একসময় ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন এমন সরকারি কর্মকর্তাদের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময়েও ওএসডির মতো করে রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, ইসলামপন্থী দাবি করা একটি দলের লোকদের এসব জায়গায় বসানো হয়েছে।
সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ে সাংবাদিকদের তিনি একথা বলেন।
রিজভী বলেন, বেগম জিয়ার আমলে যেসব ছাত্র মেরিটে (মেধায়) নিয়োগ পেয়েছে, হয়তো ছাত্রজীবনে ছাত্রদল করেছে অথবা বাপ-চাচা-মামা কেউ করেছে, যারা বঞ্চিত ছিলেন তাদের হয়তো অনেককে প্রমোশন দিয়েছেন, কিন্তু একজনকেও ভালো পোস্টিং দেয়া হয়নি, অনেকটা ওএসডি করে রাখা হয়েছে।
আমি জানি। আমি ছাত্রদলের (সাবেক) প্রেসিডেন্ট। আমি ওই ছেলেগুলোকে চিনি। প্রত্যেকে এসে আমার বাসায় প্রতিদিন কান্নাকাটি করে। প্রথমে কিছুদিন বসিয়ে রাখার পরেও এই মোখলেস উর রহমান (জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে সদ্য বদলি হওয়া সিনিয়র সচিব) মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে তাদের সরিয়ে রেখেছে অনেকটা ওএসডির মতো গুরুত্বহীন জায়গায়। আরেকটি বিশেষ রাজনৈতিক দলের লোকজনকে ডিসি-এসপি বানানো হচ্ছে। আমি গুনে গুনে বলে দিতে পারবো, ওই বিশেষ রাজনৈতিক দল যারা নিজেদের ইসলামপন্থী বলে দাবি করে, তাদের সমর্থিত, তাদের সমমনা লোকদের ওইসব জায়গা দেয়া হয়েছে।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময় নতুন করে শেখ হাসিনার মতো বিভাজন তৈরি করা হয়েছে বলে অভিযোগ করে রিজভী। তিনি বলেন, যারা প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ইউএনও, ম্যাজিস্ট্রেট হয়েছেন, প্রমোশন পেয়ে ডিসি-এসপি হয়েছেন, শেখ হাসিনার ১৫/১৬ বছরে যাদের প্রমোশন হয়নি তাদের অনেকের এখনো হয়নি, আবার অনেকের প্রমোশন হলেও এক বছরে তাদের গুরুত্বহীনভাবে ফেলে রাখা হয়েছে।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে সদ্য বদলি হওয়া সিনিয়র সচিব ড. মো. মোখলেস উর রহমানের সমালোচনা করেন রিজভী।
গত বছরের ২৮ আগস্ট জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরীকে সরিয়ে মো. মোখলেস উর রহমানকে দুই বছরের জন্য চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া হয়। মোখলেস উর রহমান বিসিএস প্রশাসন ৮২ ব্যাচের কর্মকর্তা।
তিনি জনপ্রশাসন সচিবের দায়িত্ব পাওয়ার পর পদায়ন ও পদোন্নতিতে বঞ্চিতদের অবমূল্যায়নের অভিযোগ ওঠে। সচিব, সংস্থা প্রধান ও জেলা প্রশাসক নিয়োগ নিয়ে সমালোচনা হয়। বিভিন্ন পদে নিয়োগকে কেন্দ্র করে আর্থিক লেনদেনের অভিযোগও ওঠে তার বিরুদ্ধে।
রোববার (২১ সেপ্টম্বর) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়, মো. মোখলেস উর রহমানকে পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য (সিনিয়র সচিব) হিসেবে বদলি করা হয়েছে। এই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে রিজভী বলেন, যে ব্যক্তিটির নামে কোটি কোটি টাকা নেয়ার অভিযোগ আছে তাকে আপনারা সরালেন কিন্তু সরিয়ে আবার দিয়ে দিলেন পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য।