চাহিদা অনুযায়ী ও সঠিক সময়ে ঋণ না পাওয়ার চ্যালেঞ্জ ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের বড় হতে দিচ্ছে না। ওদিকে, ছোটদের গিলে খাচ্ছে করপোরেট প্রতিষ্ঠান। ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের সহায়তায় এগিয়ে আসলেও তহবিল সংকটে প্রয়োজনমতো ঋণ দিতে পারছে না এসএমই ফাউন্ডেশন। তবে নতুন এসএমই নীতিমালায় সংস্থাটিসহ আশা দেখছেন এ খাতের উদ্যোক্তারা।
৫ বছর আগে টিউশনির ১২ হাজার টাকা জমিয়ে প্রসাধনী পণ্যের ব্যবসা শুরু করেন আদিবা। পরিসর বাড়তে চাইলেও প্রয়োজনীয় ঋণ না পাওয়ায় ভেস্তে যায় সেই পরিকল্পনা।
এক্সোটিক গোল্ডের স্বত্বাধিকারী আদিবা শাহনেওয়াজ বলেন, ব্যবসা বাড়াতে ব্যাংক ঋণ নিতে পোহাতে হয় নানা ঝামেলা। ২ লাখ টাকার ঋণ নিতে ৫ লাখ টাকার ব্যাংক ব্যালেন্স চাওয়া হয়। শূন্য হাতে কোনো উদ্যোক্তাকে সহায়তা দেয়া হয় না।
তবে এবারে এসএমই ঋণের নতুন নীতিমালায় অগ্রাধিকার পেয়েছেন নারীরা। ট্রেড লাইসেন্স ছাড়াই মিলবে পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত জামানতবিহীন ঋণ। বাড়ানো হবে মোট বিতরণ করা ঋণের পরিমাণও।
নতুন নীতিমালা কাগজে কলমে সীমাবদ্ধ না রেখে বাস্তবায়নের ওপর জোর দিয়েছে নারী উদ্যোক্তাদের সংগঠন-ওয়েব। দাবি এসেছে বড় ব্যবসায়ীদের ঢালাও ঋণ সুবিধা সংকুচিত করার।
উইমেনস এন্টারপ্রেনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ওয়েব) সভাপতি নাসরিন ফাতেমা আউয়াল বলেন, বড় বড় যেসব বিজনেস হাউস রয়েছে, তাদেরকে নানাভাবে সহায়তা করা হচ্ছে। তারপরও তারা লাভবান হতে পারছে না। তবে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা, বিশেষ করে নারীরা খুব কম সংখ্যক ঋণ পাচ্ছেন।
এসএমই ফাউন্ডেশন বলছে, তহবিল বাড়ানো গেলে আরও উদ্যোক্তা তৈরি করা সম্ভব। ২০১৩ সালের পর থেকে এখন পর্যন্ত উদ্যোক্তাদের মাঝে ১ হাজার কোটি টাকার ঋণ বিতরণ করেছে সংস্থাটি। এসএসই ফাউন্ডেশনের ব্যববস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আনোয়ার হোসেন চৌধুরী বলেন, ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারাও এ দেশের নাগরিক। এটি মাথায় রাখতে হবে। তাদেরও ঋণ পাওয়ার অধিকার রয়েছে। তাই তাদেরকে ঋণ দিতে হবে, না হলে পুঁজির অভাবে তারা ব্যবসায় কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতে পারবে না।
পণ্য উৎপাদনের পর ক্রেতা খুঁজতে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের সহায়তার জন্য মেলার পরিসর বাড়াতে কাজ করছে এসএমই ফাউন্ডেশন।
নিজের প্রতিভাকে কাজে লাগিয়ে নারী পুরুষ অনেকেই হয়ে উঠছেন উদ্যোক্তাই। অবদান রাখছেন দেশের অর্থনীতিতে। কিন্তু তাদের সহায়তায় নানা রকম অর্থায়নের সুযোগ থাকলেও বাস্তবায়নে ধীরগতি। নতুন যে নীতিমালা তৈরি করা হয়েছে সেটি কতটুকু বিনিয়োগ বান্ধব, তা দেখা সময়ের অপেক্ষা।