News update
  • Janaza of six Bangladeshi peacekeepers held at Dhaka Cantonment     |     
  • Bangladesh stock market loses Tk 10,500cr in a week     |     
  • Dhaka’s air turns ‘very unhealthy’ on Sunday morning     |     
  • Project to transform N’ganj into a climate-resilient green city     |     
  • Sustainable, rights-based solutions to Rohingya crisis urged     |     

বাইডেন আর ট্রাম্প টেলিভিশনে ৯০ মিনিটের প্রেসিডেন্সিয়াল বিতর্কের জন্য প্রস্তুত

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক গনতন্ত্র 2024-06-27, 1:38pm

ryrerte-32e10292addc54d3aa6f55baa86cebd61719473929.jpg




অনেক আমেরিকানের কাছে এটা গ্রীষ্ম কালে টেলিভিশনে অনুষ্ঠানের পুনঃ প্রচার মনে হতে পারে। কিন্তু প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আর প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প বৃহস্পতিবার ( ২৭ জুন) রাতে এক বিতর্ক অনুষ্ঠানে মুখোমুখি হচ্ছেন, যা হবে ৫ নভেম্বরের নির্বাচনের পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত।

প্রতি চার বছর অনুষ্ঠিত যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ইতিহাসে এবারের বিতর্ক হবে, সময়ের দিক থেকে, সবচেয়ে আগে। কিন্তু এটা হবে ২০২০ সালে তাদের বিতর্কের পুনরাবৃত্তি, যেটা হয়েছিল নির্বাচনের দু’মাস আগে। সেই নির্বাচনে বাইডেন ট্রাম্পকে পরাজিত করে তাঁর পুন নির্বাচনের চেষ্টা ব্যর্থ করেছিলেন।

বৃহস্পতিবারের অনুষ্ঠান হবে প্রথম ঘটনা যখন দু’জন প্রেসিডেন্ট একে অপরের সাথে বিতর্ক করবেন, এবং ২০২০ সালের অক্টোবর মাসের পর বাইডেন আর ট্রাম্প প্রথমবার একই ঘরে অবস্থান নেবেন।

ট্রাম্প ২০২১ সালের জানুয়ারি মাসে বাইডেনের অভিষেকে যোগ দেন নি, এবং তারপর থেকে তাঁরা একে অপরের সাথে বাক-বিতণ্ডায় জরিয়ে আছেন।

বাইডেন নিয়ে কটাক্ষ

সাম্প্রতিক সময়ে, ট্রাম্প বিতর্কের জন্য বাইডেনের প্রস্তুতি নিয়ে কটাক্ষ করেছেন এবং বলেছেন এই মুখোমুখি বিতর্ক সামাল দিতে বাইডেনের ওষুধ নিতে হতে পারে।

ট্রাম্প সম্প্রতি ফিলাডেলফিয়ায় এক সভায় বলেন, “এই মুহূর্তে, ক্রুকেড জো এইটি লগ ক্যাবিনে গেছেন পড়াশোনার জন্য,” এবং বলেই তাঁর হাত দিয়ে প্রশ্নবোধক চিহ্ন আঁকেন। “তিনি এখন ঘুমাচ্ছেন, কারণ তারা তাকে আরও ভাল এবং শক্তিশালী করে তুলতে চায়।”

ট্রাম্প অনেক দিন ধরে দাবী করছেন, বাইডেন “দুটি বাক্য ঠিকমত বলতে পারে না।” তবে বাইডেন যে ট্রাম্পের ভাষ্য অনুযায়ী থুড়থুড়ে বুড়ো না হয়ে আরও শক্তিশালী হতে পারেন, সম্প্রতি ট্রাম্প তাঁর সমর্থকদের সেই সম্ভাবনা সম্পর্কে সজাগ করার চেষ্টা করছেন।

“আমি ধরে নিচ্ছি তিনি একজন সুযোগ্য তার্কিক হবেন,” এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন। “আমি তাঁকে ছোট করে দেখতে চাই না।”

ট্রাম্প নিয়ে টিপ্পনী

মে মাসের মাঝা মাঝি সময়, বৃহস্পতিবারের বিতর্ক নিয়ে চুক্তি হবার ঠিক আগে বাইডেন বলেন, “ডনাল্ড ট্রাম্প আমার কাছে ২০২০ সালে দুটি বিতর্কে পরাজিত হন। তারপর থেকে তিনি আর কোন বিতর্কে চেহারা দেখাচ্ছেন না।”

বছরের আগের দিকে, নিজ দল রিপাবলিকান পার্টির প্রাইমারি নির্বাচনের সময় ট্রাম্প তাঁর প্রতিপক্ষর সাথে কয়েকটি বিতর্ক থেকে নিজেকে সরিয়ে রাখেন।

“এখন তিনি ভাব দেখাচ্ছেন যেন আমার সাথে আবার বিতর্ক করতে চান,” বাইডেন বলেন। “ঠিক আছে, দেখাও তুমি কী পারো।”

ট্রাম্প সম্ভবত বাইডেনের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতির অব্যবস্থাপনার অভিযোগ আনবেন। তিনি মেক্সিকোর সাথে যুক্তরাষ্ট্রের সীমান্তে ঢিলে-ঢালা নিরাপত্তার জন্য বাইডেনকে দোষারোপ করবেন, যার ফলে হাজার হাজার অভিবাসী যুক্তরাষ্ট্রে চলে আসতে পেরেছে। বাইডেন সম্প্রতি সীমান্তে নিয়ন্ত্রণ কঠোর করেছেন।

ট্রাম্প দাবী করেছেন, বাইডেন প্রশাসনের শুরুর দিকে অত্যধিক সরকারী ব্যয়ের কারণে বার্ষিক মূল্যস্ফীতি ৯ শতাংশে পৌঁছায়, যার ফলে খাদ্য, জ্বালানী এবং অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের জন্য পারিবারিক বাজেটে বড় আঘাত আসে। তবে মূল্যস্ফীতি মে মাসে ৩.৩ শতাংশে নেমে আসে।

তাঁর দিক থেকে, বাইডেন সম্ভবত বলবেন যে, ট্রাম্প এখন একজন অপরাধী যাকে আদালত দোষী সাব্যস্ত করেছে। একজন পর্ণ তারকার মুখ বন্ধ রাখতে ঘুষ দিয়ে সেটা গোপন রাখতে তাঁর ব্যবসায়িক রেকর্ড জালিয়াতি করে ২০১৬ সালের নির্বাচনী প্রক্রিয়া প্রভাবিত করার ৩৪টি অভিযোগে ট্রাম্প মে মাসে দোষী সাব্যস্ত হন।

বাইডেন নিশ্চিন্তে ভোটারদের মনে করিয়ে দেবেন যে, ট্রাম্প-এর বিরুদ্ধে আরও তিনটি ফৌজদারি মামলা রয়েছে, যার মধ্যে দুটিতে ২০২০ সালের নির্বাচনের ফলাফল পাল্টে দেয়ার প্রচেষ্টার অভিযোগ আনা হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্টে তিনজন রক্ষণশীল বিচারক নিয়োগের জন্য বাইডেন ট্রাম্পকে দোষারোপ করবেন, যার ফলে যুক্তরাষ্ট্রে গর্ভপাতের সাংবিধানিক অধিকার সর্বোচ্চ আদালত ২০২২ সালে বাতিল করে দেয়।

বাইডেন দাবী করছেন, ট্রাম্প দ্বিতীয় দফায় নির্বাচিত হয়ে তাঁর রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে “শাস্তি” দেয়ার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করলে আমেরিকার গণতন্ত্র হুমকির মুখে পড়বে।

জাতীয় পর্যায়ে জনমত জরীপে দেখা যাচ্ছে বাইডেন এবং ট্রাম্প প্রায় সমান সমান।

যুক্তরাষ্ট্রে অনেক রাজনৈতিক বিশ্লেষক বলেছেন, লক্ষ লক্ষ আমেরিকান ইতোমধ্যেই দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বয়স্ক দুজন প্রার্থীর ব্যাপারে তাদের সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছেন। ডেমোক্র্যাট দলের প্রার্থী জো বাইডেনের বয়স ৮১, আর রিপাবলিকান দলের ট্রাম্প ৭৮।

অনেক ভোটার তাদের দুজনকেই অপছন্দ করেন – বর্তমান আমেরিকান রাজনীতির চলতি ভাষায় যাদের “ ডাবল হেটারস” বলা হয়। তারা খুব গড়িমসি করে দু’জনের একজনকে ভোট দেবেন, অথবা তৃতীয় দলের পক্ষে বা স্বতন্ত্র প্রার্থীকে ভোট দেবেন। অথবা কাউকেই ভোট দেবেন না।

রাজনৈতিক ভাবে স্বতন্ত্র যারা এখনো সিদ্ধান্ত নেন নি, বা হয়তো যারা নির্বাচনী প্রচারণায় তেমন মনোযোগ দেন নি, তাদের জন্য এই বিতর্ক অনুষ্ঠান দিক-নির্দেশনা করতে পারে। সেপ্টেম্বরের ১০ তারিখে দ্বিতীয় বিতর্ক অনুষ্ঠিত হবে।

বাইডেন আর ট্রাম্পের মধ্যে ২০২০ সালে প্রথম বিতর্ক অনুষ্ঠান ৭.৩ কোটির বেশি দর্শক আকর্ষণ করে। বিতর্ক অনুষ্ঠানটি একটি চেঁচা-মেচির উৎসবে পরিণত হয়, এবং দুজন প্রার্থী প্রায়ই একে অপরকে বাধা দিয়ে কথার মধ্যে কথা বলা শুরু করেন।

বিশ্লেষকরা অনুষ্ঠানকে ইতিহাসের সবচেয়ে বাজে বিতর্ক হিসেবে অভিহিত করেন। তাদের দ্বিতীয় বিতর্ক তুলনামূলক ভদ্র ছিল।

বিতর্ক নিয়ন্ত্রনে নতুন নিয়ম

বৃহস্পতিবারের বিতর্কে নাটকীয় ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করার জন্য নতুন নিয়ম তৈরি করা হয়েছে। অনুষ্ঠানটি দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর আটলান্টায় সিএনএন-এর টেলিভিশন স্টুডিওতে দুজন অভিজ্ঞ উপস্থাপক, জেক ট্যাপার এবং ডানা ব্যাশ সঞ্চালন করবেন। স্টুডিওতে কোন দর্শক থাকবে, যার ফলে বিতর্কের সময় উল্লাস, হাততালি বা দুয়োধ্বনির সম্ভাবনা থাকবে না।

দু’পক্ষের সম্মতিক্রমে তৈরি নিয়মাবলী অনুযায়ী, প্রত্যেক প্রার্থী তাদেরকে সরাসরি করা প্রশ্নের উত্তর দেয়ার জন্য দু’মিনিট সময় পাবেন। এক জনের উত্তর খণ্ডন করার জন্য অপর জন এক মিনিট সময় পাবেন, এবং খণ্ডনের জবাব দেয়ার জন্য অন্য জন এক মিনিট পাবেন।

হয়তো সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, যে প্রার্থীকে প্রশ্ন করার হচ্ছে, শুধু তাঁর মাইক্রোফোনই খোলা থাকবে। তাদের কথা বলার সময় শেষ হবার পাঁচ সেকেন্ড আগে লাল বাতি ফ্ল্যাশ করতে থাকবে। সময় ফুরিয়ে গেলে এবং মাইক্রোফোন অফ হয়ে গেলে লাল বাতি স্থির হয়ে জ্বলবে।

বিতর্ক অনুষ্ঠান চলবে ৯০ মিনিট ধরে, মাঝে সাড়ে তিন মিনিট করে দুটি বিজ্ঞাপন বিরতি থাকবে। তবে বিরতির সময় প্রার্থীদের উপদেষ্টারা তাদের সাথে কথা বলতে পাড়বে না। প্রার্থীরা কোন জিনিস বা আগে থেকে লেখা নোট নিয়ে আসতে পারবেন না, তবে তাদের কাগজ, কলম এবং পানি দেয়া হবে।

অনুষ্ঠানের শুরুতে ভাষণের কোন সুযোগ থাকবে না। কে স্টেজের কোন দিকে দাঁড়াবে এবং কার সমাপনি বক্তব্য শেষে হবে তা নির্ধারণ করার জন্য টস করা হয়। বাইডেন টসে জিতে স্টেজের ডান দিক বেছে নেন, আর শেষ সমাপনি বক্তব্য দেবার সুযোগ পাবেন ট্রাম্প ।