News update
  • Inqilab Monch Seeks Home Adviser’s Exit     |     
  • UN Calls for Calm in Bangladesh After Protest Leader’s Killing     |     
  • DMP issues 7 traffic directives for Osman Hadi’s Janaza     |     
  • Vested quarter fuelling chaos to impose new fascism: Fakhrul     |     
  • Hadi’s namaz-e-janaza at 2:30pm Saturday     |     

আবারও ট্রাম্পকে হত্যার চেষ্টা, হামলাকারী সম্পর্কে যা জানা যাচ্ছে

বিবিসি বাংলা সংঘাত 2024-09-16, 6:11pm

retweryery-b2bae753097ad9479fdd689bbaf89d5c1726488682.jpg




পেনসিলভানিয়া হামলায় প্রাণে বেঁচে যাওয়ার মাত্র দুই মাসের মাথায় আবারও হত্যাচেষ্টার শিকার হয়েছেন আসন্ন মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের রিপাবলিকানপ্রার্থী ও সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

এবার তার ওপর হামলার চেষ্টা হয়েছে ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যের ওয়েস্ট পাম বিচ এলাকায় অবস্থিত একটি গলফ ক্লাবে। নিজের মালিকানাধীন ওই মাঠে মি. ট্রাম্প তখন গলফ খেলছিলেন বলে জানা গেছে।

তবে তার কোনো ক্ষতি হয়নি। রোববার দুপুরের ওই ঘটনার পর মি. ট্রাম্পকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

“আমার আশেপাশে গুলির শব্দ শোনা গেছে, কিন্তু গুজব নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ার আগেই আমি আপনাদেরকে বলতে চাই: আমি নিরাপদে এবং সুস্থ আছি,” এক বার্তায় জানিয়েছেন রিপাবলিকানপ্রার্থী মি. ট্রাম্প।

হত্যাচেষ্টার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে রায়ান ওয়েসলি রুথ নামে পঞ্চাশোর্ধ্ব এক ব্যক্তিকে আটক করেছে দেশটির আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।

ঘটনাস্থল থেকে থেকে ‘একে-৪৭’ সদৃশ একটি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।

মি. রুথ সম্পর্কে বিস্তারিত খুব বেশি তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে তিনি ইউক্রেনের পক্ষে বিদেশি যোদ্ধা সংগ্রহের কাজের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত ছিলেন বলে প্রাথমিকভাবে জানা যাচ্ছে।

এদিকে, মি. ট্রাম্পকে পুনরায় হত্যাচেষ্টার ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।

“সাবেক প্রেসিডেন্ট অক্ষত রয়েছেন জেনে আমি স্বস্তি পেয়েছি,” এক বিবৃতিতে বলেছেন মি. বাইডেন।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সহিংসতার কোনো স্থান নেই বলেও জানিয়েছেন তিনি।

একই কথা বলেছেন মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট ও আসন্ন নির্বাচনে মি. ট্রাম্পের প্রতিদ্বন্দ্বী ডেমোক্র্যাটপ্রার্থী কমালা হ্যারিসও।

“আমি খুশি যে তিনি (মি. ট্রাম্প) নিরাপদে আছেন। আমেরিকায় সহিংসতার কোনোও জায়গা নেই,” সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) অ্যাকাউন্টে লিখেছেন মিজ হ্যারিস।

এর আগে, গত জুলাইয়ের মাঝামাঝি সময়ে পেনসিলভানিয়ায় এক সমাবেশে মি. ট্রাম্পকে লক্ষ্য করে গুলি ছোঁড়ার ঘটনা ঘটেছিল। সেসময় অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে গিয়েছিলেন সাবেক এই প্রেসিডেন্ট।

যেভাবে হামলাচেষ্টা হয়েছিল

স্থানীয় সময় রোববার বেলা দেড়টার দিকে ফ্লোরিডার ওয়েস্ট পাম বিচে নিজের নামে প্রতিষ্ঠা করা ‘দ্য ট্রাম্প ইন্টারন্যাশনাল গলফ ক্লাবে’ খেলছিলেন মি. ট্রাম্প।

এমন সময় ক্লাবটির পার্শ্ববর্তী একটি ঝোপের ভেতরে বন্দুকের নল দেখতে পান তার নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা বাহিনীর সদস্যরা।

সঙ্গে সঙ্গে তারা ওই ব্যক্তিকে লক্ষ্য করে অন্তত চার রাউন্ড গুলি ছোড়েন। তখন বন্দুকধারী ব্যক্তিও গুলি ছুড়েছেন কি-না, সেটি নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

তবে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে বন্দুকধারী ব্যক্তির কোনো ক্ষতি হয়নি। অস্ত্র ফেলে তিনি একটি গাড়িতে করে প্রাথমিকভাবে ঘটনাস্থল ত্যাগ করতে সক্ষম হন।

তবে কিছুদূর না যেতেই তাকে আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছে মার্কিন পুলিশের কর্মকর্তারা।

রোববার বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে কর্মকর্তারা জানান, ওই বন্দুকধারী যখন পালিয়ে যাচ্ছিলো, তখন তার গাড়ির লাইসেন্স প্লেটের একটি ছবি তুলে রাখেন একজন প্রত্যক্ষদর্শী।

সেটিই পরবর্তীতে পুলিশসহ অন্যান্য নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের কাছে পাঠানো হয়। মূলত ওই তথ্যের ওপর ভিত্তি করেই পাশের একটি এলাকায় থেকে গাড়িসহ রায়ান ওয়েসলি রুথকে আটক করা হয়।

এছাড়া যে স্থান থেকে হামলার চেষ্টা করা হচ্ছিলো, সেখান থেকে ‘একে-৪৭’ সদৃশ একটি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।

সেই সঙ্গে, একটি গোপ্রো ক্যামেরা এবং পিঠে নেওয়ার দু’টি ব্যাগও উদ্ধার করা হয়েছে।

এদিকে, ঘটনার পরপরই দ্য ট্রাম্প ইন্টারন্যাশনাল গলফ ক্লাবে যান মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা ‘ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনে’র (এফবিআই) সদস্যরা।

মি. ট্রাম্পের বিরুদ্ধে “গুপ্ত হত্যার চেষ্টা” হয়েছে বলেই প্রাথমিকভাবে ধারণা করছেন তারা।

“ঘটনাটি তদন্ত করা হচ্ছে। সার্বিক বিবেচনায় প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে, সাবেক প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে গুপ্তহত্যার চেষ্টা হয়েছে,” এক বিবৃতিতে বলেছে এফবিআই।

হামলাকারী সম্পর্কে যা জানা যাচ্ছে

রোববার মি. ট্রাম্পকে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় যাকে আটক করা হয়েছে, তার পুরো নাম রায়ান ওয়েসলি রুথ বলে জানিয়েছেন দেশটির আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তারা।

মি. রুথের বয়স ৫৮ বলে জানা যাচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার যে অ্যাকাউন্ট রয়েছে, সেগুলো থেকে জানা যাচ্ছে যে, তিনি ইউক্রেনের পক্ষে বিদেশি যোদ্ধা সংগ্রহের কাজের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত ছিলেন।

মি. রুথ ২০২৩ সালে নিউইয়র্ক টাইমসকে একটি সাক্ষাৎকার দিয়েছিলেন বলেও মার্কিন সংবাদ মাধ্যমগুলোতে খবর প্রকাশিত হয়েছে।

সেই খবর থেকে জানা যাচ্ছে, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর তিনি স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে ইউক্রেনেও গিয়েছিলেন। যদিও তখন তার তেমন কোনো সামরিক অভিজ্ঞতা ছিল না।

পরে যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে মি. রুথ রাশিয়ার বিরুদ্ধে ইউক্রেনের হয়ে যুদ্ধ করার জন্য স্বেচ্ছাসেবী যোদ্ধা খোঁজার চেষ্টা করেছেন।

মি. ট্রাম্পের নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন এমন একজন সিক্রেট সার্ভিস বাহিনীর সাবেক কর্মকর্তা বেরি ডোনাডিও বিবিসিকে বলেছেন, মি. রুথের কাছ থেকে যে অস্ত্রটি উদ্ধার করা হয়েছে, সেটি দিয়ে ৮০০ মিটার দূরের লক্ষ্যবস্তুতেও আঘাত হানা সম্ভব।

এর আগে, গত ১৩ই জুলাই পেনসিলভানিয়া অঙ্গরাজ্যে এক নির্বাচনী সমাবেশে বক্তৃতা দেওয়ার সময় ডোন্ল্ড ট্রাম্পের ওপর গুলি চালানোর ঘটনা ঘটেছিল।

সে সময় গুলিতে কানে আঘাত পেয়েছিলেন মি. ট্রাম্প। তিনি বেঁচে গেলেও হামলাকারীর গুলিতে অন্য এক ব্যক্তি নিহত হনন। এছাড়া দু'জন গুরুতর আহতও হন।

হামলার পর হামলাকারীর নাম প্রকাশ করেছিল তদন্তকারী সংস্থা এফবিআই। বলা হয়েছিল তার নাম থমাস ম্যাথিউ যার, বয়স মাত্র ২০ বছর।

অন্যদিকে, হামলার ঘটনার পর সাবেক এই প্রেসিডেন্টের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা 'সিক্রেট সার্ভিসে'র সক্ষমতা ও দক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল।

পরে সমালোচনার মুখে বাহিনীনিটির প্রধান পদত্যাগ করেছিলেন। এছাড়া বাহিনীর অন্তত পাঁচজন সদস্যকে প্রশাসনিক ছুটিতে পাঠানো হয়েছিল।

এ ঘটনার দুই মাস পর দ্বিতীয় দফায় হত্যাচেষ্টার শিকার হলেন আসন্ন মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকানপ্রার্থী মি. ট্রাম্প।