News update
  • Jhenaidah-4 MP missing after going to India for treatment     |     
  • UN HR chief wants BD provide safety to fleeing Rakhine people      |     
  • Quader dissatisfied over the plan of imposing 15% VAT on metro rail     |     
  • Gaza hospital says 20 killed in Israeli strike on Nuseirat     |     
  • Officials warned against negligence in OMS food distribution     |     

তিস্তা প্রকল্প বাস্তবায়ন করে মানুষকে ক্ষরা ও বন্যার দূর্যোগ থেকে বাঁচানঃ আইএফসি

পানি 2023-04-01, 11:00pm

teesta-river-in-bangladesh-goes-dry-every-lean-season-for-diversion-of-its-water-in-india-650a4587f24e602ef554201cd2d336a71680368434.jpg

The Teesta goes dry every lean season due to diversion of its water in India.



ঢাকা এপ্রিল ০১ – আন্তর্জাতিক ফারাক্কা কমিটি (আইএফসি) সম্প্রতি দিল্লীর কাছে নোট ভার্বেলের মাধ্যমে তিস্তা নদীর পানি সরিয়ে নেয়ার জন্য আরো দুটি খাল খননের বিষয়ে ব্যাখ্যা চাওয়ায় সরকারকে সাধুবাদ জানিয়েছে। একই সাথে আইএফসি তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের আহবান জানিয়েছে, কারন তিস্তা নদীর যৌথ ব্যবস্থাপনার প্রশ্ন অমিমাংশিত থাকায় দুই দশক ধরে এ নদীর শুষ্ক প্রবাহ থেকে এদেশের মানুষ বঞ্ছিত থেকে বিপর্যয়ের মধ্যে রয়েছে।    

তিস্তা নদীর বৃহত্তর অববাহিকা বাংলাদেশে থাকায় তার যৌথ ব্যবস্থাপনার জন্য কুটনৈতিক প্রয়াস অবশ্যই অব্যাহত রাখতে হবে। তাই বলে বাংলাদেশে তিস্তা অববাহিকায় বসবাস রত ২ কোটি মানুষ শুষ্ক মওসুমে তীব্র খরা এবং বর্ষা মওসুমে প্রলয়ংকরি বন্য ও নদীর তীর-ভাঙ্গনের মত দূর্যোগের মধ্যে পড়ে থাকতে পারেনা। আইএফসি এক বিবৃতিতে একথা উল্লেখ করে।  

দশকের পর দশক স্বাভাবিক প্রবাহ থেকে বঞ্চিত বাংলাদেশে তিস্তা নদী এখন মৃতপ্রায়। শুস্ক মৌসূমে সম্পূর্ণ প্রবাহ সরিয়ে নেয়ায় বিশাল এ নদী শুকিয়ে যায়। পরিবেশ ও মানুষের জীবনযাত্রার মারাত্মক ক্ষতি হয়। ক্ষরা মারাত্মক আকার ধারণ করে। মানুষ পায়ে হেঁটে নদীর এপার ওপার যাতায়াত করতে পারে। বর্ষায় নদীর পুরো প্রবাহ ভারতের গজল ডোবা ব্যারেজের স্লুইস গে্ট দিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়। এই অতিরিক্ত পানির প্রবাহ তিস্তা বহন করতে পারেনা। ফলে বাংলাদেশে প্রতিবছর মারাত্মক প্লাবন ও নদীর পাড় ভাঙ্গনের তান্ডব সৃষ্টি হয়। গত বছর চারদফা বন্যায় তিস্তা নদীর দুইপাড়ের মানুষ সর্বশান্ত হয়েছে।

পানি প্রাপ্তির আশ্বাস অব্যাহত আছে, কিন্তু পানি আসছেনা। পানি সরিয়ে নেয়ার নতুন উদ্যোগ তিস্তাপাড়ের মানুষকে আরো আশাহত করেছে। যত দিন যাচ্ছে তত পানি প্রাপ্তির সম্ভাবনা ক্ষীণতর হচ্ছে। এই প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উদ্যোগে তিস্তা বেসিনে প্রতিবছর অতিবন্যা ও ভাঙ্গনে বাংলাদেশের উত্তরপশ্চিমাঞ্চলের মানুষের যে বিপুল ক্ষয়ক্ষতি হয় তা মোকাবেলার পাশাপাশি এ অঞ্চলের সার্বিক উন্নয়নের একটা মহাপরিকল্পনার ছক তৈরী করেছে গনচীনের পাওয়ার চায়না কোম্পানী। প্রায় ১০০০০ কোটি টাকার এই পরিকল্পনায় নিলফামারির ডালিয়ায় নির্মিত তিস্তা ব্যারেজ থেকে মহিপুর ও কাউনিয়া হয়ে তিস্তার মোহনা পর্যন্ত ১০২ কিলোমিটার এলাকার টেকসই উন্নয়নের কথা বলা হয়েছে। এই মহাপরিকল্পনা ঋনের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করার প্রস্তাব করে হয়েছে।

ড্রেজিং-এর মাধ্যমে নদীর নাব্যতা বৃদ্ধির পাশাপাশি ১৭০ বর্গকিলোমিটার জমি উদ্ধার এবং নদীর মূল স্রোত ষ্টেবিলাইজ করে উত্তরপশ্চিমাঞ্চলে তিস্তার উভয় তীরে স্যাটেলাইট টাউন নির্মানের কথা বলা হয়েছে। সাথে থাকবে উচ্চ আয়ের শিল্প এবং কৃষি উন্নয়নের ব্যবস্থা। সোলার পার্ক, স্কুল, হেলথ কমপ্লেক্স, মসজিদ, এবং সাধারণের ব্যবহার্য সুযোগ সুবিধা। নদীর দুই তীরে তৈরী বাঁধ এবং তার সাথে সংযুক্ত সড়ক পথে যান চলাচল এবং নদীতে নৌযানের ব্যবস্থা এই অঞ্চলের উন্নয়ন ত্বরান্বিত করবে।    

আইএফসি নেতৃবৃন্দ মনে করেন দেশের উত্তরাঞ্চলে যখন মরুকরণের প্রক্রিয়া  ঘনিভুত হচ্ছে তখন কবে পানি পাওয়া যাবে তার জন্য হাত গুটিয়ে বসে থাকা সমিচীন নয়। যদিও এই পরিকল্পনা নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ নিশ্চিত করে নদীকে জীবিত রাখার প্রচেষ্টার বিকল্প নয়, তবুও বন্যা ভাঙ্গনের ক্ষয়ক্ষতি লাঘব ও সমন্বিত উন্নয়ন কর্মকান্ডের মাধ্যমে উত্তরপশ্চিমাঞ্চলের মানুষের ভাগ্য উন্নয়নের এই প্রচেষ্টা সফল হতে পারে। প্রকৃতির স্বাবাভিক নিয়মে উজানে যখন পানির প্রবাহ ফিরিয়ে আনার তাগিদ আসবে তখন বাংলাদেশের তিস্তা অংশ নতুন জীবন ফিরে পাবে।

আইএফসি নেতৃবৃন্দের সুপারিশ, উল্লেখিত মহপরিকল্পনাকে আরেকটু বাড়িয়ে বাংলাদেশে তিস্তার পুরনো মূল অববাহিকায় অবস্থিত আত্রাই, করতোয়া এবং পুনর্ভবা নদী এর আওতায় আনা গেলে দেশের উত্তরপশ্চিমাঞ্চলের সার্বিক  উন্নয়ন নিশ্চিত হবে। এভাবে সাজালে প্রকল্পের ব্যাপ্তি বর্তমান ৪ হাজার বর্গকিলোমিটারের জায়গায় হবে ২৮ হাজার বর্গ কিলোমিটার। বিশাল চলনবিলে বর্ষা মওসূমে অনেক পানি ধরে রেখে মাছ চাষ, হাঁসপালন এবং শুকনো মওসূমে সেচের ব্যবস্থা করা যাবে। আশে পাশের এলাকার ভূগর্ভস্থ পানির স্তর উপরে উঠে আসবে এবং সকল নল্কুপ সারাবছর সচল থাকবে। 

উক্ত বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন আইএফসি নিউইয়র্ক চেয়ারম্যান আতিকুর রহমান সালু, মহাসচিব সৈয়দ টিপু সুলতান, আইএফসি বাংলাদেশ সভাপতি অধ্যাপক জসিম উদ্দিন আহমাদ, সিনিয়র সহ-সভাপতি ডঃ এস আই খান, সাধারণ সম্পাদক ইরফানুল বারী এবং আইএফসি সমন্বয়ক মোস্তফা কামাল মজুমদার।