ঢাকার খুব কাছের জেলা মুন্সীগঞ্জ। এখানকার সদর উপজেলার দুটি ইউনিয়ন রামপাল ও পঞ্চসারের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে চলছে জন্মনিয়ন্ত্রণ সামগ্রীর তীব্র সংকট। শুধু তাই নয় একটি সিরিঞ্জ পেতেও বেগ পেতে হয় স্বাস্থ্যকর্মীদের। রয়েছে প্রয়োজনীয় ওষুধেরও অভাব। প্রতিনিয়ত স্বাস্থ্য কেন্দ্রে এসে খালি হাতে ফিরতে হচ্ছে রোগীদের।
মুন্সীগঞ্জের মতো দেশের বিভিন্ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রেও রয়েছে প্রজনন স্বাস্থ্যের বিভিন্ন উপকরণের সংকট। গত প্রায় দুই বছর ধরে চাহিদার তুলনায় সরবরাহ নেমে এসেছে এক-চতুর্থাংশে।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর হিসাব বলছে, দেশে জন্মনিয়ন্ত্রণ উপকরণের ৩৭ শতাংশ আসে সরকারি খাত থেকে, বেসরকারি থেকে ৫৭ শতাংশ, বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা থেকে ৩ শতাংশ এবং অন্যান্য উৎস থেকে আসে ৪ শতাংশ উপকরণ।
পরিবার পরিকল্পনা অধিদফতরের তথ্যমতে, সরকারিভাবে প্রতি মাসে সাধারণত ৬০ থেকে ৭০ লাখ খাওয়ার বড়ি বিতরণ করা হয়, ইনজেক্টেবল ৭ থেকে ১০ লাখ, কনডম ৭০ লাখ থেকে ১ কোটি, এছাড়া অন্যান্য সামগ্রী দেয়া হয় ৭০ হাজারের মতো।
তবে সরবরাহ না থাকায় গত দুই বছরে তা কমে এসেছে আশঙ্কাজনক হারে।
এদিকে নারীর ক্ষমতায়ন আর ন্যায্যতার প্রশ্নে প্রজনন স্বাস্থ্য সবার শীর্ষে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
মেরিস্টোপস বাংলাদেশের পার্টনারশিপ অ্যান্ড ফান্ড রাইজিং হেড মনজুন নাহার বলেন, আমরা যখন নারীর ন্যায্যতা ও ক্ষমতায়ন নিয়ে কথা বলবো, তখন প্রজনন স্বাস্থ্যকে সবার আগে গুরুত্ব দিতে হবে। কিন্তু বর্তমানে এ বিষয়ে আমরা বিপর্যয়ের সামনে আছি। সঠিক সময়ে উপকরণ সরবরাহ নিশ্চিত করতে না পারলে অপ্রত্যাশিত গর্ভধারণ, মাতৃমৃত্যুর আশঙ্কা করেন তিনি।
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর অধিদফতরে নেতৃত্বের সংকটের কথা জানিয়ে মহাপরিচালক ডা. আশরাফী আহমেদ বলেন, সরবরাহ স্বাভাবিক করতে নেয়া হচ্ছে নানা পদক্ষেপ। টেন্ডারসহ অন্যান্য কাজ শেষ, আগস্টের মধ্যে সরবরাহ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে পারে বলে জানান তিনি।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের এমপিডিএসআরের গবেষণা অনুযায়ী প্রজনন স্বাস্থ্যসহ অন্যান্য সংকটে ২০২৪ সালে প্রতি লাখে মারা গেছেন ৯০ জন মা। সময়