
বাংলাদেশের চলচ্চিত্র ইতিহাসে নব্বইয়ের দশকের জনপ্রিয় নায়ক সালমান শাহ; যিনি আজও ভক্তদের হৃদয়ে অমর। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার একটি পুরনো ভিডিও ভাইরাল হয়েছে, যেখানে তিনি নিজের স্বপ্ন, শুরুর দিনগুলোর সংগ্রাম ও অভিনয়ে আসার গল্প শেয়ার করেছেন।
ভিডিওতে সালমান শাহকে বলতে শোনা যাচ্ছে, পঞ্চম শ্রেণিতে পড়াশোনা করতে করতেই তিনি মডেলিং শুরু করেন। তারপর অডিশনে পাস করে নাটকে অভিনয় করতে থাকেন। কিন্তু তখন পর্যন্তও সিনেমায় আসার কথা তিনি ভাবেননি।
তিনি আরো বলছিলেন, এক দিন পরিচালক সোহানুর রহমান সোহান ভাই আমাকে ফোন করেন। নিজের পরিচয় দেন। তখন আমার নিয়মিত একটি বিজ্ঞাপন টিভিতে প্রচার হচ্ছিল। সোহান ভাই সেটি দেখে আমার সম্পর্কে জানার চেষ্টা করেন। খোঁজখবর নিয়ে এক দিন বিকালে তিনি আমাকে ফোন করেন।
সেই বিকালের ফোনের বিষয়ে অভিনেতা বলেন, সোহান ভাই আমার সঙ্গে ছবির বিষয়ে কথা বলতে চেয়েছিলেন। আমরা একদিন বসলাম। তিনি আমাকে অভিনয়ের জন্য প্রস্তাব দিলেন। হিন্দি সিনেমা ‘কেয়ামত সে কেয়ামত’-এর বাংলা করতে চান। তিনি জানান, আমি সিনেমাটি করলে তিনি খুশি হবেন। তবে হঠাৎ এই প্রস্তাবের কথা শুনে সালমান শাহ খুশিও হয়েছিলেন।
কিন্তু পেশা হিসেবে নয় একেবারে শখের বশেই তিনি অভিনয় করেন। সালমান জানান, যেই সিনেমাটির প্রস্তাব পেয়েছেন সেটি আগেই দেখা ছিল তার। আমির খান আর জুহি চাওলার অভিনয় দেখে অভিভূত হয়েছিলেন তিনি। তখন মনে মনে ভাবেন এমন চরিত্র যদি করতে পারতাম বা এমন কোনো গল্প আমাকে কেউ দিত। অথবা এই ছবিটাও যদি বাংলাদেশে হতো, আমি যদি সেটিতে অভিনয় করতে পারতাম, তা হলে খুব খুশি হতাম। অভিনয় করে আনন্দ পেতাম।
এই নায়ক আরও বলেন, আমার মনে নাড়া দেওয়া সেই স্বপ্ন সোহান ভাইয়ের মুখ থেকে শুনে মনে হচ্ছিল আমার স্বপ্নটা সফল হতে যাচ্ছে, কিন্তু কী সিদ্ধান্ত নেব বুঝতে পারছিলাম না। তারপর পরিচালককে তিনি বলেন, আগে মা-বাবার সঙ্গে কথা বলতে হবে। কিন্তু সিনেমার কথা শুনে শুরুতে তারা সেভাবে রাজি হননি। কিন্তু ছেলের উৎসাহ দেখে তারা রাজি হন।
প্রথম সিনেমাতেই ভক্তের হৃদয়ে জায়গা করে নেন সালমান শাহ। ১৯৯৩ সালে ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ মুক্তির পর দেশব্যাপী তার পরিচিতি ছড়িয়ে পড়ে। সিনেমা জগতে খুব অল্প সময় পেলেও সর্বমোট ২৭টি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। ১৯৯৬ সালে ৬ সেপ্টেম্বর ভক্তদের কাঁদিয়ে না ফেরার দেশে পাড়ি জমান এই অভিনেতা।