News update
  • US May Ease Tariffs Further as Trade Gap Narrows     |     
  • Arab-Islamic summit over Israeli strike on Doha Monday     |     
  • NASA Rover Uncovers Strongest Hint of Ancient Life on Mars     |     
  • Eminent Lalon singer Farida Parveen passes away     |     
  • Dr Yunus mourns Farida Parveen's death     |     

বিদ্যুৎ ও জ্বালানিতে ভর্তুকি দেয়া দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান কোথায়?

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক জ্বালানী 2023-01-21, 10:12am

_128357033_gettyimages-1449434518-dd96221ef495071e77f1f000d3b9ad691674274350.jpg




পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে সাম্প্রতিক সময়ে বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম নিয়ে এক ধরণের অস্থিরতা চলছে। রাশিয়ার-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে জ্বালানি তেলের বাজার অস্থিতিশীল হয়ে পড়েছে।

ফলে বিভিন্ন দেশে বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম বেড়েছে। কোন দেশের সরকার বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে কতটা ভর্তুকি দেয় সেটি বরাবরই একটি রাজনৈতিক ইস্যু হয়ে দাঁড়ায়। কারণ, সাধারণ মানুষ কখনোই বাড়তি বিলের বোঝা নিতে চায় না।

বাংলাদেশেও সম্প্রতি জ্বালানি তেল, বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম ব্যাপকভাবে বাড়ানো হয়েছে।

এনিয়ে দেশের ভেতরে যখন তীব্র সমালোচনা চলছে তখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ১৮ জানুয়ারি জাতীয় সংসদে বলেছেন, বিশ্বের কোন দেশ জ্বালানিতে ভর্তুকি দেয় না।

তবে প্যারিস-ভিত্তিক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল এনার্জি এজেন্সি তাদের এক প্রতিবেদনে বলছে যে পৃথিবীর অনেক দেশ বিদ্যুৎ, গ্যাস খাতে ভর্তুকি দেয়, যার মধ্যে বাংলাদেশও রয়েছে

যেসব দেশ ভর্তুকি দেয়

ইন্টারন্যাশনাল এনার্জি এজেন্সির দেয়া তথ্যমতে, ২০২২ সালের অক্টোবর পর্যন্ত জ্বালানি খাতে ভর্তুকি দেয়া ২৫টি দেশের তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান ২১ তম।

সংস্থাটি বলছে বিভিন্ন দেশের সরকার জ্বালানি তেল, বিদ্যুৎ, গ্যাস ও কয়লা - এই চারটি জীবাশ্ম জ্বালানিতে ভর্তুকি দেয়।

তাদের ওয়েবসাইটে দেয়া তথ্যমতে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ইরান ভর্তুকি দেয়ায় শীর্ষে অবস্থান করছে। তেল, বিদ্যুৎ ও গ্যাস এই তিন খাতে ইরান সরকারের দেয়া মোট ভর্তুকির পরিমাণ জিডিপির ৪.৭ শতাংশ। ইরানের পরপরই ভর্তুকিতে শীর্ষে আছে যথাক্রমে চীন ও ভারত।

এছাড়াও মধ্যপ্রাচ্যের সৌদি আরব, কুয়েত, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতারের মতো ধনী রাষ্ট্র ছাড়াও রাশিয়া, ভেনিজুয়েলা, আর্জেন্টিনা, ইউক্রেনের মতো দেশগুলো জ্বালানিতে ভর্তুকি দেয়।

এই তালিকায় দেখা যাচ্ছে, যেসব দেশ জ্বালানিতে ভর্তুকি দেয় তাদের মধ্যে অনেকে তেল আমদানি করেনা, উল্টো রপ্তানি করে। ফলে দেশের জনগণের কাছ থেকে আন্তর্জাতিক বাজারের চেয়ে অনেক কম মূল্যে জ্বালানী সরবরাহ করে।

কিন্তু এই তালিকায় এমন অনেক দেশ আছে যারা জ্বালানি তেল আমদানি করলেও ভর্তুকি দেয়।

নেদারল্যান্ডস-ভিত্তিক অর্থনীতিবিদ ও গবেষক ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলছেন, সাধারণত উন্নয়নশীল বা কম আয়ের আয়ের দেশে জ্বালানিতে ভর্তুকি প্রয়োজন হয়। কারণ সেসব দেশের মানুষ আন্তর্জাতিক দামের সাথে সঙ্গতি রেখে মূল্য পরিশোধ করতে পারবে না।

মি. তৈয়ব বলেন, পশ্চিমা দেশগুলো জ্বালানি খাতে ভর্তুকি দেয় না, আবার এটিকে সরকারের আয়ের উৎসও বানায় না।

এমনকি ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়ায় পুরো পৃথিবী যখন বিপর্যস্ত তখন আপদকালীন সময়ে ইউরোপের বিভিন্ন দেশের সরকার এককালীন অর্থ দিয়ে জনগণের ভোগান্তি কমানোর প্রয়াস করেছে। এটিও এক অর্থে ভর্তুকির মধ্যেই পড়ে বলে উল্লেখ করেন মি. তৈয়্যব।

ভর্তুকিতে বাংলাদেশের অবস্থান

ইন্টারন্যাশনাল এনার্জি এজেন্সির তথ্য মতে পৃথিবীর যেসব দেশ ভর্তুকি দেয় তার মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ২১ তম। বাংলাদেশ মূলত বিদ্যুৎ ও গ্যাসে ভর্তুকি দিয়ে থাকে, যার পরিমাণ জিডিপির ০.৪ শতাংশ।

বিদ্যুৎ খাতে বাংলাদেশ সরকারের ভর্তুকির পরিমাণ প্রতিবছর প্রায় ১ বিলিয়ন ডলার ও গ্যাসে ০.৪ বিলিয়ন ডলার।

বাংলাদেশ সরকার বলছে, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে যে পরিমাণ ভর্তুকি দিতে হয় সেটি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। এজন্য ধাপে ধাপে দাম বৃদ্ধি করছে সরকার।

এদিকে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল বা আইএমএফের থেকে ঋণ নেয়ার জন্য ভর্তুকি কমিয়ে আনা অন্যতম শর্ত ছিল।

সবশেষ শিল্প খাতে নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস পেতে ব্যবসায়ীদেরকে কেনা দামেই নিতে হবে উল্লেখ করে দাম বাড়ানোর বিষয়টি সংসদে বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বাংলাদেশের প্রসঙ্গ টেনে মি. তৈয়্যব বলেন, সরকার যতটা ভর্তুকি দেবার কথা বলে বাস্তবতা সে রকম নয়। কারন, জ্বালানি তেলে যখন আমদানি করা হয় তখন বিভিন্ন ধরণের শুল্ক আরোপ করা হয় ৩০ থেকে ৩৩ শতাংশ পর্যন্ত। ফলে সেই টাকা উল্টো আবারও সরকারের কাছেই যাচ্ছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষ যেহেতু কম আয়ের সেজন্য জ্বালানি খাতে ভর্তুকি কমালে তাদের উপর ব্যাপক চাপ পড়বে। এর ফলে জিনিসপত্রের দাম ক্রমাগত বাড়তেই থাকবে।  তথ্য সূত্র বিবিসি বাংলা।