News update
  • Cyber Protection Ordinance draft approved in Advisers’ Council     |     
  • Life Expectancy Gap Tops 30 Years: UN Report      |     
  • Khaleda Zia Returns Home After Four Months in London     |     
  • World marks 80th anniv of V-E Day with parades and memorials     |     

ভারতে মানবাধিকারের কথা মোদীকে বলেছি : জো বাইডেন

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক কুটনীতি 2023-09-12, 3:12pm

oiuieufufouqfuj-d7b02686832ad130ac3e139f0dbf5e6f1694509974.jpg




মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন জানিয়েছেন, তাঁর সদ্যসমাপ্ত ভারত সফরে তিনি ভারতের মানবাধিকার পরিস্থিতি এবং একটি মুক্ত সংবাদমাধ্যমের প্রয়োজনীয়তার বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে তাঁর আলোচনায় তুলেছিলেন।

বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী কুড়িটি অর্থনীতির জোট জি২০-র শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতেই মি বাইডেন ভারতে গিয়েছিলেন। ওই সম্মেলনের অবকাশেই তিনি মি মোদীর সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকও করেন।

অবশ্য রবিবার (১০ সেপ্টেম্বর) সম্মেলন শেষ হওয়ার আগেই তিনি ভারত থেকে ভিয়েতনামের উদ্দেশে রওনা দেন।

ভিয়েতনামের হ্যানয়ে একটি সাংবাদিক সম্মেলনেই প্রেসিডেন্ট বাইডেন ওই মন্তব্যটি করেন। সেখানে তিনি আরও জানান, ভারত-মার্কিন সম্পর্ককে কীভাবে আরও শক্তিশালী করে তোলা যায় তা নিয়ে মি মোদীর সঙ্গে তাঁর ‘বিশদ আলোচনা’ হয়েছে।

এর আগে হোয়াইট হাউস সূত্রেও বলা হয়েছিল, দিল্লিতে মোদী-বাইডেন বৈঠকের পর আমেরিকার পক্ষ থেকে একটি যৌথ সাংবাদিক বৈঠক আয়োজনের অনুরোধ জানানো হলেও ভারত তাতে রাজি হয়নি।

মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেক সুলিভান আরও জানিয়েছিলেন যে তারা প্রেসিডেন্ট বাইডেন ও প্রধানমন্ত্রী মোদীর বৈঠকের সময় আনুষ্ঠানিক সাংবাদিক সম্মেলন না-হোক, অন্ততপক্ষে একটি ‘প্রেস পুল স্প্রে’-র ব্যবস্থা করারও আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন – কিন্তু সেই অনুরোধও প্রত্যাখ্যান করা হয়।

এই ধরনের ‘প্রেস পুল স্প্রে’ হোয়াইট হাউসে নিয়মিতই হয়, যেখানে একঝাঁক সাংবাদিক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বা সফররত বিশ্বনেতাদের প্রশ্ন করার সুযোগ পান।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র অবশ্য এদিন বিবিসিকে জানিয়েছে, মার্কিন প্রেসিডেন্টের ভারতে আসাটা কোনও পূর্ণাঙ্গ দ্বিপাক্ষিক সফর ছিল না – কাজেই শুধু আলাদা করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ও ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর যৌথ সাংবাদিক সম্মেলনের আয়োজনেরও কোনও প্রশ্ন ছিল না।

তবে প্রেসিডেন্ট বাইডেন নিজেই এদিন ভিয়েতনামে স্পষ্ট করে দিয়েছেন, ভারতে যেভাবে মিডিয়া বা সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে আচরণ করা হচ্ছে তাতে তার প্রশাসন মোটেই সন্তুষ্ট নয়।

‘ভারতে সংখ্যালঘুরা আক্রান্ত’

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আমলে ভারতের মানবাধিকার পরিস্থিতির ক্রমশ যে অবনতি হচ্ছে, অ্যাক্টিভিস্ট ও অধিকার আন্দোলনের কর্মীরা বহুদিন ধরেই সে কথা বলে আসছেন।

বিশেষ করে নরেন্দ্র মোদী ক্ষমতায় আসার পর থেকে সে দেশের ধর্মীয় সংখ্যালঘু, মূলত মুসলিমদের ওপর আক্রমণের ঘটনাও অনেক বেড়ে গেছে বলে তারা জানাচ্ছেন। যদিও নরেন্দ্র মোদী সরকার এই সব অভিযোগ দৃঢ়ভাবে অস্বীকার করে থাকে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন অবশ্য এদিন পরিষ্কার বুঝিয়ে দিয়েছেন, ভারতের সার্বিক মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে তারা সন্তুষ্ট নন।

হ্যানয়ে সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি বলেন, “আপনারা জানেন, মানবাধিকারকে মর্যাদা দেওয়াটা যে কতটা গুরুত্বপূর্ণ সেটা আমি সব সময় বলে থাকি। আর ওখানেও (দিল্লিতে) সেটা আমি উত্থাপন করেছি।”

“একটা সমৃদ্ধ ও শক্তিশালী দেশ গড়ে তুলতে সুশীল সমাজ ও মুক্ত সংবাদমাধ্যম যে কত বড় ভূমিকা পালন করতে পারে, সেটাও আমি মোদীকে বলেছি”, জানান প্রেসিডেন্ট বাইডেন।

রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডার (আরএসএফ) গত মে মাসে ওয়ার্ল্ড প্রেস ফ্রিডমের যে সর্বশেষ সূচক বা ইনডেক্স প্রকাশ করেছে, তাতে ভারতের অবস্থান ১১ ধাপ নেমে গেছে। ১৮০টি দেশের মধ্যে ভারতের র‍্যাঙ্কিং এখন ১৬১।

মি বাইডেন-সহ পশ্চিমা বিশ্বের নেতারা যাতে ভারতের সঙ্গে তাদের আলোচনায় এই বিষয়গুলো তোলেন, মানবাধিকার সংগঠনগুলো বহুদিন ধরেই সেই দাবি জানিয়ে আসছেন।

কিন্তু পর্যবেক্ষকরা বলছেন, চীনের উত্থানে রাশ টানার চেষ্টায় ভারতকে যেহেতু আমেরিকা খুব গুরুত্বপূর্ণ সহযোগী হিসেবে দেখে তাই এ ক্ষেত্রে মার্কিন প্রশাসন খুব সাবধানে পা ফেলতে চাইবে।

‘আমেরিকা জ্ঞান দিতে চায় না’

গত জুন মাসেই নরেন্দ্র মোদী যখন রাষ্ট্রীয় সফরে আমেরিকা গিয়েছিলেন, তখন মার্কিন প্রশাসন তাঁকে বিপুল অভ্যর্থনায় স্বাগত জানিয়েছিল।

সেই সফরের ঠিক আগেই মার্কিন নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেক সুলিভান বলেছিলেন, কোনও দেশে অধিকার যখন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ে তখন আমেরিকা অবশ্যই নিজস্ব মতামত তাদেরকে বুঝিয়ে দেয়।

“কিন্তু সেটা আমরা এমনভাবে মনে করি যাতে না মনে হয় আমেরিকা জ্ঞান দিচ্ছে, কিংবা আমরা এমন কোনও ভাব দেখাই না যাতে মনে হয় আমাদের নিজেদের দেশে কোনও সমস্যা নেই”, সে সময় মন্তব্য করেছিলেন তিনি।

হ্যানয়ে প্রেসিডেন্ট বাইডেন ভারত-মধ্যপ্রাচ্য-ইউরোপ অর্থনৈতিক করিডর নিয়েও কথা বলেছেন, যে সমঝোতাটি দিল্লিতে জি২০ শীর্ষ সম্মেলনের সময়ই সম্পাদিত হয়েছে।

মি বাইডেন এই করিডরকে একটি ‘গ্রাউন্ডব্রেকিং পার্টনারশিপ’ বা ‘যুগান্তকারী অংশীদারি’ বলেও বর্ণনা করেন।

এই করিডরে সৌদি বা আমিরাতের মতো মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোকে রেলপথে সংযুক্ত করার এবং তারপর সমুদ্রপথে একদিকে তাদের ভারতের সাথে ও অন্য দিকে ইউরোপের সাথে সংযুক্ত করার উচ্চাকাঙ্ক্ষী পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।

বিশ্লেষকরা অনেকেই মনে করছেন, চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবেই এই প্রকল্পের রূপরেখা তৈরি করা হয়েছে।

এর আগে গত শুক্রবার (৮ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় জি-টোয়েন্টি শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে প্রেসিডেন্ট বাইডেন দিল্লিতে গিয়ে পৌঁছান।

সে দিন রাতেই প্রধানমন্ত্রী মোদীর সরকারি বাসভবনে দুজনের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এর পর মি বাইডেনকে প্রধানমন্ত্রী মোদী নৈশভোজে আপ্যায়িত করেন।

ওই আলোচনা বা নৈশভোজের পর সাংবাদিকরা দুই নেতাকে প্রশ্ন করার কোনও সুযোগই পাননি।

বস্তুত ২০১৪তে ভারতের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর থেকে নরেন্দ্র মোদী আজ পর্যন্ত এককভাবে কোনও সাংবাদিক সম্মেলনই করেননি।

না। মোদী-বাইডেন দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের পর ভারতের পক্ষ থেকে জারি করা বিবৃতিতে জানানো হয়েছিল, দুই নেতাই বিভিন্ন বিষয়ে সহযোগিতার অঙ্গীকার করেছেন। বিবিসি নিউজ বাংলা