News update
  • BD fisherman killed in firing from Myanmar; 2 injured     |     
  • Live updates on ME from the Security Council and across UN     |     
  • ‘No end to hell’ in northern Gaza, warns UN aid agency chief     |     
  • Dhaka’s air quality turns ‘unhealthy’ Thursday morning     |     

ভারতকে কাঁদিয়ে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া

গ্রীণওয়াচ ডেক্স ক্রিকেট 2023-11-20, 7:58am

resize-350x230x0x0-image-248608-1700409413-8e42218b8b338f46772e83b955b9f89e1700445481.jpg




চলমান ওয়ানডে বিশ্বকাপে টানা ১০ ম্যাচ জিতে উড়ছিল ভারত। এতে ঘরের মাঠে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বপ্ন দেখছিল রোহিত শর্মার দল। এমন প্রত্যাশা থেকেই আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামে প্রায় লাখখানেক দর্শক উপস্থিত হয়েছিল। পুরো স্টেডিয়ামে যেন রূপ নিয়েছিল ‘নীল সাগরে’। তবে সেই ‘নীল সাগরেই’ স্বাগতিকদের ডুবিয়ে রেকর্ড ষষ্ঠ শিরোপা জয়ের উল্লাসে মাতে অস্ট্রেলিয়া।

রোববার (১৯ নভেম্বর) আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে আইসিসি ওয়ানডে বিশ্বকাপের ১৩তম আসরের ফাইনালে প্রথমে ব্যাট করে নির্ধারিত ৫০ ওভারে সবকটি উইকেট হারিয়ে ২৪০ রান সংগ্রহ করে ভারত। জবাবে লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ৪৭ রানের মধ্যেই ৩ উইকেট হারিয়ে বিপর্যয়ে পড়েছিল অস্ট্রেলিয়া।

এরপর ১৯২ রানের অতিমানবীয় জুটি গড়েন ট্রাভিস হেড ও মার্নাস লাবুশেন। হেড ১৩৭ রান করে ফিরলেও লাবুশেন ৫৮ রানে অপরাজিত থেকে ৪২ বল হাতে রেখে ৬ উইকেটের জয় তুলে নেয় অজিরা। এতে রেকর্ড ষষ্ঠবারের মতো বিশ্বচ্যাম্পিয়নের খেতাব পেল প্যাট কামিন্সের দল।

এদিন টস জিতে আগে বোলিং করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন অজি অধিনায়ক প্যাট কামিন্স। তবে ভারতের আগ্রাসী ব্যাটিংয়ের সামনে প্রথম ১০ ওভারের মধ্যে খুব একটা সুবিধাও করতে পারেননি মিচেল স্টার্ক-জশ হ্যাজেলউডরা। দলীয় ৩০ রানের মাথায় শুভমান গিল ফিরে যান। স্টার্কের বলে বিদায়ের আগে ৭ বলে মাত্র ৪ রান করেন তিনি। তবে গিল ফিরলেও রানের চাকা ঠিকই সচল রেখেছিলেন রোহিত শর্মা এবং বিরাট কোহলি।

তবে এরপরেই যেন লাগাম টেনে ধরেছে অজি বোলাররা। অষ্টম ওভারে প্রথমবারের স্পিন আক্রমণে আনেন প্যাট কামিন্স। গ্লেন ম্যাক্সওয়েলকেও পাত্তা দিচ্ছিলেন না রোহিত। ওভারের দ্বিতীয় বলেই লং অনের ওপর দিয়ে মেরেছেন ছক্কা। পরের বলে চার। তবে মোমেন্টাম ধরে রাখতে পারলেন না আর। ক্যাচ উঠেছিল কাভারে। পেছন দিকে ছুটে ট্রাভিস হেড নিয়েছেন দুর্দান্ত ক্যাচ। রোহিত থামলেন ৩১ বলে ৪৭ রান করে।

রোহিতের পর উইকেটে এসে আক্রমণাত্মক শুরুর চেষ্টা করেছিলেন শ্রেয়াস আইয়ার। তবে ৩ বলে ৪ রান করে ফেরেন তিনিও। কামিন্সের বল ব্যাটের বাইরের দিকের কানায় লেগে বল চলে যায় উইকেটকিপারের গ্লাভসে। পুরো ম্যাচে ভারত এদিন ভুগেছে বাউন্ডারির অভাবে। বল সীমানাছাড়া করতে যেন হাপিত্যেশ করেছেন কোহলিরা। রোহিত-আইয়ার ফিরে যাওয়ার পর ১৫ ওভারের বেশি বাউন্ডারি পায়নি ভারত।

কোহলি আর রাহুল ইনিংস মেরামত করেছেন ঠিকই। তবে তাতে রানরেট কমেছে অনেকটাই। তবে এরইমাঝে টানা ৫ম ফিফটি তুলে নিয়েছেন কোহলি। আসর জুড়ে দুর্দান্ত ব্যাটিং করা এই টপ অর্ডার ব্যাটার ফাইনালে এসেও ফিফটির দেখা পেলেন। ৫৬ বলে এই মাইলফলক ছুঁয়েছেন। এটি তার টানা পঞ্চম পঞ্চাশোর্ধ্ব ইনিংস। সবমিলিয়ে আসরে ১০ ম্যাচের ৮টিতেই পঞ্চাশোর্ধ্ব ইনিংস খেলেছেন তিনি।

তবে ফিফটির পরেই ফিরতে হয়েছে কোহলিকে। কামিন্সের লাফিয়ে ওঠা বলে কাট করতে গিয়ে ইনসাইড এজে ফিরে যান তিনি। এরপর জাদেজা এসেছিলেন। কিন্তু তিনিও ভারতকে বড় কিছু এনে দিতে পারেননি। ৩৬তম ওভারের পঞ্চম বলে হ্যাজলউডের খাটো লেন্থের ডেলিভারীতে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়েছেন তিনি। সাজঘরে ফেরার আগে তার ব্যাট থেকে এসেছে ২২ বলে ৯ রান।

কিন্তু এরইমাঝে শুরু হয়েছে ভারতের দ্বিতীয় দফার বাউন্ডারি খরা। ইনিংসের ৩০তম ওভারে বাউন্ডারির পর যেন বল আর সীমানা পার হতেই চাইছিল না। সিঙ্গেলস আর ডাবলই হয়ে যায় রাহুল-সূর্যকুমার যাদবের ভরসা। ধীরগতিতে ব্যাট চালিয়ে রাহুল ফিফটি তুলেছেন ৮৫ রানে।

অস্ট্রেলিয়ার হয়ে বল হাতে মিচেল স্টার্ক একাই ৩টি উইকেট শিকার করেন। জশ হ্যাজেলউড ও প্যাট কামিন্স পান ২টি করে উইকেট। এছাড়া অ্যাডাম জাম্পা ও গ্লেন ম্যাক্সওয়েল নেন ১টি করে উইকেট।

যদিও ২৪১ রানের লক্ষ্যে বোলিং যেমন হওয়া দরকার ছিল শুরুতে ঠিক তেমনই বল করেছেন ভারতের বোলাররা। জাসপ্রিত বুমরাহ আর মোহাম্মদ শামিকে শুরুতে সামাল দিতে পারেনি অজি ব্যাটিং লাইন-আপ। ডেভিড ওয়ার্নার, মিচেল মার্শ আর স্টিভেন স্মিথ তিনজনেই পরাস্ত হয়েছেন দুর্বল ফুটওয়ার্ক আর নিজেদের ভুলে। দ্রুত ৩ উইকেট তুলে নিয়ে ভারতের শিরোপা স্বপ্নও তখন জ্বলজ্বল করছিল।

তবে ম্যাচে ভারতের সুখ টিকেছে ওই পর্যন্তই। এক প্রান্তে টিকে থাকা ওপেনার ট্রাভিস হেড এরপর থেকে ভারতের মাথাব্যথা ক্রমেই বাড়িয়েছেন আর আরেক প্রান্তে মার্নাস ল্যাবুশেন ছিলেন চীনের প্রাচীর হয়ে। চতুর্থ উইকেট জুটিতে এ দুজন ম্যাচটাকে ছিনিয়ে নেন স্বাগতিকদের হাত থেকে। তাদের প্রায় অবিচ্ছিন্ন জুটিতে আহমেদাবাদের গ্যালারিতে নামে শ্মশানের নীরবতা।

এর মাঝে গোটা ম্যাচে আর একবারই সুযোগ পেয়েছিল ভারত। বুমরাহর বলে এলবিডব্লিউর আবেদন ছিল হেডের বিরুদ্ধে। সে আবেদন ফিরিয়ে দেন আম্পায়ার। পরে রিভিউতে দেখা গেল সেটি ছিল আম্পায়ার্স কল। অর্থাৎ আম্পায়ার আউট দিলে আউট হয়ে যেতেন ট্রাভিস হেড। তখনো জয় বেশ দূরেই ছিল।

এদিকে, লম্বা জুটি গড়ার পথে সেঞ্চুরিও পেয়ে গেছেন অস্ট্রেলিয়ান ওপেনার ট্রাভিস হেড। ৯৫ বলে স্পর্শ করেন তিন অঙ্কের ম্যাজিক ফিগার। ব্যাটিং সহায়ক নয় এমন পিচে কী অসাধারণ ব্যাটিংই না করলেন হেড। চোখে লেগে থাকার মতো একটা ইনিংস খেলেছেন অজি ওপেনার। গোটা ইনিংসে ওই এলবিডব্লিউর আপিল ছাড়া কোনো সুযোগ দেননি তিনি। ম্যাচটা অবশ্য শেষ করা হয়নি ট্রাভিস হেডের। জয় থেকে মাত্র ২ রান দূরে থাকতে মোহাম্মদ সিরাজের বলে আউট হয়েছেন তিনি। তবে এর আগেই খেলে ফেলেন ১৩৭ রানের ম্যাচজয়ী ইনিংস।

৯৯ বলে ধৈর্যশীল এক ইনিংস খেলে ওদিকে অর্ধশতকের দেখা পান ল্যাবুশেন। হেড-লাবুশেন দুজনের সেঞ্চুরি আর হাফ সেঞ্চুরিতে ভর করে ২০১৯ সালে হারিয়ে ফেলা বিশ্বকাপটা আজ আবারও ফিরছে অস্ট্রেলিয়াতে। এর আগে ২০১৫ সালের বিশ্বকাপ জিতেছিল অস্ট্রেলিয়া। তারও আগে ২০১১ বাদ দিলে ২০০৭, ২০০৩, ১৯৯৯ তিনবারই শিরোপা ঘরে নিয়েছিল তাসমান সাগর পাড়ের দেশটি। তথ্য সূত্র আরটিভি নিউজ।