News update
  • BNP Opposes Reforms to Constitution’s Core Principles      |     
  • Time to Repair Bangladesh–Pakistan Ties     |     
  • Dhaka’s air quality recorded ‘unhealthy’ Friday morning     |     
  • Dr Yunus proved impact of innovative economics: Peking Varsity Prof     |     
  • Alongside conflict, an info war is still happening in Gaza     |     

পণ্যের অগ্নিমূল্যে নাজেহাল ক্রেতারা তাদের অধিকার সম্পর্কে কতটা জানেন?

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক খাদ্য 2024-01-22, 10:49am

kasdksadfio-7ca873552e52861b836742ae080f0cc51705898968.jpg




আগামী রমজানে পণ্যের দাম বাড়ানো হলে লাইসেন্স বাতিল-সহ নানা ধরনের আইনি ব্যবস্থা নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।


রোববার পাঁচটি মন্ত্রণালয়ের বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর সন্ধ্যায় সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী।

অর্থমন্ত্রী বলেন, “রমজানকে সামনে রেখে যেসব পণ্য প্রয়োজন তা যথেষ্ট পরিমাণে আছে। রমজানে কিছু মহল চেষ্টা করে সুযোগ নেবার ও পরিস্থিতি ঘোলাটে করার। কিন্তু পণ্যের দাম সহনীয় রাখতে সরকার চেষ্টা করছে।"

"প্রয়োজন হলে কঠোর শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নেয়া হবে, তবে মনে করি এখনো তেমন পরিস্থিতি হয়নি। বিভিন্ন পণ্যের দাম কমাতে পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। কিছুটা কমেছে, সামনে আরো কমবে।”

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী আব্দুর রহমান বলেন, “বাজারে কোনও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের শর্টেজ নাই। কিছু মধ্যস্বত্বভোগী আছে যাদের কারসাজিতে আমরা বিপদে পড়ি। আমরা পদক্ষেপ নিব। আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া যাবে, প্রয়োজনে লাইসেন্স বাতিল করা হবে।”

“সুস্পষ্টকরণ সম্পন্ন হলেই চিহ্নিত করা যাবে যে কারা এসবের সাথে জড়িত। সুতরাং একটু ধৈর্য ধরতে হবে", বলেন মি. রহমান।

'সিন্ডিকেটের দাপুটে উত্থান: নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে অসহায় সরকার'

“বাজারে কিছুদিন আগে গরুর মাংসের দাম কমলো, কিন্তু আবার এখন বেড়েছে। আলু, পেঁয়াজের দামও যখন তখন বাড়ায়।"

"জানি ভোক্তা অধিদপ্তর আছে। কিন্তু এসব বাজারে তো আর ওইভাবে স্লিপ দেয় না যে অভিযোগ করবো, সেটাও একটা সময়ের ব্যাপার”, বিবিসিকে বলছিলেন বেসরকারি চাকুরীজীবী জিলানী রহমান।

বাংলাদেশে হরহামেশাই ক্রেতাদের দ্রব্য মূল্য নিয়ে এমন অভিযোগ করতে শোনা যায়। বাড়তি মূল্য পরিশোধে বাজারে গিয়ে নাকাল হওয়ার গুরুতর অভিযোগও রয়েছে।

অথচ ন্যায্য মূল্যে পণ্য কিনতে পারা বা সেবা পাওয়া ভোক্তার অধিকার।

কিন্তু অধিকার আদায়ে ক্রেতার যাওয়ার কোনও জায়গা আছে কি? ক্রেতা কি জানেন অধিকার আদায় কীভাবে করা যায়?

এসব প্ল্যাটফর্ম কতটাই বা ভোক্তার নাগালে রয়েছে?

ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন

বাংলাদেশে ২০০৯ সালে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন প্রণীত হয়। ক্রেতা বা ভোক্তাদের অধিকার সুরক্ষায় এ আইনের অধীনে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর পরিচালিত হয়।

পণ্য কিনতে গিয়ে ঠকলে বা সেবা পেতে বিড়ম্বনা হলে এই অধিদপ্তরে অভিযোগ করতে পারবেন ভোক্তারা।

আইনে বলা হয়েছে, ঘটনার ৩০ দিনের মধ্যে অভিযোগ করতে হবে। নতুবা অভিযোগ গ্রহণযোগ্য হবে না।

জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, অভিযোগ গ্রহণের প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ বিনামূল্যে করা যাবে।

অভিযোগ প্রক্রিয়া ৬০ কার্যদিবসের মধ্যে শেষ করার কথাও বলা হয়েছে।

যেখানে অভিযোগ করা যাবে

রাজধানী ঢাকার কারওয়ান বাজারে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়। মহাপরিচালকের এ কার্যালয়ের পাশাপাশি একই ভবনে অবস্থিত জাতীয় ভোক্তা অভিযোগ কেন্দ্রেও ই-মেইল বা ফোন করে অভিযোগ করতে পারবেন ভোক্তারা।

এছাড়া বিভাগীয় পর্যায়েও রয়েছে অধিদপ্তরের কার্যালয়। চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল, সিলেট ও রংপুরে বিভাগীয় পর্যায়ের কার্যালয়ে অভিযোগ করা যাবে।

প্রত্যেক জেলার জেলা ম্যাজিস্ট্রেটদের কাছেও অভিযোগ করেও সমাধান চাওয়া যাবে।

তবে আইনটিতে বলা হয়েছে, ভোক্তা অধিকার-বিরোধী কাজের অভিযোগে কোনও ব্যক্তির বিরুদ্ধে সরাসরি প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেট বা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করা যাবে না।

ভোক্তা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক যে কর্মকর্তা বা জেলা ম্যাজিস্ট্রেট বা এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটকে ক্ষমতা দেবেন তার কাছেই অভিযোগ করা যাবে।

ভোক্তাদের অভিযোগ অবশ্যই লিখিতভাবে করতে হবে। ফ্যাক্স, ই-মেইল, ওয়েবসাইট ইত্যাদি ইলেক্ট্রনিক মাধ্যমে বা অন্য কোনও উপায়ে অভিযোগ করতে হবে।

অভিযোগের সাথে পণ্য বা সেবা ক্রয়ের রশিদ সংযুক্ত করতে হবে।

অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে অভিযোগকারীর পূর্ণাঙ্গ নাম, পিতা ও মাতার নাম, ঠিকানা, ফোন, ফ্যাক্স ও ই-মেইল নম্বর থাকলে তাও দিতে হবে।

অভিযোগকারীর পেশা উল্লেখ করতে হবে।

ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, ফরমের লাল তারকা চিহ্নিত ঘরগুলো পূরণ করে প্রয়োজনীয় তথ্য প্রমাণ সংযুক্ত করে জমা দিতে পারবেন অভিযোগকারী।

অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে ১৬১২১ নামে একটি হটলাইন নম্বর এবং একটি ই- মেইল এড্রেস-ও দেওয়া হয়েছে।

এ আইনের অধীনে যেসব কাজ ভোক্তা অধিকার-বিরোধী কাজ হিসেবে বিবেচনা করা হবে সেগুলো হল সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে অতিরিক্ত অর্থ আদায়, বিক্রেতা প্রতিষ্ঠানের নিবন্ধন না থাকা ইত্যাদি।

এছাড়াও পণ্য গুদামজাত করা, মানহীন পণ্য উৎপাদন, পণ্যে ভেজাল, ওজনে কম, বেশি দাম নেয়া, ক্রেতার সাথে চুক্তির শর্ত ভঙ্গ হলেও ক্রেতা বা ভোক্তা অভিযোগ করতে পারবেন।

সঠিক অভিযোগ নিষ্পত্তিতে অভিযোগকারী জরিমানাকৃত টাকার ২৫ শতাংশ পাবেন।

আইনটিতে কোন সেবাদানকারীর অবহেলা, দায়িত্বহীনতা বা অসতর্কতায় সেবাগ্রহীতার অর্থ, স্বাস্থ্য বা জীবনহানি ঘটলে অনূর্ধ্ব তিন বছরের কারাদণ্ডেরও শাস্তি রাখা হয়েছে।

এছাড়াও দুই লক্ষ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিতের বিধান রাখা হয়েছে।

বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশে বাজার, রেস্টুরেন্ট, হোটেলসহ বিভিন্ন স্থানে ভোক্তা স্বার্থবিরোধী অভিযান করতে দেখা গেছে ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তরকে। আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে জরিমানাও করা হয়েছে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে।

কনজ্যুমার এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) এর সভাপতি গোলাম রহমান বিবিসি বাংলাকে বলেন, “১০ বা ১৫ বছর আগেও ভোক্তারা অধিকার সম্পর্কে সচেতন ছিল না। এখন যে আইনটা আছে তার ফলে মানুষের সচেতনতা বেড়েছে। আইনটা অল কম্প্রিহেনসিভ তা বলব না। তবে একেবারে সঙ্কীর্ণ তাও নয়।”

মি. রহমান বলেন, “দেশে যে হারে ভোক্তার অধিকার লঙ্ঘন হয় তার তুলনায় এখনও পর্যন্ত অভিযোগের সংখ্যা অনেক কম। জনসচেতনতা আরো বৃদ্ধি করতে হবে।"

"আসলে আলটিমেট লক্ষ্য হওয়া উচিত একটাও যাতে অভিযোগ না হয়। ভোক্তার কোনও অধিকার যাতে লঙ্ঘিত না হয়। আইনের যে ব্যবহার তা আরও বেশি হওয়া দরকার”।

প্রতিবেশী দেশ ভারতে ক্রেতাদের স্বার্থ সুরক্ষায় ‘ক্রেতা সুরক্ষা আদালত’ রয়েছে।

১৯৮৬ সালে এর কার্যক্রম চালু হয়েছে । এমনকি সে দেশের বিভিন্ন রাজ্যে ক্রেতা সুরক্ষা মন্ত্রণালয় ও রয়েছে। ফলে ভোক্তাদের অধিকার অনেকটাই নিরাপদ করার ব্যবস্থা করা হয়েছে। বিবিসি নিউজ