News update
  • Chief Adviser Dr. Yunus leaves Dhaka for Davos to attend WEF     |     
  • Fertiliser crisis hits Shailkupa Onion farmers in peak season     |     
  • Trump returns to power after unprecedented comeback     |     
  • US Charge d’affaires Tracey Jacobson calls on Chief Adviser     |     
  • Infections cause 20-40% of newborn deaths in BD: Study     |     

ট্রাম্পের কঠোর অভিবাসন নীতি: আশ্রয় আবেদন বাতিল ও সীমান্তে জরুরি অবস্থা

বিবিসি প্রবাস 2025-01-21, 11:26am

rtewrwqerqw-9ab283fbe50e48f2c7c05e23a2ca99581737437192.jpg




দায়িত্ব নেওয়ার পর ওভাল অফিসে ডেস্কের পিছনে বসে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প অভিবাসন ঠেকাতে একের পর এক নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করলেন।

জন্মগত নাগরিকত্বের সংজ্ঞা নির্ধারণের আদেশ থেকে শুরু করে অবৈধ অভিবাসন বন্ধে সীমান্তে জাতীয় জরুরি অবস্থা ঘোষণা পর্যন্ত, ট্রাম্প তার নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিগুলো বাস্তবায়নের দ্রুত পদক্ষেপ নিলেন।

এর আগেই যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো সীমান্তে কড়াকড়ি আরোপের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন ট্রাম্প।

তবে, বিশেষত জন্মগত নাগরিকত্বের সংজ্ঞা পরিবর্তন করার যে কোনও আদেশ আইনি চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে।

আগেই ট্রাম্প প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে বাইডেন প্রশাসনের 'ধ্বংসাত্মক' নীতিগুলো 'পাঁচ মিনিটের মধ্যেই' বাতিল করা হবে।

এর কয়েক ঘণ্টা আগেই, হাজার হাজার অভিবাসন প্রত্যাশীর অ্যাপয়েন্টমেন্ট বাতিল করা হয়। কারণ নতুন প্রশাসন 'সিবিপি অন' অ্যাপ বাতিল করে। এই অ্যাপের মাধ্যমে মূলত সীমান্ত দিয়ে প্রবেশের জন্য আগে থেকেই বুকিং করতে হয়।

ট্রাম্প তার উদ্বোধনী ভাষণে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে 'সমস্ত অবৈধ প্রবেশ বন্ধ করা হবে' এবং লক্ষাধিক 'অবৈধ অভিবাসী' ফেরত পাঠানো হবে।

তিনি মেক্সিকোর মাদক চোরাকারবারী চক্রগুলোকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে আখ্যা দেয়ার একটি আদেশেও স্বাক্ষর করেন।

এর আগে ওয়াশিংটনের ক্যাপিটাল ওয়ান এরিনায় এক অনুষ্ঠানে ট্রাম্প বিগত বাইডেন প্রশাসনের প্রায় ৮০টি নির্বাহী আদেশ আনুষ্ঠানিকভাবে বাতিল করেন, যেগুলোকে তিনি 'উগ্রপন্থী' হিসেবে উল্লেখ করেছিলেন।

ক্যাপিটল হিলের উদ্বোধনী ভাষণে ট্রাম্প বলেছিলেন, "আমার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব নিজের দেশকে হুমকি এবং আক্রমণ থেকে রক্ষা করা"।

এর অংশ হিসেবে, ট্রাম্প প্রশাসনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন যে প্রেসিডেন্ট প্রতিরক্ষা বিভাগকে 'সীমান্ত সিল' করার নির্দেশ দেবেন এবং সেখানে অতিরিক্ত জনবল, ড্রোন এবং প্রযুক্তির ব্যবহারও করা হবে।

এর আগে, ট্রাম্প প্রশাসনের কর্মকর্তারা বলেছেন যে এই পদক্ষেপগুলো 'স্বাভাবিক বোধসম্পন্ন অভিবাসন নীতি' তৈরির সমতুল্য।

যদিও আদেশের বিস্তারিত এখনও জানা যায়নি। তবে কর্মকর্তারা বলেছেন, ট্রাম্প জন্মগত নাগরিকত্ব বন্ধ করার পরিকল্পনা করছেন। এর মানে হলো, যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত অবৈধ অভিবাসীদের সন্তানরা আর আগের মতো যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক বলে গণ্য হবেন না।

তবে, জন্মগত নাগরিকত্বের বিষয়টি যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানেই আছে এবং এটি পরিবর্তন করতে হলে কংগ্রেসের উভয় কক্ষে দুই-তৃতীয়াংশ ভোট প্রয়োজন।

যে কারণে কর্মকর্তারা এ বিষয়ে বিস্তারিত জানাননি, এবং ট্রাম্প কীভাবে এটি বাস্তবায়ন করবেন তাও পরিষ্কার করেননি।

ট্রাম্প প্রশাসন খুব দ্রুতই 'সিবিপি অন' মোবাইল অ্যাপ বাতিলের পদক্ষেপ নিয়েছে। এই অ্যাপ ব্যবহারের মাধ্যমে অভিবাসীরা সীমান্ত দিয়ে প্রবেশ করতো।

বাইডেন প্রশাসনের কর্মকর্তারা জানিয়েছিলেন যে এই অ্যাপটি ২০২৩ সালের জানুয়ারি মাসে চালু হওয়ার পর থেকে সীমান্তে আটক হওয়া মানুষের সংখ্যা কমাতে সাহায্য করেছে। এটি ছিল যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো সীমান্তে আশ্রয় প্রার্থনা করার একমাত্র বৈধ উপায়।

এখন, কাস্টমস ও বর্ডার প্রোটেকশন বা সিবিপি-এর ওয়েবসাইটে উল্লেখ করা হয়েছে, 'এই অ্যাপটি আর কার্যকর নেই'।

এটি ব্যবহারকারীরা অ্যাপে ঢুকে একটি তথ্য দেখতে পাচ্ছেন যে 'সিবিপি অ্যাপের মাধ্যমে আগের নির্ধারিত অ্যাপয়েন্টমেন্টগুলো এখন আর বৈধ নয়'।

বিবিসি'র যুক্তরাষ্ট্রের পার্টনার প্রতিষ্ঠান সিবিএস'র রিপোর্টে বলা হয়েছে, সিবিপি অন অ্যাপের মাধ্যমে বাইডেন প্রশাসন আগামী তিন সপ্তাহের জন্য ৩০ হাজার অভিবাসীর অ্যাপয়েন্টমেন্ট চূড়ান্ত করেছিল।

ধারণা করা হচ্ছে, সিবিপি অন অ্যাপ ব্যবহার যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের জন্য প্রায় দুই লাখ ৭০ হাজার অভিবাসী মেক্সিকোতে অপেক্ষা করছিলেন।

মেক্সিকোর সীমান্ত শহর তিজুয়ানায় কিছু অভিবাসন প্রত্যাশী জানিয়েছেন যে তারা সিবিপি অন অ্যাপ ব্যবহার বন্ধ হওয়ার কারণে হতাশ এবং মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন।

"আমি প্রত্যাশা করি ঈশ্বর তার মনটাকে নরম করবে", বলছিলেন ওরালিয়া নামের একজন মেক্সিকান নারী। যিনি মেক্সিকোর কার্টেলের সহিংসতা থেকে বাঁচতে নিজের মৃগী আক্রান্ত ছেলেকে নিয়ে পালিয়ে এসেছিলেন।

তিনি সাত মাস ধরে সিবিপি অন অ্যাপের মাধ্যমে অ্যাপয়েন্টমেন্টের জন্য অপেক্ষা করছিলেন।

নতুন প্রশাসনের সিবিপি অন অ্যাপ বাতিলের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে তৎক্ষণাৎ আইনি চ্যালেঞ্জ করেছে আমেরিকান সিভিল লিবারটিজ ইউনিয়ন। এ নিয়ে তারা আদালতে শুনানির জন্য কাগজপত্রও জমা দিয়েছে।

অভিবাসন বিষয়ক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ট্রাম্পের অভিবাসন আদেশগুলো নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।

এক বিবৃতিতে ন্যাশনাল ইমিগ্রেশন ফোরামের সভাপতি এবং সিইও জেনি মারে বলেছেন, এই আদেশগুলো "হতাশাজনক কিন্তু অপ্রত্যাশিত নয়"।

"প্রত্যাশিত এই আদেশগুলো পরিবারগুলোকে আলাদা করবে এবং আমাদের অর্থনীতিকে দুর্বল করবে", বলছিলেন মিজ মারে।

"এগুলো আমেরিকান মূল্যবোধের সাথেও যায় না", যোগ করেন তিনি।

জাতীয় অভিবাসী যুব সংগঠন ইউনাইটেড উই ড্রিমের নির্বাহী পরিচালক গ্রেইসা মার্টিনেজ রোসাস বলেছেন, "এই আদেশগুলোর মাধ্যমে এটি স্পষ্ট যে আগামী চার বছর এগুলো আমাদের জীবন অনেকটা ধ্বংস করে দেবে"।

"অভিবাসন ঠেকাতে ট্রাম্পের এই অভিযান ও ফেরত পাঠানোর প্রতিশ্রুতি দেশব্যাপী ধ্বংসাত্নক প্রভাব ফেলবে। যদি নির্বাচিত প্রতিনিধিরা এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেন কিংবা প্রতিরোধ গড়ে না তোলেন, তাহলে লাখ লাখ পরিবার ও ব্যক্তির জীবন এলোমেলো হয়ে যাবে", যোগ করেন তিনি ।