News update
  • Arab-Islamic summit over Israeli strike on Doha Monday     |     
  • NASA Rover Uncovers Strongest Hint of Ancient Life on Mars     |     
  • Eminent Lalon singer Farida Parveen passes away     |     
  • Dr Yunus mourns Farida Parveen's death     |     
  • From DUCSU to JUCSU, Shibir Extends Its Winning Streak     |     

সৌদির বিপক্ষে অকল্পনীয় অঘটনের শিকার মেসিরা

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক ফুটবল 2022-11-22, 6:35pm




অকল্পনীয়, অবিশ্বাস্য; আর্জেন্টিনা-সৌদি আরবের মধ্যকার ম্যাচের ফলাফল দেখে আকাশী-নীল জার্সিধারীদের এমনই মনে হবে। যেকোনো আর্জেন্টাইন সমর্থক তো সহজে এমন ফলাফল হজমও করতে পারবে না। কিন্তু এটাই সত্য যে, কাতার বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে সৌদি আরবের কাছে ২-১ গোল ব্যবধানে হেরে গেছে আর্জেন্টিনা।

কাতারের লুসাইল স্টেডিয়ামে সৌদির বিপক্ষে আর্জেন্টিনা যখন মাঠে নামছে, তখন সকলেই ইতালির রেকর্ড নিয়ে গবেষণা করছিল। সৌদিকে হারিয়ে ইতালির পর আর্জেন্টিনাও টানা ৩৭ ম্যাচ অপরাজিত থাকার রেকর্ড নিজের করে নেবে এমনটাই ধরে নিয়েছিল সবাই। তবে কাতার বিশ্বকাপের প্রথম অঘটনের জন্ম দিতেই যেন প্রস্তুত ছিল লুসাইল স্টেডিয়াম।

আর তাইতো প্রথমার্ধে ৪ বার বল জালে জড়িয়েও আর্জেন্টিনা মোটে গোল পেয়েছিল ১টি। সেটিও আবার ভিএআর প্রযুক্তিতে পেনাল্টি পেয়েছিল বলে। অন্যদিকে প্রথমার্ধে সৌদি আরব ছিল সম্পূর্ণ ব্যাকফুটে। কোনো আক্রমণ তো দূরে থাক ডিফেন্সটাও ঠিকমতো করতে পারছিল না আরবের দেশটি। অথচ বিরতি থেকে ফিরে রীতিমতো আগুনে ফুটবল উপহার দিতে থাকে সবুজ জার্সিধারীরা।

টানা ৫ মিনিটে দুই গোল দিয়ে আর্জেন্টাইনদের চেয়ে এগিয়ে যায় দলটি। সেই লিড টানা ৪৫ মিনিট ধরে রেখে আর্জেন্টিনার বিপক্ষে প্রথম জয় তুলে নেয় আরবীয়রা।

লুসাইলে এদিন অবশ্য শুরু থেকে আক্রমণাত্মক খেলতে থাকে আর্জেন্টাইনরা। ম্যাচের দ্বিতীয় মিনিটে ১২ গজ দূর থেকে মেসির বাম পায়ের শট দারুণ দক্ষতায় ঠেকিয়ে দেন সৌদি আরবের গোলরক্ষক আল ওয়াইস। বাম প্রান্ত দিয়ে অ্যানহেল ডি মারিয়া বল নিয়ে ভেতরে ঢুকে বল পাস দেন লাউতারো মার্টিনেজকে। তবে তিনি বল গোলমুখে রাখতে ব্যর্থ হোন। সেই মুহূর্তে পেছন থেকে এসে শটটি নেন মেসি।

এরপর আবারও আক্রমণে সৌদিয়ানদের ব্যতিব্যস্ত করে রাখে আর্জেন্টিনা। এরমধ্যে খেলার ৮ম মিনিটে কর্ণার পায় লে আলবিসেলেস্তেরা। সেখান থেকে বল আর্জেন্টাইনদের পায়ে থাকতেই আচমকা বাঁশি বাজায় রেফারি।

স্লোভেনিয়ার এই কোচ ভিএআর চেক করে আর্জেন্টিনাকে পেনাল্টি দেন। মেসি কর্ণার কিক নেওয়ার সময় সৌদির ডিফেন্ডার বুলাইয়াহি ডি-বক্সের মধ্যে লিয়ান্দ্রো পারেদেসকে ফেলে দেন। আর তাতে পেনাল্টি পেয়ে সেখান থেকে সহজ গোলে দলকে এগিয়ে দেন মেসি।

বিশ্বকাপের মঞ্চে এটি মেসির ৭ম গোল। আর ৪ গোল হলে বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার হয়ে সর্বোচ্চ গোলের মালিক হবেন সাত বারের ব্যালন ডি'অর জয়ী এই তারকা। আর্জেন্টিনার ইতিহাসে দ্বিতীয় বয়স্ক ফুটবলার হিসেবে বিশ্বকাপের মঞ্চে গোল পেলেন মেসি।

এরপর আরেকবার সৌদির জালে বল জড়ান এই তারকা। ২২তম মিনিটে মেসি বল জালে জড়ালেও লাইন্সম্যান ফ্ল্যাগ তুললে হতাশায় ভাসতে হয় আকাশী-নীল জার্সিধারীদের। কারণ, অফসাইডের কারণে বাতিল হয়ে যায় গোলটি।

এর ঠিক ৭ মিনিট পর আবারও বল জালে জড়ায় লে আলবিসেলেস্তেরা। এবার বল জালে জড়ায় লাউতারো মার্টিনেজ। তবে নতুন প্রযুক্তিতে দেখা যায় এই আর্জেন্টাইনের একটি হাত সৌদি ডিফেন্ডারের চেয়ে এগিয়ে ছিল। আর তাই আক্ষেপে পুড়তে হয় মার্টিনেজকে।

সেই আক্ষেপ মার্টিনেজের সঙ্গী হয় ঠিক ৫ মিনিট পর আবারও। ফ্রন্টলাইনে থেকে মেসি এই স্ট্রাইকারের উদ্দেশ্যে সহজ বল বাড়িয়ে দেন। তবে গোলের জন্য মরিয়া মার্টিনেজ একটু দ্রুত দৌড় দেওয়ায় আবারও অফসাইডের ফাঁদে পড়েন। তবে বল পেয়ে এবারও জালে জড়াতে ভুল করেননি তিনি।

প্রথমার্ধে ডিফেন্সিভ মুডে খেলা সৌদি বিরতির পর নতুন কৌশল নিয়ে মাঠে নামে। খেলার শুরুতে ৪-৫-১ পজেশনে খেলা আরবীয়রা দ্বিতীয়ার্ধে মাঠে নামে ৪-৪-১-১ পজেশনে। আর তাতে আক্রমণ বাড়ানোর ইঙ্গিতই দিয়ে রেখেছিল সৌদি আরব।

দলটির ফুটবলাররাও কোচের চাওয়া পূর্ণ করেছে। বিরতির পর মাঠে নেমে তিন মিনিটের মধ্যে আর্জেন্টিনার জালে বল জড়ায়। খেলার ৪৮তম মিনিটে আলবিরাকানের অ্যাসিস্টে সৌদিকে ম্যাচে সমতায় ফেরান আল শেহরি। এর ঠিক পাঁচ মিনিট পরে দুর্দান্ত, দর্শনীয় এক গোল দিয়ে সৌদিকে এগিয়ে দেন আল দাউসারি।

ম্যাচের ৫৩তম মিনিটে মাঝমাঠ থেকে একাকী বল টেনে ডি-বক্সের বাম পাশ থেকে দুর্দান্ত এক শটে বল জালে জড়ান দাউসারি। এরপর আক্রমণের ধার বাড়ায় আর্জেন্টাইনরা। তবে সৌদির গোলরক্ষক এবং ডিফেন্সে হতাশ হতে হয় আকাশী-নীল জার্সিধারীদের। ৬৩তম মিনিটে মার্টিনেজের দারুন এক প্রচেষ্টা নস্যাৎ করে দেন সৌদি গোলরক্ষক আল ওয়াইস। আরবের এই গোলরক্ষক ম্যাচের বাকি সময় আর্জেন্টিনার সময় চীনের মহাপ্রাচীর হয়ে দাঁড়ান। যতভাবেই আক্রমণ করুক না কেন ওয়াইশ দুর্গ জয় করতেই পারেনি আর্জেন্টিনা।

আর্জেন্টিনা এরপর প্রায় নিশ্চিত দুই গোল প্রায় পেয়েই গিয়েছিল, তবে ওয়াইসের দুর্দান্ত সেইভে দুঃখ ছাড়া আর কিছুই অর্জন করতে পারেনি আর্জেন্টাইনরা। এরমধ্যে ৬৩তম মিনিটে মার্টিনেজকে কল্পনাতীত সেইভে গোললাইন থেকে ফিরিয়ে দেন ওয়াইস।

এমনকি ৭২তম মিনিটে তো ওয়াইস বেরিয়ে গেলে গোলমুখ উন্মুক্ত হয়ে গেলে সেই মুহূর্তে সৌদিকে বাঁচিয়ে দেন আল ব্রিকান। ৮৪তম মিনিটে মেসির একটি এবং ইনজুরি সময়ে আলভারেজের আরেকটি দুর্দান্ত হেড ওয়াইস নিজের হাতে জমিয়ে সৌদির জয়ই নিশ্চিত করে ফেলেন। তথ্য সূত্র আরটিভি নিউজ।