী ফয়জুল করীম বলেন, পরাজিত ও চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা মুক্তিকামী মানুষের পক্ষে গিয়ে মানুষ হত্যায় মেতে উঠে। মানুষ গড়ার কারিগর বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের শিক্ষকরা ন্যায়ের পক্ষে না থেকে সরকারে সকল অবৈধ কাজকে সমর্থন করে মারাত্মক অন্যায় করেছেন। ফেরাউন হাসিনার কারাগারে অনেক নিরীহ আলেমদেরকে দীর্ঘদিন বন্দি রেখে নির্যাতন করছে। আটককৃত আলেমদের অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে। তিনি শাপলার হত্যা, বিডিআর হত্যার বিচার দাবি করেন। অনেক নিরীহ বিডিআরকে বিনাবিচারে কারারুদ্ধ করা হয়েছে. তাদের মুক্তি দিতে হবে। জয় ভারতের হস্তক্ষেপ কামনা করে দেশদ্রোহী অপরাধ করেছে। তাকে সেই অপরাধে বিচার করতে হবে। তিনি ভিনদেশি যে কোন হস্তক্ষেপ মেনে নেয়া হবে না বলে হুশিয়ারী দেন। দেশের সমস্যা দেশের জনগণ সমাধান করবে। সংখ্যালঘু নির্যাতন প্রসঙ্গে বলেন, সংখ্যালঘুরা এদেশে নির্যাতিত হয়নি। দেশের ৯৯ ভাগ হিন্দু আওয়ামী লীগ করে এবং আওয়ামী লীগের সকল অন্যায়কে তারা সমর্র্থন করেছে। অতীতে মন্দিরে হামলার যত ঘটনা ঘটেছে, সেই হামলাকারী আওয়ামী লীগই করেছে বলে  মিডিয়া এসেছে। এখনও যদি সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা হয়ে থাকে তারাই করে দেশকে হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গা বাধিয়ে দিতে চায়। মুফতী ফয়জুল করীম বলেন, আমরা অনেক আগেই বলেছি, সকল মন্দির ও উপাসনালয়ে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হোক। যদি কোন মন্দিরে সিসি ক্যামেরা না থাকে তাহলে তা মন্দির হিসেবে গণ্য হবে না এবং তাতে হামলা হলে ধরে নেয়া হবে তারা নিজেরাই হামলা করেছে।

মাওলানা ইউনুছ আহমাদ বলেন, প্রশাসন ও রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের বিচার করতে হবে। দুর্নীতি ও অর্থপাচারকারীদের বিচার করতে হবে এবং পাচারকৃত অর্থ দেশে ফিরিয়ে আনতে হবে। আওয়ামী লীগের সকল অবৈধ সম্পদ বাজেয়াপ্ত করতে হবে। পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনের ব্যবস্থা করার জন্য তিনি উপদেষ্টাদের আহ্বান জানান।

অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বলেন, শহীদের রক্তের দাগ এখনো শুকায়নি। আওয়ামী লীগ দেশ নিয়ে গভীর ষড়যন্ত্র করছে। প্রতিবিপ্লবের চক্রান্ত করে দেশকে সঙ্কটে নিপতিত করতে চাচ্ছে। শেখ হাসিনা ১৪ গোষ্ঠীসহ দেশত্যাগ করেছে। এখন লজ্জা থাকলে তাদের পক্ষ নেয়া থেকে বিরত থাকা উচিত। তিনি আওয়ামী লীগের প্রতিবিপ্লবীরদর চক্রান্ত জনগণ রুখে দিবে।

মাওলানা গাজী আতাউর রহমান বলেন, পরাজিত আওয়ামী শক্তি দেশকে অশান্ত করার জন্য সংখ্যালঘুদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে। ভারতের মিডিয়ায় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার মিথ্যা সংবাদ পরিবেশন করে জাতিকে বিভ্রান্ত করছে। সংখ্যালঘুদের ওপর কোন নির্যাতন হয়নি। যা হয়েছে, তা রাজনৈতিক হামলা। যারা আওয়ামী লীগের অন্যায় অপকর্মকে সমর্থন করে নিজেদের আখের গুছিয়েছে, এদের কেউ কেউ নির্যাতনের শিকার হয়ে থাকতে পারে। ঢালাওভাবে কোন সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা হয়নি। এ অপপ্রচার রুখে দিতে হবে।

সভাপতির বক্তব্যে শেখ ফজলে বারী মাসউদ বলেন, গণহত্যাকারী সরকারের বিচার করতে হবে। খুনি হাসিনা দেশে ফিরিয়ে এনে বিশেষ ট্রাইব্যুনালে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে। খুনি মন্ত্রী-এমপিদের গ্রেফতার করে শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানিয় বলেন, ফেরাউন সরকারের দোসরদেরও বিচারের আওতায় আনতে হবে।

পরে একটি বিশাল মিছিল মুফতী সৈয়দ ফয়জুল করীমের নেতৃত্বে বায়তুল মোকাররম পল্টন মোড়, বিজয়নগর গিয়ে সমাপ্ত হয়।