জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা ও গ্রুপ অফ সেভেনের(জি-৭) অন্য নেতারা রাশিয়ার বিরুদ্ধে বাড়তি নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছেন। ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়ার যুদ্ধের ১ বছর পূরণকালে, এক অনলাইন জি-৭ শীর্ষ সম্মেলনে নেতারা এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন।
জাপানের পররাষ্ট্র মন্ত্রকের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, নেতারা এক বিবৃতিতে, “ইউক্রেনের জন্য কূটনৈতিক, আর্থিক ও সামরিক সহায়তা দেওয়া, রাশিয়া ও অন্য যারা রাশিয়াকে যুদ্ধে সহায়তা করছে; তাদের ব্যয় বাড়ানোর এবং বাকি বিশ্ব, বিশেষত, সবচেয়ে দুর্বল জনগোষ্ঠীর ওপর এই যুদ্ধের নেতিবাচক প্রভাব কমানোর জন্য” তাদের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছেন।
জি-৭ এর বর্তমান সভাপতি হিসেবে কিশিদা আরও ঘোষণা দেন যে জাপান রাশিয়ার ওপর বাড়তি নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবে। যার মধ্যে রয়েছে, ১২০ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের সম্পত্তি ক্রোক করা এবং ড্রোন ও সামরিক কাজে ব্যবহার হতে পারে এমন অন্যান্য দ্রব্যের রপ্তানি নিষিদ্ধ করা।
সম্মেলনে কিশিদা ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়ার যুদ্ধের সর্বশেষ পরিস্থিতি এবং কীভাবে ইউক্রেনের পুনর্গঠন উদ্যোগে সহায়তা করা যায়, সেসব বিষয়ে আলোচনা করার পরিকল্পনা করেন এবং যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটির সঙ্গে জি-৭ এর একাত্মতা পুনর্ব্যক্ত করেন।
ইউক্রেন, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, সুইডেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও লিথুয়ানিয়ার শীর্ষ কূটনীতিকরা টোকিওতে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ইউক্রেনের সঙ্গে সংহতি প্রকাশের আহ্বান জানান এবং রাশিয়ার প্রতি নিন্দা জ্ঞাপন করেন। জাপানে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত রাহাম ইমানুয়েল জানান, নেটো পূর্বদিকে সম্প্রসারিত হচ্ছে বলে পুতিন যে অভিযোগ করছেন, তা ভুল। তিনি জানান, নেটোর সর্বশেষ সদস্যরা তাদের স্বাধীণ ইচ্ছায় পশ্চিমকে সম্প্রসারিত করেছে। কারণ পশ্চিমের রয়েছে স্বাধীনতা, মুক্তি ও ব্যক্তির প্রতি সম্মান জানানোর “আকর্ষণী” ক্ষমতা।
এখন পর্যন্ত কিশিদা হচ্ছেন একমাত্র জি-৭ নেতা, যিনি ইউক্রেন সফর করেননি। হিরোশিমায় জি-৭ সম্মেলনের আয়োজনের আগে কিয়েভ সফর করার জন্য কিশিদার ওপর অভ্যন্তরীণ চাপ বাড়ছে। তার সম্ভাব্য সফর সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে কিশিদা বলেন, তিনি সফরের বিষয়টি “বিবেচনা” করছেন। এছাড়া, নিরাপত্তা ও গোপনীয়তা নিশ্চিত করার বিভিন্ন উপায়ও বিবেচনায় রাখছেন। তবে, এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত হয়নি।
কিশিদা অনলাইন জি-৭ সম্মেলনে ইউক্রেনের প্রতি জাপানের সহায়তার বিষয় ব্যাখ্যা করেন। এই সহায়তায় রয়েছে ৫৫০ কোটি ডলারের আর্থিক সাহায্য। সোমবার কিশিদা এ ঘোষণা দেন।এর মধ্য দিয়ে, ইউক্রেনের জন্য জাপানের সহায়তার পরিমাণ ৭০০ কোটি ডলার ছাড়িয়েছে।
জাপান একইসঙ্গে ২ হাজারেরও বেশি বাস্তুচ্যুত ইউক্রেনীয়কে আশ্রয় দিয়েছে এবং তাদেরকে আবাসন, চাকুরী ও শিক্ষা সহায়তা দিয়েছে। জাপানের মতো কঠোর অভিবাসন নীতিমালার দেশের জন্য এটি একটি বিরল উদ্যোগ। তথ্য সূত্র ভয়েস অফ আমেরিকা বাংলা।