News update
  • NBR seeks account details of Salman, Akbar Sobhan, 3 other tycoons     |     
  • UNHCR welcomes S. Korea’s $3M contribution for Rohingyas in BD     |     
  • UNHCR welcomes S Korea’s contribution of USD 3 mn for Rohingyas in BD     |     
  • UN Team in Dhaka to Discuss Human Rights Investigation Process     |     
  • Nearly 1.8 million people affected by flood in 6 districts; 1 dies     |     

দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন ‘৪০০ কোটির পিয়ন’ জাহাঙ্গীর

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক দুর্নীতি 2024-07-16, 12:24am

img_20240716_002046-6fd65c01bc4f146c10b7467c9ede505e1721067882.jpg




প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একসময়ের ব্যক্তিগত কর্মচারী ৪০০ কোটি টাকার মালিক আলোচিত জাহাঙ্গীর আলম যুক্তরাষ্ট্রে পালিয়ে গেছেন। রোববার (১৪ জুলাই) চীন সফর নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে প্রসঙ্গক্রমে প্রধানমন্ত্রী ৪০০ কোটি টাকার মালিক এই পিয়নের বিষয়টি তুলতেই দেশজুড়ে ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দেয়। এর মধ্যেই রোববার (১৪ জুলাই) রাতে জাহাঙ্গীর যুক্তরাষ্ট্রে পালিয়ে গেছেন বলে জানা গেছে।

জাহাঙ্গীরের বড় ভাই মো. মীর হোসেন বিষয়টি গণমাধ্যমে নিশ্চিত করেছেন। মো. মীর হোসেন নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলার খিলপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্বে রয়েছেন। জাহাঙ্গীরের অবস্থান নিয়ে মীর হোসেন বলেন, সে (জাহাঙ্গীর) দুই বিয়ে করেছে। প্রথম স্ত্রীর ঘরে এক সন্তান আর দ্বিতীয় স্ত্রীর ঘরে তিন সন্তান রয়েছে। প্রথম স্ত্রী দেশে আছে, তবে তার সঙ্গে জাহাঙ্গীরের যোগাযোগ নেই। দ্বিতীয় স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে থাকেন। রোববার রাতে তার কাছেই চলে গেছে জাহাঙ্গীর।

জানা গেছে, খিলপাড়া ইউনিয়নের নাহারখিল গ্রামে জাহাঙ্গীরের চারতলা বাড়ি রয়েছে। বাড়িটির দোতলা ও তিন তলায় জাহাঙ্গীর থাকতেন। সোমবার বিকেলে দুটি ফ্লোর তালাবদ্ধ অবস্থায় দেখা গেছে।

প্রধানমন্ত্রীর মুখে ভাইয়ের এমন কীর্তিকলাপ শুনে লজ্জিত ও হতভম্ব মীর হোসেন। তিনি বলেন, আমরা এতদিন জানতাম প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তার খুবই ভালো সম্পর্ক। তার কার্যালয়ে আসা-যাওয়া আছে। হঠাৎ রোববার প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলনে ৪০০ কোটি টাকার মালিক হয়ে যাওয়ার কথা শুনে লজ্জিত ও হতভম্ব হয়ে পড়ি। তার ব্যক্তিগত সবগুলো মোবাইল নম্বর বন্ধ আছে। এ জন্য যোগাযোগ করতে পারছি না।

জানা গেছে, জাহাঙ্গীর আলম প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত কর্মচারী হিসেবে একসময় কর্মরত ছিলেন। ২০০৯ সাল থেকে ২০১৮ সালের দুই মেয়াদের পুরোটা সময় এবং প্রধানমন্ত্রীর টানা তৃতীয় মেয়াদেরও কিছু সময় ছিলেন।

প্রধানমন্ত্রীর ব্যাগ বহন করতেন, প্রধানমন্ত্রীর খাবার সামনে এগিয়ে দিতেন এবং অন্যান্য ফাই-ফরমাশ খাটতেন। আওয়ামী লীগ সভাপতি যখন বিরোধী দলে তখন থেকেই জাহাঙ্গীর প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন। প্রধানমন্ত্রী ঢাকার বাইরে যখন বিভিন্ন রাজনৈতিক সভায় যেতেন সেখানেও জাহাঙ্গীরকে দেখা যেত। আস্তে আস্তে জাহাঙ্গীরের একটি রাজনৈতিক বলয় তৈরি হয়ে যায়।

জাহাঙ্গীরের বাড়ি নোয়াখালীর চাটখিলে। সেই সময় তার আমন্ত্রণে সরকারের অনেক প্রভাবশালী মন্ত্রী হেলিকপ্টারে করে নোয়াখালীর চাটখিলে বিভিন্ন কর্মসূচিতে গিয়েছিলেন। যার কিছু ছিল জাহাঙ্গীরের ব্যক্তিগত আয়োজনের অনুষ্ঠানে। একই সময়ে প্রধানমন্ত্রীর আরেক পিয়ন আবদুল মান্নানকেও চাকরিচ্যুত করা হয়েছিল। তবে তার বিরুদ্ধে হেলিকপ্টার ব্যবহারের কোনো সংবাদ পাওয়া যায়নি।

গণভবনে থাকার সময় তিনি আওয়ামী লীগ নেতাদের চেয়েও ক্ষমতাবান হয়ে উঠেছিলেন। আওয়ামী লীগের কিছু কিছু ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ, গণভবনে থাকেন, তাকে বলে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করা যায় ইত্যাদি ভ্রান্ত ধারণার বশবর্তী হয়ে জাহাঙ্গীরের প্রতি আলাদা ‘সমীহ’ দেখাতে শুরু করেন। তাদের কেউ কেউ জাহাঙ্গীরকে ‘স্যার’ ডেকেছেন বলেও শোনা যায়। এমনকি, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাও জাহাঙ্গীরের কাছে তদবির করতেন। এই জাহাঙ্গীর গণভবনে থেকে বিভিন্ন ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তাকে প্রধানমন্ত্রীর নাম ভাঙিয়ে বিভিন্ন তদবির করতেন। এভাবে আস্তে আস্তে বিত্তশালী হয়ে ওঠেন এই কাজের লোক। পরবর্তীতে অবশ্য গণভবন থেকে রেবিয়ে যাওয়ার পর এখন তাকে রাজনীতিতে দেখা যায় না ওর।

তবে জাহাঙ্গীর আলম প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত কর্মচারী হলেও তিনি নিজের পরিচয় দিতেন প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত বিশেষ সহকারী। এই পরিচয় ব্যবহার করে নিয়মিত সচিবালয়ে তদবির বাণিজ্য করতেন। একই সঙ্গে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের কাছে নানান তদবির করে অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন। একই পরিচয় ব্যবহার করে তিনি নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি পদও বাগিয়ে নিয়েছিলেন। নোয়াখালী-১ সংসদীয় আসনে নিজের একটি রাজনৈতিক ব্লকও তৈরি করেছেন। 

প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্যের পর দুর্নীতি দমন কমিশনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে দুদকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেছেন যে, বিষয়টি সম্পর্কে তারা অবহিত এবং জাহাঙ্গীরের ব্যাপারে ইতোমধ্যে তদন্ত শুরু হয়েছে। খুব শিগগিরই তার সম্পদ জব্দের প্রক্রিয়া শুরু হবে। তবে জাহাঙ্গীর এখন দেশের বাইরে অবস্থান করছেন বলে জানা গেছে। আরটিভি।