একদিকে বসন্তের আমেজ, অন্যদিকে শীতের বিদায়, ফাল্গুনের সূচনা। সঙ্গে যোগ হয়েছে ভালোবাসা দিবস। তাই অগণিত পর্যটক দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে এসেছে সৈকতের শহর কক্সবাজারে। যেন ভালোবাসা রঙ লেগেছে সাগরতীরে। আর বিশেষ দিবসে কাঙ্ক্ষিত পর্যটকের ঢলে খুশি পর্যটন সংশ্লিষ্টরা।
প্রকৃতিতে এসেছে মধুর বসন্ত। সঙ্গে যোগ হয়েছে ভালোবাসা দিবস। পয়লা ফাল্গুন আর বিশ্ব ভালোবাসা দিবসের রঙ লেগেছে বিশ্বের অন্যতম দীর্ঘ সমুদ্রসৈকত কক্সবাজারে। একে তো সাপ্তাহিক ছুটির দিন, তার ওপর বসন্ত-ভালোবাসা দিবস। বিশেষ দিনকে ঘিরে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে উপচে পড়ছে ভালোবাসার ঢেউ! ফাগুনের আগুনে জ্বলছে পর্যটন শহরটি।
সমুদ্রস্নান, জেড স্কী বা ঘোড়ার পিঠে চড়া আর বালিয়াড়িতে বসে সমুদ্র অবলোকনসহ প্রিয়সব মুহূর্ত যেন রঙিন হয়ে ওঠেছে ভালোবাসার রঙে। আর সমুদ্রের উত্তাল ঢেউয়ের সঙ্গেও যেন চলছে ভালোবাসার মিতালি।
ঢাকার মতিঝিল থেকে আসা ইভা রহমান বলেন, ‘এমনিতেই আজ ভালোবাসা দিবস, কিন্তু আমাদের জন্য এ দিনটি আরও স্পেশাল, কারণ তিন বছর আগে এইদিনেই আমাদের বিয়ে হয়েছিল। তাই বিশেষ দিনে প্রিয়জনের সঙ্গে বিশেষ একটি জায়গায় ঘুরে বেড়ানো, সময় কাটানো আসলেই আমার কাছে অন্য রকম অনুভূতি। সত্যিই ভালো লাগছে।’
ঢাকার মিরপুরের বাসিন্দা তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আমার কাছে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত মানেই স্পেশাল একটি জায়গা। যদিও এখন বর্ষা নয়, যখন বৃষ্টি নামে, বৃষ্টির সঙ্গে সমুদ্রকে দেখা আমার কাছে অসাধারণ অনুভূতি। কক্সবাজার আসার সময় পয়লা ফাগুন বা ভালোবাসা দিবসের কথা মোটেও ভাবিনি। কিন্তু এখানে এসেই দেখছি, এদিনটি উদযাপনের জন্য অনেকেই আসছে, দেখে খুব ভালো লাগছে।’
সাপ্তাহিক ছুটির দিনে সৈকতে অন্তত লাখো পর্যটকের সমাগম। কেউ প্রিয়জনের সঙ্গে, কেউ বাবা-মা; অনেকেই প্রিয় বন্ধুর সঙ্গে ছুটে এসেছেন কক্সবাজারে। আর কাঙ্ক্ষিত পর্যটকের ঢলে খুশি সৈকতপাড়ের ব্যবসায়ীরা।
সৈকতের ফটোগ্রাফার গফুর উদ্দিন বলেন, বিপুল সংখ্যক পর্যটক কক্সবাজার সৈকতে এসেছে। তারা ছবি তুলছে। যার কারণে আমাদের আয় বেড়েছে। খুবই খুশি লাগছে এত পর্যটক দেখে।
জেড স্কী চালক রহিম বলেন, প্রত্যাশার চেয়ে বেশি পর্যটক কক্সবাজার এসেছে। এতে সৈকতপাড়ের সবারই ব্যবসা ভালো হচ্ছে।
আর পর্যটকদের সমুদ্রম্নানে বিশেষ ব্যবস্থা নিয়েছে লাইফ গার্ড সংস্থা। সী সেফ লাইফ গার্ড সংস্থার কর্মী মঞ্জুর হাসান রাজু বলেন, পর্যটকদের সমুদ্রস্নানে নিরাপত্তা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। তারপরও ৩টি পয়েন্টে সার্বক্ষণিক তদারিক করা হচ্ছে যাতে কোনো ধরনের দুর্ঘটনা না ঘটে।
পর্যটকদের নিরাপত্তায় সৈকতসহ সব পর্যটন স্পট ও হোটেল-মোটেল জোনে বিশেষ ব্যবস্থা নিয়েছে ট্যুরিস্ট পুলিশ। ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার রিজিয়নের অতিরিক্ত ডিআইজি আপেল মাহমুদ বলেন, ‘পয়লা ফাল্গুন, বিশ্ব ভালোবাসা দিবস ও সাপ্তাহিক ছুটির দিনকে কেন্দ্র করে ২ থেকে ৩ লাখ পর্যটক অবস্থান করছে কক্সবাজারে। যার তাদের নিরাপত্তায় বিশেষ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। টহল দলের পাশাপাশি গোয়েন্দা নজরদারিও বৃদ্ধি করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত কোনো ধরনের দুর্ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। সময়