ইভিএম নিয়ে ইলন মাস্কের একটি টুইট ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে ভারতের রাজনীতির মাঠ। ছবি: সংগৃহীত
ভারতের লোকসভা নির্বাচনের পরও নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন বা ইভিএম নিয়ে। যার নেপথ্যে রয়েছে টেসলার সিইও ইলন মাস্কের একটি টুইট। আর এই টুইটকে কেন্দ্র করেই বিতর্কে জড়িয়ে পড়েছে ক্ষমতাসীন দল বিজেপি এবং বিরোধী দল কংগ্রেস ও সমাজবাদী পার্টি (এসপি)।
রোববার (১৬ জুন) সকালে নিজের এক্স (সাবেক টুইটার) অ্যাকাউন্ট থেকে একটি টুইট করেন ইলন মাস্ক। সেখানে তিনি লেখেন, আমাদের ইভিএম ত্যাগ করা উচিত। কারণ, মানুষ কিংবা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) সাহায্যে এটিকে প্রভাবিত (হ্যাক) করার ঝুঁকি বেশি।
মাস্কের এই পোস্টের প্রেক্ষাপটে রয়েছে অবশ্য উত্তর আমেরিকার দেশ পুয়ের্তো রিকোয় ভোট প্রক্রিয়ায় কারচুপির অভিযোগ সংক্রান্ত বিতর্ক। বার্তা সংস্থা এপির প্রতিবেদন অনুযায়ী, দেশটিতে ইভিএমের মাধ্যমে হওয়া ভোটে একশ’র বেশি কারচুপি ধরা পড়েছে। পরে আবার ব্যালটে ভোটগ্রহণের মাধ্যমে সেই অনিয়ম সংশোধন করার খবরও পাওয়া গেছে।
আর এ ঘটনার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে এবং স্বচ্ছ নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি দিয়ে এক্সে পোস্ট দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে নির্দলীয় প্রার্থী রবার্ট এফ কেনেডি জুনিয়র। কেনেডির সেই পোস্ট শেয়ার করেই ওই মন্তব্য করেন মাস্ক।
কিন্তু মাস্কের ইভিএম-বিরোধী পোস্টের বিরোধিতা করে পাল্টা টুইট করেন বিজেপি নেতা তথা ভারতের সাবেক ইলেকট্রনিক এবং তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী রাজীব চন্দ্রশেখর।
তার বক্তব্য, মাস্ক সরলীকৃত ধারণার ওপর ভিত্তি করে বক্তব্য রেখেছেন। চন্দ্রশেখরের মতে, একটা সরলীকৃত ধারণা রয়েছে যে, কেউ সুরক্ষিত ডিজিটাল হার্ডওয়্যার বানাতে পারবে না। কিন্তু তা ভুল। যুক্তরাষ্ট্র কিংবা অন্য জায়গায় যে ইন্টারনেট নিয়ন্ত্রিত ভোটিং মেশিনে সাধারণ যন্ত্রাংশ ব্যবহার করা হয়, সেখানে মাস্কের ওই বক্তব্য প্রযোজ্য হতে পারে।
তবে ইভিএমের মাধ্যমে হওয়া ভোট প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা নিয়ে আগেও প্রশ্ন তুলেছে ভারতের বিরোধী দলগুলো। রোববার মাস্কের পোস্টের পরই এ নিয়ে এক্সে একটি পোস্ট করেন রাহুল গান্ধী।
তিনি লেখেন, ইভিএম ভারতের ব্ল্যাক বক্স। কেউ সেটিকে পরীক্ষা করে দেখতে পারে না। আমাদের নির্বাচনী প্রক্রিয়া নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ কিছু প্রশ্ন উঠেছে।
মুম্বাই উত্তর-পশ্চিম লোকসভা কেন্দ্রের জয়ী প্রার্থী বিজেপির রবীন্দ্র ওয়েইকরের শ্যালক মঙ্গেশ পান্ডিলকরের বিরুদ্ধে নিয়ম ভেঙে ফোন নিয়ে ভোট গণনাকেন্দ্রে ঢোকার অভিযোগ রয়েছে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, ইভিএম ‘আনলক’ করার জন্য যে ওটিপি লাগে, তা তৈরি করতে পারে এমন ফোন নিয়ে কেন্দ্রে ঢুকেছিলেন মঙ্গেশ। বিষয়টি তদন্ত করছে পুলিশ।
রাহুল গান্ধী অবশ্য নিজের টুইটে এই সংক্রান্ত খবরের একটি অংশ পোস্ট করেছেন। আর কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র দ্বিতীয় বৃহত্তম শরিক দল এসপি’র প্রধান অখিলেশ যাদব বলেছেন,
আমরা আবারও আমাদের পুরনো দাবিটি প্রকাশ্যে আনছি। তা হলো, ভবিষ্যতের সব নির্বাচন ব্যালট পেপারের মাধ্যমে করতে হবে। সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া, হিন্দুস্তান টাইমস, আনন্দবাজার