
‘আমি ট্রেনে এসেছি কেবল ম্যাডামের জানাজায় অংশ নিতে। জানাজা শেষে আবার চলে যাব। এতো খারাপ লাগছিল যে, বাসায় থাকতে ইচ্ছে করেনি। ঢাকায় চলে এসেছি।’ কথাগুলো বলছিলেন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সাদিক হোসেন। তিনি নারায়ণগঞ্জ থেকে ঢাকায় এসেছেন খালাদা জিয়ার জানাজায় অংশ নিতে।
নারায়ণগঞ্জের আরেক বাসিন্দা শফিকুল ইসলাম। তিনি বুকে কালো ব্যাজ পরে নারায়ণগঞ্জ থেকে রাজধানীর কমলাপুরে পৌঁছান সকাল ৯টার সময়। তিনি বলছিলেন, ‘ম্যাডামের জানাজায় অংশ নিতে ট্রেনে চলে এলাম। এখান থেকে সোজা সংসদ ভবন এলাকায় চলে যাব।’
একই ট্রেনে অর্থাৎ নারায়ণগঞ্জ কমিউটারে করে আরও অনেক লোকজন এসেছে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জানাজার উদ্দেশে। তাদের মধ্যে নাদিম হোসেন একজন। তিনি বলেন, ‘এই ট্রেনে কিছু লোক আসছে। পরে আবার ট্রেন রয়েছে। সেই ট্রেনেও অনেকে আসবেন। আবার বাসে করে অনেকে আসবেন। ব্যক্তিগত গাড়িতে আসবেন।’
বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) সকাল ৯টার দিকে নারায়ণগঞ্জ কমিউটার ট্রেনটি কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের শহরতলি ১৪ নম্বর প্লাটফর্মে আসে। এতে নামেন নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সদস্য একরামুল কবির মামুন ও নাদিম হাসান মিঠুসহ প্রায় অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী। তারা সবাই জাতীয় সংসদ ভবনের মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে অনুষ্ঠাতব্য জানাজায় অংশ নিতে এসেছেন।
নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সদস্য নাদিম হাসান মিঠু বলেন, গতকাল মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) থেকেই আমাদের মন ভীষণ বিষণ্ন। গণতন্ত্রের আপসহীন নেত্রী, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার ইন্তেকালে সারা দেশ শোকাহত। প্রিয় নেত্রীর নামাজে জানাজায় শরিক হতে দেশের নানা প্রান্ত থেকে মানুষ আসছেন। আমরাও সেই আহ্বানে সাড়া দিয়ে নারায়ণগঞ্জ থেকে এসেছি।
মুন্সিগঞ্জ থেকে আসা আসাদুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা কয়েকজন একসঙ্গে এসেছি। শেষবারের মতো ম্যাডামকে যদি একবার দেখতে পাই। আমাদের এলাকার আরও অনেকে বাসে এসেছেন।’
গাজীপুর থেকে আসা শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আমি সরাসরি রাজনীতি করি না। তবে খালেদা জিয়াকে ভালো লাগে। তার প্রতি আমার গভীর শ্রদ্ধা। তিনি দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন-সংগ্রাম ও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। অনেক কষ্ট করেছেন। শেষে যখন সুসময় এলো, তখন তিনি চলে গেলেন। আমি ভাবতেও পারিনি, তিনি মারা যাবেন। খারাপ লাগছিল। তাই জানাজার উদ্দেশে চলে এলাম।’