News update
  • World leaders meet in Brazil to tackle global warming     |     
  • Brazil Launches Fund to Protect Forests and Fight Climate Change     |     
  • UN Warns Conflicts Are Devastating Ecosystems Worldwide     |     
  • Flood-hit Kurigram char residents see little hope in politics, elections     |     
  • Air quality of Dhaka continues to be ‘unhealthy’ Friday morning     |     

'ধর্মকে বুঝতে হবে নিজের কাণ্ডজ্ঞান ও আধ্যাত্মিকতা দিয়ে’ – রাজিক হাসান

ধর্মবিশ্বাস 2023-09-21, 2:45pm

kazi-azizul-huq-43b2851149d68a1f2ab49ac751f417471695285924.jpg

Kazi Azizul Huq



কাজী আজিজুল হক

হাজার হাজার তাফসীরের মধ্যে বহু তাফসীর সরাসরি একে ওপরের সাংঘর্ষিক। যেমন, এরকমের কিছু তাফসীরে পাওয়া যায় যেখানে ব্যাভিচারের দায়ে নারী - পুরুষ কে পাথর ছুঁড়ে হত্যাকে জায়েজ করা হয়েছে; আবার এমনও তাফসীর দেখা যায় যেখানে পাথর মেরে হত্যাকে সম্পূর্ণ ইসলাম বিরোধী বলে বিধান দেয়া হয়েছে। 

বহু ইসলামী স্কলার ইসলামের সবচাইতে বড় সমস্যা হিসাবে গণ্য করেছেন এই ইসলামী 'তাফসীর'। ধর্মকে বুঝতে হবে নিজের কাণ্ডজ্ঞান ও আধ্যাত্মিকতা দিয়ে। পায়ের বুড়ো আঙ্গুলের নখ কিভাবে কাটতে হবে সে বিষয়ে কুরআনের আর সুন্নাহর নির্দেশ কি? এই ধরনের প্রশ্নের বদলে মুসলমানেরা যখন কুরআন কে কেবল একটা আধ্যাত্মিকতার উৎস হিসাবে নিতে পারবেন সেদিন তাফসীর এর প্রয়োজনীয়তা ফুরিয়ে যাবে। 

তাফসীর ভিত্তিক ইসলামকে ইতিমধ্যেই চ্যালেঞ্জ করা শুরু হয়েছে, মিশর ও তুরস্কে তা আপাতত একাডেমিক চত্বরে।

ইসলামী বিশেষজ্ঞরা দ্বিধাগ্রস্থ হয় জয়ীফ আর সহি হাদিস নিয়ে। যয়ীফ ও সহি হাদিসের সঠিক সন্ধান করতে বহু ইসলামিক স্কলার তর্কে লিপ্ত হয়েছেন। ১৪০০ বছরেও সে তর্ক শেষ হয় নি, আজও চলছে। 

কারবালার ইতিহাস একেকজন একেকভাবে ব্যাখ্যা করেন। এমন কি ইয়াজিদ অভিশপ্ত কি না তা নিয়েও মতভেদ রয়েছে। আমি যদি বলি আমার কাছে অমুক মাওলানা সাহেবের কথাগুলো যুক্তিযুক্ত মনে হয়েছে; তখন আর অন্য আর এক পক্ষ আমাকে ধর্মদ্রোহী আখ্যা দিতে পারেন। 

যদি ইসলামী বিশেষজ্ঞদের বলা হয় ক্রিকেট খেলা হালাল নাকি হারাম? উত্তরে কেউ হাদিস দেখিয়ে বলবেন হারাম, কেউ সেই হাদীসকে বাতিল ঘোষণা করে বলবেন হালাল। আবার কেউ বলবেন হালাল যদি কিন্তু তবে... 

শুধু তাই নয়, এই আলোচনায় এক বিশেষজ্ঞ অন্য বিশেষজ্ঞকে মুনাফিক, খারিজি, সালাফি, আহমদিয়া, ইহুদীর দালাল বলে গালাগালিও করে ফেলবেন।

এই বিশেষজ্ঞদের নারীর উচ্চশিক্ষা অর্জনের ব্যাপারে ইসলামের মাসআলা কী? জিজ্ঞাসা করলে দেখা যায় কেউ বলবেন সম্পূর্ন অধিকার রয়েছে, কেউ বলবেন নারীর প্রধান কর্তব্য স্বামীর হক আদায় করা, সন্তানের হক আদায় করা, উচ্চশিক্ষায় সময় দিয়ে হক আদায় ব্যাহত হয়। কেউ বলবেন নারীর আলাদা বিশ্ববিদ্যালয়ে হালাল, কেউ বলবেন কম্বাইন্ড হইতে পারে পর্দার খিলাফ না করে। শফি হুজুরের মতো আলেমরা বলবেন ক্লাস ফোরের পর বিয়া দিয়া দেন তেঁতুলদের।

এই নিয়া তারা মুর্তাদ, জাহান্নামী, ওরে বাটপার ইত্যাদি গালাগালিতে জড়ায় যাবেন।

আবার এই বিশেষজ্ঞদের জিজ্ঞেস করুন নারীর পেশাজীবি হওয়া হালাল নাকি হারাম?

একজন বলবেন হালাল, নবীর স্ত্রী সফল ব্যবসায়ী ছিলেন, আরেকটায় বলবে হারাম, এতে নারীর কমনীয়তা নষ্ট হয়, স্বামী-সন্তান হক আদায় হয় না, পরপুরুষের সাথে কাজ করে ঈমান নষ্ট হয়, আরেক জন বলবেন বলবে হালাল, যদি কিন্তু তবে...

এই নিয়াও তারা পরস্পরকে ভ্রান্ত, জালেমের চামচা, পশ্চিমা চিন্তার সেবাদাস, ইহুদীর দালাল ইত্যাদি বিশেষণে অভিহিত করে খন্ডযুদ্ধে নেমে যাবেন।

প্রকৃত ইসলাম কী তা এরা নিজেরাও নিশ্চিত না। যে যার মুরিদ হয় সেই লাইনে বিশ্বাস করে, সেই লাইনে চিন্তা করে কিন্তু সবাই মিলে এক থিওরিতে আসতে পারে না। চিন্তায় ও বিশ্বাসে কখনই তাদের মিল হয় না। 

কেন মিল হয় না সে আলাপ আরেকদিন হবে। - রাজিক হাসান