News update
  • $10mn Approved for Climate Resilience in CHT: ICIMOD     |     
  • At least 143 dead in DR Congo river boat fire tragedy     |     
  • Dhaka has worst air pollution in the world Saturday morning     |     
  • Container ships to ply between Mongla and Chattogram ports     |     
  • France to Break Away from UK & US in Recognising Palestine as Nation State     |     

ডিসি সম্মেলন শুরু, উদ্বোধন করলেন প্রধান উপদেষ্টা

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক খবর 2025-02-16, 12:10pm

eeqwe3213-a58f6546e5c18a4b7cab1d5e819226461739686248.jpg




তিন দিনব্যাপী জেলা প্রশাসক (ডিসি) সম্মেলনের উদ্বোধন করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টায় প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের শাপলা হলে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন তিনি।

গত বছরের মতো এবারও সম্মেলনের মূল ভেন্যু রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তন। এবারের সম্মেলনে উত্থাপিত হতে যাচ্ছে ৩৫৪টি প্রস্তাব। এ সম্মেলন শেষ হবে আগামী বুধবার (১৮ ফেব্রুয়ারি)।

এবারের সম্মেলনে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সঙ্গে মোট কার্য-অধিবেশন হবে ৩০টি। এ ছাড়া বিশেষ অধিবেশন হবে চারটি। বিশেষ অধিবেশনগুলোর মধ্যে রয়েছে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান, প্রধান বিচারপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ, প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে একটি মুক্ত আলোচনা এবং বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গেও একটি সভা হবে। তবে, রেওয়াজ থাকলেও রাষ্ট্রপতির সঙ্গে ডিসিদের সৌজন্য সাক্ষাতের কোনো পর্ব রাখা হয়নি এবার।  

রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি) জেলা প্রশাসকদের সঙ্গে মুক্ত আলোচনার পর সন্ধ্যায় বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে সভা করবেন প্রধান উপদেষ্টা। রাতে হবে নৈশভোজ।

এবারের ডিসি সম্মেলন সামনে রেখে জেলা প্রশাসক ও বিভাগীয় কমিশনারদের কাছ থেকে এক হাজার ২৪৫টি প্রস্তাব পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব শেখ আব্দুর রশীদ, যার মধ্যে ৩৫৪টি প্রস্তাব কার্যপত্রে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে সর্বোচ্চ গুরুত্ব পাচ্ছে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন। এ ছাড়াও জনসেবা, জনদুর্ভোগ, রাস্তাঘাট নির্মাণ, আইনকানুন ও বিধিমালা সংশোধন এবং জনস্বার্থের বিষয়গুলোকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে এই সম্মেলনে।

শেখ আব্দুর রশীদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, এবারের ডিসি সম্মেলন ঘিরে সবচেয়ে বেশি প্রস্তাব সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ সংশ্লিষ্ট; মোট ২৮টি।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, প্রধান প্রধান আলোচ্য বিষয়ের মধ্যে রয়েছে- ভূমি ব্যবস্থাপনা, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন, স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোর কার্যক্রম জোরদারকরণ; দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যক্রম; স্থানীয় পর্যায়ে কর্ম-সৃজন ও দারিদ্র্য বিমোচন কর্মসূচি বাস্তবায়ন; সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী কর্মসূচি বাস্তবায়ন; তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার এবং ই-গভর্ন্যান্স; শিক্ষার মান উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ; স্বাস্থ্যসেবা ও পরিবার কল্যাণ; পরিবেশ সংরক্ষণ ও দূষণ রোধ; ভৌত অবকাঠামোর উন্নয়ন এবং উন্নয়নমূলক কার্যক্রমের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও সমন্বয়ের বিষয়গুলো।

ডিসি সম্মেলনে এসব প্রস্তাব উপস্থাপন করবেন অংশগ্রহণকারী ডিসি ও বিভাগীয় কমিশনাররা। কার্য-অধিবেশনগুলো ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হলেও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সঙ্গে কার্য-অধিবেশন এবং সমাপনী অধিবেশন সচিবালয়ের মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের নবনির্মিত ভবনে হবে।

এসব অধিবেশনে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব সভাপতিত্ব করবেন এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত উপদেষ্টারা নিজ নিজ মন্ত্রণালয়ের কর্মসূচি মাঠ পর্যায়ে বাস্তবায়নের জন্য দিক-নির্দেশনা দেবেন।

আজ প্রথমদিন মোট ছয়টি কার্য অধিবেশন অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় ও আওতাধীন সংস্থাগুলো, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ, বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ, পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগ, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ এবং স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সাথে আলোচনা হবে। পরবর্তীতে সন্ধ্যায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সভা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর রাতে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে নৈশভোজে অংশ নেবেন ডিসি ও বিভাগীয় কমিশনাররা।

ডিসি সম্মেলনের দ্বিতীয়দিন সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) কার্য-অধিবেশনের বাইরে সুপ্রিম কোর্টে প্রধান বিচারপতির সঙ্গে ডিসি ও বিভাগীয় কমিশনার সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন। এ উপলক্ষে সুপ্রিম কোর্ট অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। জানা যায়, এদিন খাদ্য মন্ত্রণালয়, ভূমি মন্ত্রণালয়, অর্থ বিভাগ, অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়, শিল্প মন্ত্রণালয়, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা হবে।

এছাড়াও সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ, সেতু বিভাগ, রেলপথ মন্ত্রণালয়, বিদ্যুৎ বিভাগ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগ, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় দুর্নীতি দমন কমিশন, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ, এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা হবে।

ডিসি সম্মেলনের তৃতীয় দিন মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়, জননিরাপত্তা বিভাগ, সুরক্ষা সেবা বিভাগ, কৃষি মন্ত্রণালয়, আইন ও বিচার বিভাগ, লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগ, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার বিভাগ, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগ এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা হবে।

এছাড়াও পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়, পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, নির্বাচন কমিশন সংক্রান্ত বিষয়াদি, মন্ত্রিপরিষদ সংক্রান্ত বিষয়াদি সম্পর্কে আলোচনা করা হবে। পরবর্তীতে ফিডব্যাক অধিবেশন ও সম্মেলনের মূল্যায়ন এবং সমাপনী অধিবেশন অনুষ্ঠিত হবে।

এদিকে এবারই প্রথম রাষ্ট্রপতির সঙ্গে কোনো সৌজন্য সাক্ষাৎ পর্ব থাকছে না জেলা প্রশাসকদের।  এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ওনার (রাষ্ট্রপতি) সিডিউলের সঙ্গে মেলেনি।

এছাড়া, এবারের ডিসি সম্মেলনের উদ্বোধন অনুষ্ঠানটি শুরু হবে একটি ভিডিও প্রদর্শনের মাধ্যমে, যেখানে এই আন্দোলনটা কীভাবে হয়েছিল, কীভাবে আন্দোলনের ফল লাভ হলো, সেই বিবরণ সেখানে থাকবে। বিপ্লবোত্তর আইনশৃঙ্খলার বিষয়টিও উদ্বোধনী দিনেই তোলা হবে বলে জানিয়েছেন শেখ আব্দুর রশিদ। 

সরকারের নীতিনির্ধারক এবং জেলা প্রশাসক ও বিভাগীয় কমিশনারদের মধ্যে সামনা-সামনি মতবিনিময় এবং প্রয়োজনীয় দিক-নির্দেশনা দেওয়ার জন্য সাধারণত প্রতি বছর ডিসি সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময়ে এ সম্মেলন বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচনা করা হচ্ছে।  আরটিভি