News update
  • Depositors stranded as Sammilito Islami Bank is in liquidity crisis     |     
  • BNP faces uphill task to reach seat-sharing deal with allies     |     
  • Bangladesh rejects India’s advice; vows free, fair polls     |     
  • Hadi’s condition very critical: Singapore Foreign Minister     |     
  • Asia-Pacific hunger eases, Gaza pipeline fixed, Europe hit by flu     |     

কোভিড ভ্যাকসিনে মস্তিষ্কে ক্ষতির অভিযোগ, মামলা জয়ে এগিয়ে গেল ভুক্তভোগী

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক ওষুধ 2024-05-04, 5:03pm

kjheriuwituewtq-23b5cdc69f8d351eaf232ed3d2037f931714820642.jpg




অ্যাস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দাবি করে ক্ষতিপূরণের লড়াইয়ে থাকা একজন বাবা এক ধাপ এগিয়ে গেছেন বলে জানাচ্ছেন তার আইনজীবী।

অ্যাস্ট্রাজেনেকার কোভিড ভ্যাকসিন তার মক্কেলের মস্তিষ্কের ক্ষতি করেছে বলে যে দাবি তারা করছে তাতে ওষুধ সংস্থাটি নিজেদের আইনি অবস্থানে একটি “উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন” করেছে বলেই মত তার।

আদালতের কাছে জমা দেয়া নথিতে প্রথমবারের মতো অ্যাস্ট্রাজেনেকা স্বীকার করেছে যে তাদের কোভিড ভ্যাকসিন খুবই বিরল পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে।

ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানিটি তাদের কোভিড ভ্যাকসিন নিয়ে এ সংক্রান্ত বেশ কিছু অভিযোগের মুখে পড়েছে।

কোনো কোনো অভিযোগকারী স্বজন হারানোর কথা বলছে, আবার কেউ অভিযোগ করছেন গুরুতর অসুস্থতার।

গবেষণা বলছে, অ্যাস্ট্রাজেনেকাসহ অন্যান্য কোভিড ভ্যাকসিন লক্ষ লক্ষ মানুষের জীবন বাঁচিয়েছে।

এনিয়ে গত বছর প্রথম দাবি তোলেন দুই দুই সন্তানের বাবা জেমি স্কট। তার দাবি ২০২১ সালের এপ্রিলে ভ্যাকসিনটি নেয়ার পর রক্ত জমাট বাঁধার ফলে তার মস্তিষ্কে যে ক্ষতি হয়েছে তার ফলে তিনি আর কাজ করতে পারছেন না।

যুক্তরাজ্যের ভোক্তা সুরক্ষা আইনের অধীনে করা এই মামলায় ভ্যাকসিনটি ‘ত্রুটিপূর্ণ’ ছিল বলে অভিযোগ করা হয়েছে। কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে ভ্যাকসিনটি প্রত্যাশিত পরিমাণে নিরাপদ ছিল না।

অ্যাস্ট্রাজেনেকা এই দাবিগুলোকে চ্যালেঞ্জ করে আসলেও ফেব্রুয়ারিতে দেশটির হাইকোর্টে জমা দেওয়া একটি আইনি নথিতে তাদের কোভিড ভ্যাকসিনের ফলে “খুব বিরল ক্ষেত্রে, টিটিএস ঘটাতে পারে” বলে স্বীকার করেছে প্রতিষ্ঠানটি।

মামলার আইনজীবীরা বলছেন, টিটিএস মানে থ্রম্বোসিস উইথ থ্রোম্বোসাইটোপেনিয়া সিন্ড্রোম। টিকা দেয়ার পর এটি ঘটলে একে ভিআটিটি (ভ্যাকসিন-ইনডিউসড ইমিউন থ্রম্বোসিস উইথ থ্রম্বোসাইটোপেনিয়া) হিসেবেও উল্লেখ করা হয়।

টিটিএস/ভিআইটিটি একটি বিরল সিন্ড্রোম যেখানে একইসঙ্গে থ্রম্বোসিস (রক্ত জমাট বাঁধা) ও থ্রম্বোসাইটোপেনিয়া (প্লেটলেট সংখ্যা কমে যাওয়া) হয়।

টিটিএস/ভিআইটিটি’র ফলে মৃত্যুঝুঁকির সম্ভাবনা থাকে। এছাড়াও স্ট্রোক, মস্তিষ্কের ক্ষতি, হার্ট অ্যাটাক, রক্ত জমাট বেঁধে ফুসফুসের ধমনীতে রক্ত প্রবাহ বন্ধ হয়ে যাওয়া এবং অঙ্গচ্ছেদও হতে পারে বলে জানান আইনজীবীরা।

টিকা না দিলেও অনেক ধরনের থ্রম্বোসিস হতে পারে।

তবে অ্যামেরিকান সোসাইটি অব হেমাটলজির মতে, বিরল সিন্ড্রোম টিটিএস/ভিআইটিটি কেবল টিকা দেয়ার পর হওয়া থ্রম্বোসিসের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।

অ্যাস্ট্রাজেনেকা আদালতে জমা দেয়া নথিতে বলেছে: “টিটিএস একটি বিরল এবং গুরুতর অবস্থা। এটি বিভিন্ন ঘটনার কারণে (কেবল ভ্যাকসিন নয়) হতে পারে এবং এর শনাক্তযোগ্য কোনো কারণ নাও থাকতে পারে”।

মি. স্কটের আইনজীবীরা ২০২৩ সালের মে মাসে পাঠানো একটি চিঠির উত্তরে বিবিসিকে নিশ্চিত করেছে যে অ্যাস্ট্রাজেনেকা তাদের বলেছিল: “আমরা মানছি না যে সাধারণত (বড় আকারে) ভ্যাকসিনের কারণে টিটিএস হয়”।

কিন্তু ফেব্রুয়ারিতে হাইকোর্টে জমা দেয়া আইনি নথিতে অ্যাস্ট্রাজেনেকা: “এটি স্বীকার করেছে যে এই খুব বিরল ক্ষেত্রে ভ্যাকসিন টিটিএসের কারণ হতে পারে। এর সাধারণ প্রক্রিয়া [কীভাবে এটি ঘটে] জানা যায়নি”।

প্রতিষ্ঠানটি চাইছে, অন্য কোনো কারণে নয় বরং টিকার কারণেই যে টিটিএস নামে পরিচিত থ্রম্বোসিস হয়েছে - প্রত্যেক অভিযোগকারী এই দাবি প্রমাণ করুক।

এতে বলা হয়েছে: “এছাড়াও অ্যাস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিনের (বা অন্য যেকোনো ভ্যাকসিন) অনুপস্থিতিতেও টিটিএস ঘটতে পারে। যেকোনো স্বতন্ত্র ব্যক্তির ক্ষেত্রে এর কারণ জানতে বিশেষজ্ঞ-প্রমাণ লাগবে।

'উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন'

মিঃ স্কটসহ মোট ৫১ জন অভিযোগকারীর মামলার প্রতিনিধিত্ব করা আইনজীবী বলেছেন যে এটি এই মামলায় অ্যাস্ট্রাজেনেকার অবস্থানে একটি উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন এনেছে।

আইনি সংস্থা লেই ডে-এর সারাহ মুর বিবিসিকে বলেন: “এটি সাধারণ কারণের একটি গুরুত্বপূর্ণ স্বীকারোক্তি - অর্থাৎ অ্যাস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিন বিশেষ ক্ষেত্রে টিটিএস এবং ভিআইটিটি ঘটাতে পারে”।

এটি “গুরুত্বপূর্ণ যে তারা এখন আনুষ্ঠানিক আবেদনে এই বিষয়ে তাদের অবস্থান পরিবর্তন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে”, যোগ করেন তিনি।

এই স্বীকারোক্তির ফলে আরও বড় অংকের অর্থ পাওয়ার পথ প্রশস্ত হতে পারে। কারণ অভিযোগকারীরা চায় তারা যেন ন্যায্য ক্ষতিপূরণ পায়, সঙ্গে কিছু আর্থিক নিরাপত্তাও।

মঙ্গলবার অ্যাস্ট্রাজেনেকা বিবিসির সাথে কথা বললেও সারাহ মুরের উল্লেখ করা বিষয়গুলো নিয়ে স্পষ্ট কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি।

বিবিসিকে দেয়া এক বিবৃতিতে তারা বলেছে: “প্রিয়জন হারানো বা স্বাস্থ্য সমস্যার কথা বলা যে কারো প্রতিই আমাদের সহানুভূতি রয়েছে। রোগীর নিরাপত্তা আমাদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার এবং ভ্যাকসিনসহ সমস্ত ওষুধের নিরাপদ ব্যবহার নিশ্চিত করতে নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষের কাছে স্পষ্ট ও কঠোর মানদণ্ড রয়েছে।

“ক্লিনিকাল ট্রায়াল আর বাস্তব-বিশ্বের তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে বলা যায়, অ্যাস্ট্রাজেনেকা-অক্সফোর্ড ভ্যাকসিন ধারাবাহিকভাবে একটি গ্রহণযোগ্য সুরক্ষা বিধান দেখিয়েছে এবং সারা বিশ্বের নিয়ন্ত্রকরা ক্রমাগত এটাই বলেছে যে টিকার সুবিধা এতটাই বেশি যে এটি অত্যন্ত বিরল সম্ভাব্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার ঝুঁকিকে ছাড়িয়ে যায়।

চিকিৎসার পরামর্শে পরিবর্তন

২০২২ সালের জুনে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলেছিল, অ্যাস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিন “১৮ বছর বা তার বেশি বয়সী ব্যক্তিদের জন্য নিরাপদ এবং কার্যকর”।

“খুব অল্প সংখ্যক মানুষের মধ্যে অত্যন্ত বিরল রক্ত জমাট বাঁধার খবরের পর” ২০২১ সালের সাত এপ্রিল ৩০ বছরের কম প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য অ্যাস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিনের বিকল্প কিছুর পরামর্শ দেয় টিকা এবং টিকাদান সংক্রান্ত যৌথ কমিটি।

অ্যাস্ট্রাজেনেকা আরও উল্লেখ করেছে যে তারা তাদের ভ্যাকসিন বাক্সে লেবেল লাগানোর সুপারিশ করেছিল এবং পরামর্শ প্রতিফলিত করার জন্য ভ্যাকসিনের শিশিগুলিও পরিবর্তন করা হয়েছিল।

৪০ বছরের কম বয়সীদের ওপর টিকা প্রয়োগের ক্ষেত্রে দেয়া নির্দেশিকা ২০২১ সালের ৭ মে মাসে সংশোধন করা হয়।

অ্যাস্ট্রাজেনেকা বিবিসিকে বলেছে: “এখন পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী ৩০টিরও বেশি সিভিল মামলা প্রত্যাহার বা পরিত্যাগ করা হয়েছে অথবা অ্যাস্ট্রাজেনেকার অনুকূলে রায় দিয়েছে”।

'ন্যায্য ক্ষতিপূরণ'

জেমির স্ত্রী কেট স্কট এর আগে বিবিসিকে বলেছিলেন: “জেমি বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে আড়াইশোরও বেশি পুনর্বাসন সেশন নিয়েছে। তাকে আবার হাঁটতে, গিলতে, কথা বলতে শিখতে হয়েছে। [তার] স্মৃতিশক্তিতেও সমস্যা হয়েছিল।

“যদিও সে তাদের সঙ্গে খুব ভালো করেছে, আমরা এখন এমন জায়গায় আছি যেখানে জেমির নতুন সংস্করণটিই… সেই সংস্করণ যেটা এগিয়ে যাবে। তার বোধগম্যে সমস্যা হচ্ছে... তার অ্যাফেসিয়া [যখন একজন ব্যক্তির ভাষায় বা কথা বলায় অসুবিধা হয়] … তীব্র মাথাব্যথা, অন্ধত্ব আছে”।

তিনি আরও বলেন: “আমাদের [যুক্তরাষ্ট্র] সরকারকে ভ্যাকসিনের ক্ষতির অর্থ প্রদানের স্কিমটি সংস্কার করতে হবে। এটি অদক্ষ এবং অন্যায্য... আর তারপর [আমরা চাই] ন্যায্য ক্ষতিপূরণ”।