রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে সম্ভাব্য শান্তি চুক্তির অংশ হিসেবে ইউক্রেনে একটি ‘বাফার জোন’ তৈরি করা হতে পারে। সেক্ষেত্রে ওই বাফার জোনে শান্তিরক্ষায় ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন ন্যাটো বহির্ভূত দেশগুলোর মধ্যে সৌদি আরব ও বাংলাদেশি সেনা মোতায়েনের কথা বিবেচনা করছে। মার্কিন সংবাদমাধ্যম এনবিসির এক প্রতিবেদনে এমনটা জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যদি রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে কখনও শান্তি চুক্তি হয়, তাহলে ইউক্রেনের অভ্যন্তরে একটি বৃহৎ বাফার জোন তৈরি ও রক্ষণাবেক্ষণে নেতৃত্বের ভূমিকা নিতে পারে যুক্তরাষ্ট্র। বাফার জোনটি হবে একটি বৃহৎ বেসামরিক এলাকা, যা ইউক্রেনকে ভবিষ্যতে রাশিয়ার আক্রমণ থেকে রক্ষা করার উদ্দেশ্যে গড়ে তোলা হবে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রযুক্তিগত সক্ষমতার কারণে যুক্তরাষ্ট্র ড্রোন ও স্যাটেলাইটের পাশাপাশি অন্যান্য গোয়েন্দা সক্ষমতা ব্যবহার করে বাফার জোন পর্যবেক্ষণে নেতৃত্ব দেবে। তবে এক্ষেত্রে অন্যান্য দেশগুলোর সাথেও সমন্বয় করা হবে।
এরপর ওই বাফান জোন এক বা একাধিক ন্যাটোর সদস্য নয় এমন দেশের সেনা মোতায়েন করা যেতে পারে, যেমন সৌদি আরব বা বাংলাদেশের সেনা। সেখানে কোনো মার্কিন সেনা মোতায়েন করা হবে না। ইউক্রেনে এমন বাফান জোন তৈরির ধারণা নিয়ে এর আগে আরেক মার্কিন সংবাদমাধ্যম পলিটিকো প্রতিবেদন করেছিল।
এনবিসি নিউজ আরও জানায়, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এখন ক্রমশ হতাশ হয়ে পড়ছেন, কারণ রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ দ্রুত শেষ হওয়ার কোনো সম্ভাবনা তিনি দেখতে পাচ্ছেন না। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সরাসরি বৈঠকের সম্ভাবনাও খুব একটা নেই বলে মনে করছেন তিনি।
গত মাসে আলাস্কায় ট্রাম্পের সঙ্গে পুতিনের বহুল আলোচিত এক শীর্ষ বৈঠক অনুষ্ঠিত হলেও যুদ্ধ শেষ করতে রাশিয়ার শর্তগুলো শিথিল করার মতো পরিস্থিতি দেখা যায়নি। এখন পর্যন্ত এমন বৈঠকের জন্যও মস্কোর পক্ষ থেকে কোনো ইতিবাচক ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি। রয়টার্স জানিয়েছে, তারা স্বাধীনভাবে এনবিসির এই খবরের সত্যতা নিশ্চিত করতে পারেনি। আর হোয়াইট হাউসও রয়টার্সের মন্তব্যের অনুরোধে সাড়া দেয়নি।
এনবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইউক্রেনের নিরাপত্তা নিশ্চয়তা নিয়ে নতুন পরিকল্পনা সামনে আসলেও তা বাস্তবায়নে বড় বাধা রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ন্যাটো জড়িত থাকা কিংবা ন্যাটোর কোনো ছাপ থাকাই তার জন্য সংবেদনশীল বিষয়। এ কারণে পরিকল্পনাকারীরা বিশেষভাবে সতর্ক, যাতে এতে ন্যাটো সেনা বা ন্যাটোর কোনো প্রতীকী উপস্থিতি না থাকে।
পরিকল্পনা অনুযায়ী, ইউক্রেনের নিরাপত্তা নিশ্চয়তা ন্যাটোর ধারা ৫-এর (একজন সদস্যের ওপর আক্রমণ মানেই সবার ওপর আক্রমণ) বাইরে গিয়েই দেওয়া হবে। এর পরিবর্তে ন্যাটো-বহির্ভূত দেশের সেনা এবং ইউক্রেন ও তার মিত্রদের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক চুক্তির মাধ্যমে নিরাপত্তা নিশ্চয়তা দেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে।
তবে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়নি। এ বিষয়ে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এবং সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর নেতাদের সম্মতি প্রয়োজন হবে। এর মধ্যে রয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও।