অনুমতি ছাড়াই তিন লাখেরও বেশি ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত কথোপকথন ফাঁস করেছে ইলন মাস্কের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ন্ত্রিত চ্যাটবট গ্রোক। গুগলে কিছু বোতাম চাপলেই সামনে আসছে প্রায় ৩ লাখ ৭০ হাজার কথোপকথন। একে ‘গোপনীয়তার বিপর্যয়’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা।
বিশ্বের তাবৎ তথ্যের জানানদাতা হোক, কিংবা হোক মনের কথা ভাগাভাগি করে নেয়ার সঙ্গী- বর্তমানে সবক্ষেত্রেই জায়গা করে নিয়েছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ন্ত্রিত চ্যাটবট। বিশ্বজুড়ে জনপ্রিয় হয়ে উঠার অন্যতম কারণ এই চ্যাটবটগুলোর নিরাপত্তা নীতি। যা ব্যবহারকারীর সকল তথ্য গোপন রাখার প্রতিশ্রুতি দেয়। তবে সেই নিরাপত্তার চাদরেও এবার ছিদ্র দেখা দিলো।
মার্কিন ধনকুবের ইলন মাস্কের প্রতিষ্ঠানের এআই চ্যাটবট গ্রোকের সঙ্গে ব্যবহারকারীদের হওয়া সাড়ে তিন লাখেরও বেশি কথোপকথন গুগলে প্রকাশ হয়েছে। এসব চ্যাটের মধ্যে রয়েছে সাধারণ টুইট লেখে দেয়া থেকে শুরু করে ক্ষতিকর অনুরোধ। যেমন: ফেন্টানিল ও বোমা তৈরির কৌশল, ম্যালওয়্যার কোডিং, এমনকি মাস্ককে হত্যার বিশদ পরিকল্পনা।
এই বিষয়টি প্রথম প্রকাশ করে ফোর্বস। তাদের গণনা অনুযায়ী বর্তমানে অন্তত ৩ লাখ ৭০ হাজার ব্যবহারকারীর কথোপকথন গুগলে পাওয়া যাচ্ছে। এই চ্যাট ট্রান্সক্রিপ্টে ব্যবহারকারীরা নিরাপদ পাসওয়ার্ড তৈরির পরামর্শ, ওজন কমানোর জন্য খাবারের পরিকল্পনা এবং চিকিৎসাসংক্রান্ত বিস্তারিত প্রশ্ন জিজ্ঞেস করেছেন।
অনেকে আবার চ্যাটবটটির সর্বোচ্চ কার্যসীমা পরীক্ষা করার জন্য মাদক তৈরির উপায় জানতে চেয়ে প্রশ্ন করেছেন। এই কথাবার্তা পরিচিতদের সঙ্গে ভাগাভাগি করে নেয়ার জন্য গ্রকে ‘শেয়ার’ বাটন রয়েছে।
ওপেন এআইয়ের দাবি, এই তথ্য কখন, কার সঙ্গে শেয়ার করা যাবে তার নিয়ন্ত্রণ পুরোপুরি ব্যবহারকারীর হাতে রয়েছে। তবে গণমাধ্যম বলছে, এই বাটনটি চাপলেই সম্পূর্ণ কথোপকথন গুগলে সকলের জন্য উন্মুক্ত হয়ে যাচ্ছে।
এর আগে মেটা এআইয়ের ব্যবহারকারীর কনভার্সেশন গুগলের ডিস্কভার পেইজে আসায় সমালোচনার মুখোমুখি হয় প্রতিষ্ঠানটি। এ অবস্থায়, নতুন করে ডিজিটাল নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা দেখা দিচ্ছে জনমনে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ব্যবহারকারীর একাউন্টের একান্ত ব্যক্তিগত তথ্য আংশিক গোপনীয় থাকলেও অনেক সংবেদনশীল তথ্যই প্রকাশ হয়ে যাচ্ছে চ্যাটের মাধ্যমে। যা একবার প্রকাশ হলে ইন্টারনেটে চিরকাল তার অস্তিত্ব থাকবে। এ পরিস্থিতিকে ‘গোপনীয়তার বিপর্যয়’ বলে আখ্যা দিয়েছেন বিশ্লেষকরা।