News update
  • 600,000 Devotees Offer Eid Prayer at Sholakia      |     
  • Bangladesh Economy Shows Signs of Recovery Amid Challenges     |     
  • Bangladeshi Women Student July Protest Leaders to be honoured at Women of Courage Award ceremony     |     
  • 'Eid of sadness': Gazans pass with scarce food, razing war     |     
  • 5 Eid congregations planned at Baitul Mukarram Mosque     |     

দুই নেতার ফেসবুক পোস্ট নিয়ে এনসিপিতে মতবিরোধ

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক রাজনীতি 2025-03-24, 8:45am

img_20250324_084353-be631ae36db913bf6d2c1ec506ff09071742784326.jpg




ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া ছাত্রদের নতুন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি)। দল গঠনের এক মাস না পেরোতেই শীর্ষ নেতাদের মাঝে বিতর্কে জড়িয়ে পড়তে দেখা যাচ্ছে। সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের সঙ্গে বৈঠক নিয়ে ফেসবুকে দলটির মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ, সারজিস আলম, মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটোয়ারী, সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সংগঠক আব্দুল হান্নান মাসউদ পরস্পর বিরোধে জড়িয়েছেন। এটি নিয়ে দলের অন্যান্য নেতাদের মধ্যেও অসন্তোষ প্রকাশ করতে দেখা গেছে।

দলীয় ফোরামে আলোচনা ছাড়াই নেতাদের হুটহাট ফেসবুকে পোস্ট দেওয়া নিয়ে এনসিপির ভেতরে চলছে নানা আলোচনা। দলটির কেউ কেউ একে ‘ব্যক্তিগত জনপ্রিয়তা অর্জনের রাজনীতি’ বলে অভিহিত করেছেন।

ঘটনার সূত্রপাত হয় গত বৃহস্পতিবার। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস জানান, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার কোনো পরিকল্পনা নেই। এরপরই আওয়ামী লীগ পুনর্বাসনের চেষ্টা হচ্ছে বলে আলোচনা শুরু হয় এবং হাসনাতের পোস্ট আসে। সেদিন মধ্যরাতে হাসনাত ফেসবুকে লেখেন, গত ১১ মার্চ তিনিসহ দুজনকে ক্যান্টনমেন্টে ডেকে নিয়ে আওয়ামী লীগ পুনর্বাসনের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। হাসনাতের সেই পোস্টের পর বিষয়টি নিয়ে দুদিন ধরে নানা আলোচনা চলে। 

এর প্রতিক্রিয়ায় শনিবার (২২ মার্চ) সুইডেনভিত্তিক নেত্র নিউজকে সেনাসদর থেকে জানানো হয়, হাসনাত আবদুল্লাহর পোস্ট সম্পূর্ণ রাজনৈতিক স্ট্যান্টবাজি বৈ অন্য কিছু নয়। এ ছাড়া ২৭ বছর বয়সী এই ছাত্রনেতার বক্তব্যকে ‘অত্যন্ত হাস্যকর ও অপরিপক্ব গল্পের সম্ভার’ হিসেবেও আখ্যা দিয়েছে সেনাবাহিনী।

এর মধ্যে রোববার (২৩ মার্চ) এক ফেসবুক পোস্টে দলটির আরেক মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম লেখেন, যেভাবে এই কথাগুলো ফেসবুক স্ট্যাটাসের মাধ্যমে এসেছে, এই প্রক্রিয়াটি আমার সমীচীন মনে হয়নি বরং এর ফলে পরবর্তীতে যেকোনো স্টেকহোল্ডারের সাথে আমাদের গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা আস্থার সংকটে পড়তে পারে।

একই পোস্টে সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসউদ কমেন্ট করেন, এসব কি ভাই। পাবলিকলিই বলছি- দুইজনের একজন মিথ্যে বলছেন। এটা চলতে পারে না। আর দলের গুরুত্বপূর্ণ পোস্ট হোল্ড করেও আপনারা যেভাবে ব্যক্তিগতভাবে বিচরণ করছেন এবং তা পাবলিক করে এনসিপিকেই বিতর্কিত করছেন। মানুষ এনসিপিকে নিয়ে যখন স্বপ্ন বুনছে, তখন এভাবে এনসিপিকে বিতর্কিত করার কাদের এজেন্ডা। স্যরি, আর চুপ থাকতে পারলাম না।

এর আগেরদিন শনিবার সিলেটে এনসিপির ইফতার মাহফিলে মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটোয়ারী হাসনাতের পোস্টকে শিষ্টাচারবহির্ভূত হিসেবে উল্লেখ করেন। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, হাসনাত আবদুল্লাহ রাষ্ট্রের বিভিন্ন কমিটির সঙ্গে মিটিং করেছেন-তার এমন বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করা উচিত হয়নি। আমরা মনে করি, এটা শিষ্টাচারবহির্ভূত কাজ হয়েছে। তবে তিনি বলেন, এ নিয়ে দলের মধ্যে কোনও ফাটল বা বিভাজন দেখা দেয়নি।  

বিষয়টি নিয়ে এনসিপির নেতাদের অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, দলের মধ্যে আলোচনা না করে ফেসবুকে এমন পোস্ট দেওয়া গ্রহণযোগ্য নয়। দলের কেন্দ্রীয় কমিটির হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে এই ইস্যু নিয়ে উত্তপ্ত আলোচনা চলছে।

সেখানে কেন্দ্রীয় নেতা খালিদ সাইফুল্লাহ লিখেছেন, গুটিকয়েক ব্যক্তি ব্যক্তিগত চিন্তাপ্রসূত কথাবার্তা দলীয় সিদ্ধান্ত ছাড়াই বাইরে প্রকাশ করছেন। যদি সেলিব্রিটি ফেইস, কন্ট্রোভার্সি আর পপুলিজম দিয়েই রাজনীতি করতে চান, তাহলে আমাদের পার্টি থেকে বাদ দিয়ে টিকটকারদের এনে বসিয়ে দিন।

আরেক নেতা লিখেছেন, একটি দলের সদস্য হয়ে ব্যক্তিগত জনপ্রিয়তা অর্জনের রাজনীতি করবেন না। দলের কথাও ভাবতে হবে।

আরেকজন নেতা লিখেছেন, গত সাধারণ সভায় আলাপ উঠেছিল, ডেকোরামের কেউ যাতে হুটহাট ফেসবুকে পোস্ট না দেয় এবং নিজেরা আরও বেশি অ্যালাইন হয়। কিন্তু কে শোনে কার কথা!

এ ছাড়া দলীয় ফোরামে আলোচনা না করে বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যক্তিদের সঙ্গে বৈঠক করা, আবার সেই বৈঠকের আলোচনা দলকে না জানিয়েই জনসমক্ষে প্রকাশ করা-এ ধরনের কর্মকাণ্ড নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন কেন্দ্রীয় নেতাদের অনেকে।

তবে দলটির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্থা শারমিন গণমাধ্যমকে আশ্বস্ত করেছেন যে, অনলাইনে এই মতবিরোধ সত্ত্বেও, দলের চেতনা অক্ষুণ্ণ রয়েছে। কারও মধ্যে কোনও বিভাজন নেই। আমরা ঈদের পরে সংবিধান এবং আচরণবিধির খসড়া তৈরির কাজ সম্পন্ন করব।

এদিকে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের ব্যাপারে এনসিপির পক্ষ থেকে শুক্রবার সংবাদ সম্মেলন করে দলটির অবস্থান জানানো হয়। তবে সেনাপ্রধানের বিষয়ে কোনো নির্দিষ্ট মন্তব্য করা হয়নি।আরটিভি