High transportation cost of water melon puts Kalapara farmers at bay.
পটুয়াখালী প্রতিনিধি: পটুয়াখালীর গলাচিপায় তরমুজ চাষীদের কাছ থেকে বিভিন্ন স্পটে অতিরিক্ত টাকা আদায় করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে উৎপাদন খরচ মিটিয়ে লাভ তো দুরের কথা আসল টাকাই ঘরে তুলতে পারবেন কিনা সে বিষয়ে কৃষকরা চিন্তিত হয়ে পড়েছেন। আজ শনিবার (১১ মার্চ) উপজেলার গোলখালী ইউনিয়নের সিকি সুহরী, হরিদেবপুর, আমখোলা ইউনিয়নের মুশুরীকাঠি স্লুইজ ঘাট, পানপট্টি লঞ্চঘাট ঘাট, বোয়ালিয়া খেয়া ঘাট সহ বিভিন্ন স্থান ঘুরে একই অভিযোগ পাওয়া গেছে কৃষকের কাছ থেকে।
কৃষকের ক্ষেত থেকে এবার বেশি লাভের আশায় আগেভাগেই তরমুজ তোলা শুরু করেছেন কৃষক। ভালো দাম পেয়ে অনেক চাষি তরমুজ ক্ষেত বিক্রি করে দিচ্ছেন। এতে অনেকে লাভবান হচ্ছেন তারা। তবে জায়গায় জায়গায় অতিরিক্ত টাকা আদায় করায় বিপাকে পড়ছেন কৃষকসহ তরমুজ ব্যবসায়ীরা।
গলাচিপা পৌর শহরের তরমুজ চাষী মো. চুন্ন মিয়া বলেন, ট্রলার ও ট্রাকের ভাড়া গত বছরের চেয়ে তিনগুণ বেড়েছে। ফলে গত বছর যে ট্রলারের খরচ ছিল দুই হাজার টাকা তা এ বছর ৫-৬ হাজার টাকা হয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই একটি ১০০ টাকার তরমুজে ৩০ টাকা খরচ যুক্ত হচ্ছে ঘাটে এসেই। এরপর যখন ট্রলার থেকে তরমুজ ট্রাকে উঠানো হয় তখন প্রতিটি তরমুজ ওঠাতে শ্রমিকরা এক টাকার পরিবর্তে এখন দেড় থেকে দুই টাকা চাচ্ছেন। আবার ট্রাকে করে তরমুজ বিভিন্ন স্থানে পাঠাতে গত বছরের তুলনায় অনেক বেশী ভাড়া চেয়ে বসে থাকেন। বাধ্য হয়ে বেশি টাকা দিয়েই তরমুজ দেশের বিভিন্ন স্থানের আড়ৎদারদের কাছে পাঠানো হচ্ছে। এতে খরচ অতিরিক্ত পড়ে যাওয়ায় তরমুজ বিক্রি করে লাভ করা দুরূহ হয়ে পড়েছে।
গলাচিপা সদর ইউনিয়নের তরমুজ চাষী মো. ফারুক বলেন, ক্ষেত থেকে তরমুজ তুলে ট্রাকে করে ভাড়া দিয়ে মোকামে পাঠাতে যে খরচ হয় তাতে আমাদের লাভ হয় না। তাই বাধ্য হয়ে ঝামেলা এড়াতে ক্ষেতে বসেই অল্প দামে পাইকারদের কাছে তরমুজ বিক্রি করে দিচ্ছি। আমাদের যদি লাভই না হয় তাহলে ভবিষ্যতে এত কষ্ট করে তরমুজ চাষ করা আমাদের পক্ষে সম্ভব হবে না।
তরমুজের পাইকার মো. জামাল চৌধুরী বলেন, ‘আমি ৩২ লক্ষ টাকায় দুইটি তরমুজের ক্ষেত কিনেছি। মাল নেওয়া প্রায় শেষের পথে। কিন্তু এখানে ক্ষেত থেকে তরমুজ তুলে ট্রাকে করে ঢাকায় নিতে জায়গায় জায়গায় অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। এতে ঢাকা পর্যন্ত তরমুজ নিতে যে খরচ পড়বে সেই টাকা বিক্রি করে তুলতে পারবো কিনা জানি না। এ রকম হলে তরমুজের ব্যবসাই আর করা যাবে না।’
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান ড্রাইভার্স ইউনিয়ন পটুয়াখালী জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক ও মেসার্স এলাহী এন্ড রানা ট্রাক ট্রান্সপোর্ট এজেন্সির মালিক মো. নূর এলাহী জানান, তেলের দাম থেকে শুরু করে ট্রাকের জিনিসপত্রের দামও বেড়েছে। সেই হিসেবে টাকা বেশি নেওয়া হচ্ছে কিন্তু লাভ থাকছে না। প্রতিটি ট্রাকে প্রায় পাঁচ হাজারের মত তরমুজ উত্তোলন করা হচ্ছে। এতে আমরা স্থান ভেদে ২৮ হাজার থেকে ৩৫ হাজার টাকা পর্যন্ত ঢাকা পর্যন্ত ভাড়া নিচ্ছি। ঢাকার থেকে আরো দূরে নিতে চাইলে দূরত্ব অনুযায়ী ভাড়া বাড়ানো হয়।
মেসার্স গলাচিপা ট্রান্সপোর্ট এর পরিচালনাকারী মো. সেলিম রেজা ও মো. মাহাবুব আলম বলেন, ‘আগের তুলনায় তেলের দাম ও অন্যান্য টোল অনেক বেশি হওয়ায় ট্রাকের ভাড়া এখন বেড়েছে। আমরা কী করব। সবকিছুর দাম বাড়লে খরচও বেশী পড়ে তাই আমরাও বাড়তি ভাড়া আদায় করছি।’
গলাচিপা থানার অফিসার ওসি শোণিত কুমার গায়েন বলেন, এখন তরমুজের মৌসুম। এই মৌসুমে মুশুরীকাঠী, হরিদেবপুরে আমাদের পুলিশ সদস্য থাকে। কোন রকম অনিয়ম হলে পুলিশ ব্যবস্থা নিবে। - গোফরান পলাশ