News update
  • ‘With Science, We Can Feed the World of 9.7 Billion by 2050′     |     
  • WHO warns of severe disruptions to health services for funding cuts     |     
  • ICJ hears Sudan’s case accusing UAE of ‘complicity in genocide’     |     
  • Bombardment, deprivation and displacement continue in Gaza     |     
  • Aged and Alone: The hidden pains in old age homes     |     

ইউক্রেনে সামরিক সহায়তা স্থগিত করেছে যুক্তরাষ্ট্র

বিবিসি বাংলা সংঘাত 2025-03-04, 7:54pm

rt4535234-3014951d7c2b6846d4c6c47a38449df11741096483.jpg




হোয়াইট হাউজের একজন কর্মকর্তা বিবিসির যুক্তরাষ্ট্রের অংশীদার সিবিএস নিউজকে বলেছেন, "প্রেসিডেন্ট স্পষ্টভাবেই বলেছেন শান্তি প্রতিষ্ঠাই তার মূল লক্ষ্য। আমাদের অংশীদারদেরও এই লক্ষ্যে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকা প্রয়োজন। আমরা আমাদের সাহায্য স্থগিত করছি এবং পর্যালোচনা করছি যাতে আমাদের ভূমিকা সমাধানে অবদান রাখে সে বিষয়টি নিশ্চিত করা যায়।"

ব্লুমবার্গের প্রতিবেদন অনুযায়ী, "ইউক্রেনের নেতাদের শান্তি চুক্তির প্রতি সদিচ্ছা রয়েছে যতক্ষণ পর্যন্ত ট্রাম্প এ বিষয়ে নিশ্চিত হতে না পারবেন ততক্ষণ পর্যন্ত ইউক্রেনে যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান সকল সামরিক সহায়তা স্থগিত থাকবে।"

যদিও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বা পেন্টাগন এখন পর্যন্ত আর কোনো মন্তব্য করেননি।

বর্তমানে ইউক্রেনে নেই যুক্তরাষ্ট্রের এমন সব সামরিক সরঞ্জাম সরবরাহের বিষয়টিও স্থগিতের আওতায় পড়বে।

এ তালিকার মধ্যে পোল্যান্ডের ডিপোগুলোতে মজুদ থাকা এবং পরিবহনরত অস্ত্রও অন্তর্ভুক্ত আছে।

এর আগে হোয়াইট হাউজে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সাথে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ের পর প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন তিনি এখনও ইউক্রেনের সামরিক সহায়তা বন্ধের বিষয়ে কথা বলেননি।

তবে তিনি বলেছেন "আমরা দেখবো কী হয়।"

এক সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে ট্রাম্প আরও বলেছেন, "জেলেনস্কির আরও কৃতজ্ঞ হওয়া উচিত।"

প্রেসিডেন্ট বলেছেন, ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের 'সম্মতি' নিয়ে রাশিয়া ও ইউক্রেনের সাথে যে কোনও শান্তি চুক্তি হওয়া উচিত।

কিন্তু কেউ হয়তো চুক্তি করতে চায় না উল্লেখ করে তিনি বলেন, "যদি তারা তা না করে তবে খুব বেশি দিন তারা থাকবে না।"

মি. ট্রাম্প আরও বলেন, রাশিয়া ও ইউক্রেনের জনগণ উভয়েই একটি চুক্তি করতে চায় বলে বিশ্বাস করেন তিনি।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবিত বিরল খনিজ চুক্তির অগ্রগতি সম্পর্কেও তিনি জানাবেন বলে উল্লেখ করেন। গত শুক্রবার প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এবং জেলেনস্কির ওই চুক্তি স্বাক্ষরের কথা ছিল।

তিন বছর আগে রাশিয়া পূর্ণাঙ্গ হামলার শুরুর পর থেকে ইউক্রেনে সামরিক সহায়তার সবচেয়ে বড় উৎস হলো যুক্তরাষ্ট্র। এ সহায়তার মধ্যে অস্ত্র, সরঞ্জাম এবং আর্থিক সহায়তা রয়েছে।

'লজ্জাজনকভাবে হাল ছেড়ে দেয়া'

সিনেট আর্মড সার্ভিসেস কমিটির ডেমোক্রেট সদস্য ট্যামি ডাকওয়ার্থ হোয়াইট হাউজের সহায়তা বন্ধের এ সিদ্ধান্তকে "ইউক্রেনকে লজ্জাজনকভাবে ত্যাগ করার নজির" হিসেবে অভিহিত করেছেন।

তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স এ লিখেছেন, "এই সিদ্ধান্ত আমাদের দেশকে নিরাপদ করবে না।"

"এই সিদ্ধান্ত আমাদের গণতান্ত্রিক অংশীদারদের সাথে সম্পর্ক দুর্বল করতে পুতিন ও আমাদের প্রতিপক্ষদের সাহসী করে তুলবে," লিখেছেন তিনি।

ভারমন্টের একজন ডেমোক্র্যাট পিটার ওয়েলচও এক্সে এ বিষয়ে হতাশা ব্যক্ত করেছেন।

তিনি লিখেছেন, "পুতিন একজন যুদ্ধাপরাধী। জেলেনস্কি একজন হিরো বা নায়ক। ট্রাম্প দুর্বল।"

ইউক্রেনে সামরিক সহায়তা কীভাবে কাজ করে?

ইউক্রেনে যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক সহায়তায় বিষয়টি খানিকটা জটিল তবে একে তিনটি প্রধান ভাগে দেখা যেতে পারে।

প্রেসিডেন্সিয়াল ড্র ডাউন অথোরিটি: সোমবার একজন সিনিয়র ডিফেন্স কর্মকর্তা বিবিসিকে জানিয়েছেন, প্রেসিডেন্সিয়াল ড্র ডাউন অথোরিটি যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর মজুদ থেকে সহায়তা পাঠানোর অনুমতি দেয়। এই কর্তৃপক্ষের অধীনে প্রায় তিন দশমিক ৮৫ বিলিয়ন ডলারের সরঞ্জাম মজুদ রয়েছে। এই সহায়তা ছাড় করা হবে কি না তা হোয়াইট হাউজ নির্ধারণ করে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বৈদেশিক সামরিক অর্থায়ন: ইউক্রেনের জন্য প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বৈদেশিক সামরিক অর্থায়নের একটি পৃথক এক দশমিক পাঁচ বিলিয়নের ফান্ড রয়েছে। এটি তাদের জন্য অনুদান বা সরাসরি ঋণ হিসাবে দেয়া যেতে পারে। এই খাত বর্তমানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওর পর্যালোচনাধীন।

ইউক্রেন নিরাপত্তা সহায়তা উদ্যোগ: এ সহায়তা উদ্যোগে সরাসরি ইউক্রেনকে যুক্তরাষ্ট্রের নির্মাতাদের সাথে যুক্ত করার জন্য আর্থিক সহায়তা দেয়া হয়।

তবে সহায়তা স্থগিতের ঘোষণা এগুলোকে কীভাবে প্রাভাবিত করবে তা পরিষ্কার নয়।

ইউক্রেনকে রক্ষায় পরিকল্পনা ঘোষণা যুক্তরাজ্যের

যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টারমার রাশিয়ার হাত থেকে ইউক্রেনকে রক্ষা ও যুদ্ধের অবসান ঘটাতে দেশটির সাথে কাজ করতে চার দফা পরিকল্পনা ঘোষণা করেছেন।

মি. স্টারমার পার্লামেন্টে বলেছেন, ইউক্রেনের যুদ্ধের সমাধান হবে "আমাদের সময়ের পরীক্ষা।"

এরই মধ্যে ভলোদিমির জেলেনস্কি এবং ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে বিরোধ তুঙ্গে ওঠে।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বলেছেন, "শান্তি এখনও অনেক দূরে" জেলেনেস্কের করা এই মন্তব্যটি ছিল "সবচেয়ে খারাপ" মন্তব্য যা তিনি দিতে পারতেন।

অবশ্য এরমধ্যেই জেলেনস্কি বলেছেন, "যত দ্রুত সম্ভব শান্তি প্রয়োজন"।

স্টারমার সংসদে জানিয়েছেন ট্রাম্পও এটাই চান বলে তিনি বিশ্বাস করেন।

রাশিয়ানদের আলোচনার টেবিলে চায় যুক্তরাষ্ট্র

ইউক্রেনে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক সহায়তা বন্ধের প্রতিক্রিয়ায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও একটি বিবৃতি দিয়েছেন।

তিনি বলেছেন, " প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পই বিশ্বের একমাত্র নেতা যিনি ইউক্রেন যুদ্ধের স্থায়ী অবসান ঘটাতে পারেন।"

"আমরা রাশিয়ানদের আলোচনার টেবিলে আনতে চাই। শান্তি আনা সম্ভব কি না তা আমরা দেখতে চাই," বলেন রুবিও।

ট্রাম্প প্রশাসনের কোনো কর্মকর্তার প্রকাশ্যে দেয়া এটাই প্রথম মন্তব্য।

'ওভাল অফিসে জেলেনস্কি অধিকার ফলাতে গিয়েছিলেন'

ইউক্রেনে সামরিক সহায়তা স্থগিত ঘোষণার আগে ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স ফক্স নিউজকে একটি সাক্ষাৎকার দিয়েছেন।

ভ্যান্স সংবাদের হোস্ট শন হ্যানিটিকে বলেছেন, বৈঠকের শুরুতে ট্রাম্প ডিপ্লোমেটিক হওয়ার চেষ্টা করেছিলেন।

এক সাংবাদিকের প্রশ্নের উত্তরে ভ্যান্স কলেছেন, তিনি এমন কিছু বলেছিলেন যা জেলেনস্কিকে কিছুটা বিরক্ত করেছিল।

"প্রথমে পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত করার চেষ্টা করেছি আমি," বলেন ভ্যান্স।

তিনি বলে, "জেলেনস্কির সম্মানের অভাব ছিল... তিনি অধিকার ফলাতে গিয়েছিলেন"।

" শান্তি প্রক্রিয়ায় জড়িত হতে স্পষ্টতই অনিচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন," বলেন ভ্যান্স। তবে অবশেষে সেখানে তিনি পৌঁছাবেন বলে মন্তব্য করেন ভাইসপ্রেসিডেন্ট।

শান্তি আলোচনা শুরু করার 'দরজা খোলা'

ভাইসপ্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স সাক্ষাৎকারে আরও বলেন, সমঝোতা করতে ট্রাম্প ও জেলেনস্কির জন্য "অবশ্যই দরজা খোলা রয়েছে" তবে একটি শর্ত সাপেক্ষে।

"যতক্ষণ পর্যন্ত জেলেনস্কি সিরিয়াসলি শান্তি আলোচনা করতে ইচ্ছুক ততক্ষণ পর্যন্ত ওভাল অফিস বা অন্য কোথাও এসে শান্তি চুক্তির বিস্তারিত আলোচনা করতেও অস্বীকার করতে পারবেন না," বলেন ভ্যান্স।

ভ্যান্স জানান সমস্যা হলো জেলেনস্কি নিরাপত্তার নিশ্চয়তা ছাড়া শান্তির কথা বলতে ইচ্ছুক ছিলেন না। হোয়াইট হাউস বলেছে শান্তি চুক্তির পরে আলোচনা হওয়া উচিত।

"যখন তারা শান্তির কথা বলতে ইচ্ছুক, আমার মনে হয় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পই হবেন প্রথম ব্যক্তি যিনি ফোনটি তুলবেন," বলেন ভ্যান্স।

এদিকে, রোববারের সামিটে ইউরোপীয়ান নেতারা বলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের সাহায্য ছাড়া তারা ইউক্রেনে শান্তি নিশ্চিতের গ্যারান্টি দিতে পারবেন না।

ভ্যান্স বলেন, "ইউরোপীয়ানরা জনসমক্ষে কী বলে, তাতে আসলেই আমার কিছু যায় আসে না। তবে তারা একান্তে কী বলে সে বিষয়টিকে আমি গুরুত্ব দেই। "