News update
  • Dhaka seeks global pressure on Myanmar for lasting peace     |     
  • BSEC Chairman’s resignation urged to stabilise stock market     |     
  • Rain, thundershowers likely over 8 divisions: BMD     |     
  • First freight train leaves Mongla carrying molasses     |     
  • 2 dead, six hurt in Sherpur micro-autorickshaw-motorbike crash     |     

ভারত-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীর: লোকসভা নির্বাচন তরুণদের জন্য নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি করছে

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক গনতন্ত্র 2024-05-14, 11:28am

dytrurtu-13286c713d51a70fadffa89dc253b6431715664513.jpg




ভারতের লোকসভায় প্রতিনিধি নির্বচনের জন্য ভারত-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের ভোটাররা ১৩ মে থেকে ২৫ মে পর্যন্ত ভোট দেবেন। স্থানীয় গণমাধ্যমের খবরে দাবী করা হয়েছে যে শ্রীনগরে ১৭ লক্ষের বেশী ভোটার ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবেন তাদের প্রার্থী। শ্রীনগরের আসনের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ২৪ জন প্রার্থী।

ভারতে কয়েক সপ্তাহ ধরে যে সাধারণ নির্বাচন চলছে এটা তারই অংশ। এপ্রিলের শেষের দিকে শুরু হওয়া নির্বাচন জুন মাস পর্যন্ত চলবে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তৃতীয় মেয়াদের জন্য ক্ষমতায় আসতে চাইছেন।

মোদী সরকার মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ কাশ্মীরের আধা-স্বায়ত্ত শাসনের মর্যাদা কেড়ে নেওয়ার প্রায় পাঁচ বছর পর এই ভোট অনুষ্ঠিত হচ্ছে। কাশ্মীরে আধা-স্বায়ত্তশাসনের বিলুপ্তি ঘটে ২০১৯ সালের আগস্ট মাসে, ফলে ঐ অঞ্চলটিকে দুটি ফেডারেল অঞ্চলে বিভক্ত করা হয় - জম্মু ও কাশ্মীর এবং লাদাখ। উভয় অঞ্চলই কেন্দ্রীয় সরকারের শাসনাধীন এবং তাদের নিজস্ব কোনও আইনসভা নেই।

মোদীর ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) ভারত-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে না। খবরে বলা হয়েছে, ২০১৯ সালে মোদী সরকারের গৃহীত পদক্ষেপ নিয়ে সেখানে যে অসন্তোষ বিরাজমান এই পদক্ষেপটি তারই ইঙ্গিত বহন করে এবং বিজেপি প্রার্থীরা সেখানে হেরে যাবে এমন জল্পনা-কল্পনাও রয়েছে।

নির্বাচন কেন গুরুত্বপূর্ণ?

এলাকাবাসীরা জানান, ভারতের সাধারণ নির্বাচন কাশ্মীরের জনগণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। তাদের বক্তব্য, ভারতীয় সংবিধানে তাদের যে অধিকার দেওয়া হয়েছিল মোদী সরকার তা কেড়ে নিয়েছে।

“স্থানীয় বাসিন্দাদের জন্য কোন কিছু আর আছে কি? এখানকার নন, এমন লোকজনদেরকে আমাদের জমিজমা দিয়ে দেওয়া হয়েছে, তারা আমাদের চাকরিগুলো নিয়ে নিয়েছে, আমাদের এখান থেকে ভারতের অন্যান্য রাজ্যে বিদ্যুৎ পাঠানো হয় এবং আপনি যেদিকেই তাকাবেন দেখবেন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা জম্মু-কাশ্মীরের নন,” বলেন ফায়াজ আহমেদ মালিক। ভয়েস অব আমেরিকাকে তিনি ভারতের কাশ্মীরের রাজধানীর ফতেহ কাদালে অঞ্চলের এক সমাবেশে ঐ মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, “আমি জীবনে আর কখনও ভোট দেই নি, তবে আজ আমি মনে করি যে এর প্রয়োজন আছে কারণ আমরা ভুগছি। মোদী ও তার দল চায় আমাদের ধ্বংস করতে কিন্তু তাকে আমাদের থামাতে হবে।”

কাশ্মীরের মর্যাদা পরিবর্তন

কাশ্মীর তার বিশেষ মর্যাদা হারানোর পর গত মার্চ মাসে মোদী প্রথমবারের মতো কাশ্মীর সফর করেন। কড়া নিরাপত্তার মধ্যে তিনি অঞ্চলের রাজধানী শ্রীনগরের বকশি স্টেডিয়ামে উপস্থিত জনতার উদ্দেশে বলেন, ২০১৯ সালে তার সরকার পদক্ষেপ নেওয়ার পর থেকে কাশ্মীরে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন এসেছে এবং সমৃদ্ধি ঘটেছে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষক এবং পডকাস্ট প্লেইন টকের উপস্থাপক মুজামিল মকবুল ভয়েস অফ আমেরিকাকে বলেন, এবার কাশ্মীরে রেকর্ড সংখ্যক মানুষ ভোট দেবেন বলে ধারনা করা হচ্ছে। তিনি বলেন, ২০১৯ সালের পর থেকে পরিস্থিতি পাল্টে গিয়েছে।

“ভারত সরকার এখানে সবসময় ভোটারদের অংশগ্রহণ বাড়াতে চেয়েছে কারণ, বছরের পর বছর এবং দশক ধরে কাশ্মীর ব্যাপকভাবে ভোট বয়কট করেছে,” মকবুল বলেন। তিনি আরও বলেন, “ভারত সরকার, রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান এবং অন্যরা সবসময় চেয়েছিল যে কাশ্মীরিরা যে প্রার্থীকেই নির্বাচিত করুন না কেন তারা যেন ভোট দেয় এবং ভারত সরকার এতে অত্যন্ত সফল হয়েছে।

মকবুল মনে করেন, জনগণ ভোট দিতে চায় এবং প্রকাশ্যে তাদের প্রার্থীদের সমর্থন করতে চায়। তিনি আরও বলেন, তরুণরা বিশেষকরে কাশ্মীরের মধ্যাঞ্চল, কাশ্মীরের দক্ষিণ এবং উত্তরাঞ্চলের তরুণরা গণতন্ত্রে যে ভোট শক্তিশালী তা দেখাতে খুবই আগ্রহী।

শ্রীনগরের বাসিন্দা গুল মোহাম্মদ খান বলেন, তিনি এমন একজন শক্তিশালী প্রার্থীই আশা করছেন যিনি মোদী ও অন্যান্য হিন্দু নেতাদের প্রকাশ্যে চ্যালেঞ্জ করার সাহস দেখাবেন।

“অতীতে কাশ্মীরি রাজনীতিবিদরা যারা ভারতকে সমর্থন করেছেন তারা এরকম সাহস দেখান নি। বরং তারা নয়াদিল্লির স্বার্থের সঙ্গে একাত্ববদ্ধ হয়েছে,” খান বলনে। “আমি এমন একজন নেতাকে আশা করি যার সুরে ভারতীয় নেতারা নাচবেন,” তিনি বলেন।

পিডিপি বনাম এনসি

আরেকজন রাজনৈতিক বিশ্লেষক অধ্যাপক নূর বাবা ভয়েস অফ আমেরিকাকে বলেন, কাশ্মীরে প্রতিযোগিতা হবে প্রাথমিকভাবে দুটি আঞ্চলিক রাজনৈতিক দলের মধ্যে: ন্যাশনাল কনফারেন্স বা এনসি, এবং পিপলস ডেমোক্র্যাটিক পার্টি বা পিডিপি।

মোদীর ক্ষমতাসীন দল কাশ্মীরের রাজনীতিকে ঢেলে সাজাতে উল্লেখযোগ্য প্রচেষ্টা করা সত্ত্বেও তারা ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানান বাবা। ভারতের প্রধান বিরোধী দল ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল কংগ্রেস বা আইএনসি ন্যাশনাল কনফারেন্সকে সমর্থন করছে।

“শ্রীনগরে ন্যাশনাল কনফারেন্সের প্রার্থীর প্রতি ভোটারদের সমর্থন রয়েছে, অন্যদিকে পিডিপি প্রার্থীও কিছুটা সহানুভূতি বা সমর্থন পেয়েছেন কারণ তারা ২০১৯ পরবর্তী রাজনীতির শিকার হয়েছেন,” বাবা বলেন।

“ঐতিহাসিকভাবে দীর্ঘকালের উপস্থিতি এবং সামাজিক ভিত্তি শক্তিশালী হওয়ার কারণে এনসির জন্য সুবিধাজনক,” তিনি বলেন।

ন্যাশনাল কনফারেন্সের প্রাদেশিক সভাপতি নাসির আসলাম ওয়ানি এবং শ্রীনগরের ন্যাশনাল কনফারেন্সের প্রার্থী আগা সৈয়দ রুহুল্লাহ মেহেদির সাথে তাদের মতামতের জন্য যোগাযোগ করা হয়েছিল কিন্তু তাদের ফোন বন্ধ ছিল।

পিডিপি সম্পর্কে এমন একটি ধারণা বিদ্যমান আছে যে, বিজেপি জোটভুক্ত দলের সাথে সরকার গঠন করে তারা বিজেপিকে কাশ্মীরে রাজনৈতিকভাবে পুনর্বাসন করতে ভূমিকা রেখেছিল। “পিডিপি কাশ্মীরে বিজেপির রাজনীতিকে ঢেলে সাজাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল,” বাবা বলেন।

তবে, ২০১৯ সালে ক্ষমতাসীন বিজেপি কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল করার ঠিক আগে পিডিপিকে দেওয়া তাদের সমর্থন প্রত্যাহার করে নেয় এবং তাদের জোটের অবসান ঘটায়। বর্তমানে পিডিপি মোদীর দলের কট্টর প্রতিদ্বন্দ্বী।

কাশ্মীরে “২০২৪ সালের নির্বাচন আগের নির্বাচনের থেকে ভিন্ন,” পিপলস ডেমোক্র্যাটিক পার্টির শীর্ষ যুব নেতা তারিক আহমেদ ভাট ভিওএকে বলেন। “প্রত্যাশা অনেক বেশি, বিশেষ করে তরুণদের মধ্যে, যারা ভারতের সংসদে সত্যিকার অর্থে তাদের জন্য প্রতিনিধিত্ব করবে এমন প্রার্থী খুঁজছেন।”

"আগে জনগণ নির্বাচনকে নেতিবাচক ভাবে দেখত, বিশ্বাস করত যে ভোটের মধ্য দিয়ে কোন পার্থক্য ঘটবে না। আজ আমি পরিবর্তনটা দেখতে পাচ্ছি । মানুষ বুঝতে পেরেছে অযোগ্য প্রার্থীদের দ্বারা দেশ শাসন করা চলে না,” ভাট আরও বলেন।

ব্রিটিশ শাসন থেকে ১৯৪৭ সালে স্বাধীনতা লাভের পর থেকে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে জম্মু ও কাশ্মীর একটি বিতর্কিত হিমালয় অঞ্চল। কাশ্মীর নিয়ে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে দুইবার যুদ্ধ হয়েছে। উভয় দেশই তার নিয়ন্ত্রণাধীন অঞ্চল শাসন করে।